নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: আরামবাগ থেকে ডানকুনি চৌরাস্তা পর্যন্ত যাতায়াতের সুবিধার জন্য মুখ্যমন্ত্রী মূল সড়কের বড় অংশ সম্প্রসারিত করেছেন। কিন্তু তার সুবিধা পাচ্ছেন না নিত্যযাত্রীরা। অভিযোগ, শিয়াখালা থেকে ডানকুনি চৌরাস্তা পর্যন্ত জবরদখল ও বেআইনি পার্কিংয়ের জেরে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। চারটি বাজার এলাকায় রাস্তা জবরদখলের কারণে দিল্লি রোড কিংবা দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে যাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের অনেক বেশি সময় ব্যয় করতে হচ্ছে। ২০ মিনিটের পথ কখনও কখনও দেড় ঘণ্টাও লেগে যাচ্ছে। অথচ রাজ্য সরকার আরামবাগ-শিয়াখালা রোডকে পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া থেকে কলকাতা যাওয়ার সহজ পথ চিহ্নিত করেছিল। এই জবরদখল দূর করতে নিত্যযাত্রী ও দূরপাল্লার যাত্রীরা মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করছেন।
ডানকুনি সেতুর নীচেও জবরদখল নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ডানকুনি স্টেশনে যাওয়ার পথ ওই জবরদখলের জেরে ক্রমশ অপরিসর হতে শুরু করেছে। উল্লেখ্য, ওই দখলদারির তালিকায় তৃণমূলের একটি কার্যালয়ও আছে। যা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে। এই ঘটনা ‘জানা নেই’ বলে দাবি করেছে হুগলি জেলা পরিষদ। তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ বিজন বেসরা বলেন, স্থানীয় স্তরে এ বিষয়ে রিপোর্ট নেব। তারপর পদক্ষেপ করা হবে। কোনও অবস্থাতেই রাস্তা দখল করে রাখা যাবে না। সিপিএমের হুগলির জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, মুখ্যমন্ত্রী জবরদখল নিয়ে সরব হচ্ছেন। আর ডানকুনি সেতুর নীচে জবরদখল হওয়া জায়গায় তৃণমূলের পার্টি অফিস রয়েছে। আরামবাগ-ডানকুনি সড়ককে কলকাতা যাওয়ার বিকল্প রাস্তা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। সেখানে অবৈধ পার্কিংয়ে মদত জোগাচ্ছেন তৃণমূলের নেতারা।
হুগলিতে রাজ্য সরকারের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলির মধ্যে আরামবাগ-চাঁপাডাঙা রাস্তার সম্প্রসারণকে ধরা হয়। পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া, এমনকী আরামবাগ থেকে কলকাতা যাওয়ার এই রাস্তা দূরপাল্লার যাত্রীদের কাছে আশীর্বাদের মতো ছিল। কিন্তু চণ্ডীতলার শিয়াখালা, মশাট, জঙ্গলপাড়া, কালীপুরে চারটি বাজার এলাকায় অবৈধ পার্কিং ও জবরদখলের জেরে আরামবাগ থেকে ডানকুনি পৌঁছতে যাত্রীদের কালঘাম ছুটছে। নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, শিয়াখালায় মূল সমস্যা অবৈধ পার্কিং ও জবরদখল। মশাট বাজারে কারণে অকারণে রাস্তার উপর টোটো, অটো, এমনকী বাস পর্যন্ত দীর্ঘসময় দাঁড়িয়ে থাকছে। সেইসঙ্গে আছে জবরদখলের অভিযোগ। কালীপুরেও এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। ডানকুনি স্টেশনে যেতে গিয়েও নিত্যযাত্রীদের কালঘাম ছুটছে।
অভিযোগ, ডানকুনি সেতুর নীচে যাতায়াতের জন্য কোনও জায়গা অবশিষ্ট নেই। নিত্যাযাত্রীদের দাবি, সমস্ত কিছু জানার পরেও স্থানীয় প্রশাসন ও শাসকদলের নেতৃত্ব নির্বিকার। তাই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রী হস্তক্ষেপের দাবি তুলতে শুরু করেছেন।