দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: পেটের টানে জঙ্গলেই যাওয়াই কাল। নৌকায় আচমকাই বাঘের হানা। ঘুমের ঘোরেই দক্ষিণরায়ের পেটে মৎস্যজীবী। সুন্দরবনের দোবাঁকি জঙ্গলের এই ঘটনায় নেমেছে শোকের ছায়া। মৎস্যজীবীর দেহ এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। চলছে জোর তল্লাশি।
নিহত মৎস্যজীবী আবুর আলি মোল্লা ওরফে বাবুসোনা। বছর চল্লিশের ওই ব্যক্তি দেউলবাড়ির বাসিন্দা। সরকারি অনুমতিপত্র নিয়ে তিন বন্ধু মিলে মাছ ধরতে দোবাঁকির জঙ্গলে গিয়েছিলেন তিনি। রাত ১০টা পর দোবাঁকির জঙ্গলের কাছে নৌকা রাখেন। খাওয়াদাওয়া সেরে রাতে ঘুমিয়ে পড়েন তিন মৎস্যজীবী। আচমকাই বাঘ নৌকায় হানা দেয়। ঘুমের ঘোরেই দক্ষিণরায়ের পেটে মৎস্যজীবী আবুর আলি মোল্লা। এখনও মৎস্যজীবীর দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। চলছে জোর তল্লাশি।
সুন্দরবনের লবণাক্ত মাটিতে চাষ তেমন ভাল হয় না। কিন্তু পেটের টান বড় বালাই। তাই প্রাণকে বাজি রেখে ঝুঁকি নিয়ে গভীর জঙ্গলে পা বাড়ান মৎস্যজীবীরা। বাঘের পেটেও যান অনেকেই। কারও কারও অভিযোগ, মৎস্যজীবীদের মৃত্যু নিয়ে কোনও মাথাব্যথা নেই বনদপ্তর। যদিও বনদপ্তর সেই অভিযোগ মানতে নারাজ। পরিবর্তে দাবি করা হচ্ছে, মৎস্যজীবীদেরকে জঙ্গলে বাঘের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মাইকিং, লিফলেট বিলি চলছে। তবে তা সত্ত্বেও মৎস্যজীবীদেরকে বাঁচানো সম্ভব হচ্ছে না।
কিন্তু কেন তাঁদের রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না? অনেকেই মনে করছেন, বিকল্প জীবিকার অভাবই মৎস্যজীবীদের জঙ্গলমুখী করে তুলছে। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত আয়ের লোভে বনদপ্তরের নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অনেকেই জঙ্গলে যাচ্ছেন। আর সে কারণেই ঘটছে একের পর এক প্রাণহানি। যদিও বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বাঘের পেটে যাওয়া মৎস্যজীবী আবুর আলি মোল্লার কাছে সরকারি বৈধ কাগজপত্র ছিল বলেই জানা গিয়েছে।