এই সময়: ঢোলাহাট থানায় বেধড়ক মারধরের পরিণতিতে আবু সিদ্দিক হালদারের মৃত্যুর অভিযোগে মামলায় পুলিশের বিরুদ্ধে আরও মারাত্মক অভিযোগ সামনে এলো হাইকোর্টে। বৃহস্পতিবার বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে শুনানিতে মৃতের পরিবারের অভিযোগ, ধৃত যুবকের জামিন নিশ্চিত করতে পুলিশকে দিতে হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।গ্রেপ্তারের পর তাঁকে শুধু মারধরই নয়, থানায় পুলিশ ইলেকট্রিক শকও দেয় বলে অভিযোগ করা হয় শুনানিতে। বিচারপতি সিনহা প্রাথমিক শুনানির পরেই যে-যে হাসপাতাল এবং থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ওই যুবককে--সেই সব জায়গার সিসিটিভি ফুটেজ সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। পুলিশকে তদন্তে অগ্রগতির রিপোর্ট আজ, শুক্রবার শুনানিতে জমা দিতে হবে আদালতে।
মৃতের পরিবারের আইনজীবী শামিম আহমেদ আদালতে বলেন, ৩ জুলাই রাত ৮ টা পাঁচ নাগাদ ওই যুবকের কাকা মহসিন হালদার থানায় সোনার গয়না এবং নগদ টাকা চুরির অভিযোগ করেন। অভিযোগে ভাইপোর নাম ছিল না। ৪ জুলাই ভোর পৌনে চারটে নাগাদ ওই যুবককে চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিন তাঁকে কাকদ্বীপ আদালতে হাজির করা হলে পুলিশি হেফাজতের বদলে বিচারক জামিন দেন।
জামিন পেয়ে বাড়ি যাওয়ার পরেই অসুস্থ হয়ে পরেন বছর একুশের আবু। তাঁর সারা দেহে আঘাতের চিহ্ন, বিভিন্ন অংশে কালশিটে ছিল। থানার সিসিটিভির ফুটেজ দেখার জন্যে আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী। রাজ্যের কৌঁসুলি বলেন,✓২৩ শে জুন থেকে থানার সিসিটিভি অকেজো। এ বিষয়ে কাকদ্বীপ আদালতের বিচারক এবং সিসিটিভি দেখভালের দায়িত্বে থাকা ওয়েবেলকে জানানো হয়েছে।
দেহের ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করা হয়েছে। রাজ্যের আরও দাবি, হাসপাতাল থেকে জানা গিয়েছে, মৃত যুবক জন্ডিসে আক্রান্ত ছিলেন। তাঁর রক্তে ইউরিয়া এবং ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে গিয়েছিল। অভিযোগকারী কাকা-ই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। একই সঙ্গে অবশ্য রাজ্যের কৌঁসুলি বলে বসেন, যে পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তাঁকে বদলি করে ‘শাস্তি’ দেওয়া হয়েছে।
আদালত জানিয়ে দেয়, ফের শুক্রবার শুনানি হবে।✓ময়নাতদন্তের ভিডিয়ো রেকর্ডিং সংরক্ষণ করতে হবে। কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালের ৪ জুলাইয়ের ভিডিয়ো ফুটেজ, কলকাতার যে দু’টি হাসপাতালে ওই যুবককে চিকিৎসার জন্যে আনা হয়েছিল--সেই সব প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট দু’টি দিনের সিসিটিভি ফুটেজও সংরক্ষণ করতে হবে।
শুনানি শেষে মৃতের কাকা বলেন, ‘আমার ঘরে চুরি করতে ঢোকা দু’টি ছেলেকে হাতেনাতে ধরে আমি পুলিশকে খবর দিই। পুলিশ এসে ওই দু’জনের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলে এবং তাদের ছেড়ে দেয়। সে দিনই আমার ভাইপোকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়। অথচ আমি ভাইপোর সম্পর্কে কোনও অভিযোগই করিনি।’