'মদন মিত্রের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই', দাবি আড়িয়াদহকাণ্ডের জয়ন্তের
এই সময় | ১২ জুলাই ২০২৪
'মদন মিত্রের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই', শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমে মন্তব্য আড়িয়াদহ কাণ্ডে অভিযুক্ত জয়ন্ত সিংয়ের। 'যাক এতকিছুর মধ্যে একটা সত্যি বলল', স্বস্তির স্বর কামারহাটির তৃণমূল বিধায়কের কণ্ঠে। শুক্রবার জয়ন্ত সিংকে নিয়ে আড়িয়াদহ তালতলা স্পোর্টিং ক্লাবে যায় পুলিশ। সেই ক্লাবেই তিন বছর আগে মারধরের ঘটনা ঘটেছিল বলে সন্দেহ পুলিশের। জয়ন্ত এবং তার দলবলের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে। গোটা ঘটনাটির পুনর্নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ। সেই জন্যই সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় জয়ন্তকে।এদিন ভাইরাল হওয়া ভিডিয়ো নিয়ে সংবাদ মাধ্যম প্রশ্ন করলে পুলিশের গাড়িতে বসেই পালটা জয়ন্তের দাবি, ‘আপনি কি দেখেছেন আমাকে?’ রীতিমতো ‘মেজাজে’ পালটা এই প্রশ্ন ছোড়ে সে। তার ‘দলবল’ সেখানে ছিল, সংবাদ মাধ্যমের এই মন্তব্যের পরেই জয়ন্তের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘যে ছিল সে শাস্তি পাবে।’
মদন মিত্রের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগাযোগ ছিল না বলেই জানায় জয়ন্ত সিং। কামারহাটির নেতার সঙ্গে ছবি প্রসঙ্গে জয়ন্ত বলেন, ‘নেতাদের সঙ্গে সকলের ছবি থাকে।’ এই প্রসঙ্গে মদন মিত্র ‘এই সময় ডিজিটাল’-কে বলেন, ‘যাক, এত কিছুর মধ্যে একটা সত্যি কথা বলল। সত্যিই ওর সঙ্গে আমার কোনও যোগাযোগ নেই। আমি বিধায়ক। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যাই। সেই সময় কেউ ছবি তুলতেই পারে। কিন্তু, জয়ন্তর সঙ্গে ব্যক্তিগত স্তরে আমার কোনও সম্পর্ক নেই।
এদিকে আড়িয়াদহের ভিডিয়োটি সাম্প্রতিক নয়, স্পষ্ট জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্য়োপাধ্যায় । তা তিন বছর আগের। উপনির্বাচনের সময় এই পুরনো ভিডিয়ো ভাইরাল করা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই মনে করছে রাজ্য় শাসক দলের নেতারা। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, 'পরিকল্পনা করেই তৃণমূল কংগ্রেসকে কালিমালিপ্ত করার জন্য এই সমস্ত ভিডিয়োকে প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।'
তিনি আরও বলেন, 'বিরোধী দলগুলি এবং সংবাদ মাধ্যমের একাংশ পরিকল্পনা করে বিধানসভা উপনির্বাচনের আগে এই সমস্ত ভিডিয়ো সামনে এনে তৃণমূলকে বদনাম করার চেষ্টা করছে।' চোপড়ার সালিশি সভায় এক যুবক-যুবতীকে মারধরের ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পর স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা রুজু করেছিল পুলিশ এবং গ্রেফতার করা হয় মূল অভিযুক্ত জেসিবি ওরফে তাজিমুল হককে। আড়িয়াদহ বিতর্কেও জয়ন্ত সিং ওরফে জায়ান্টকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন এই বিষয়গুলি নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিলেও বিরোধী এবং মিডিয়ার একটি অংশ ইচ্ছাকৃতভাবে সেদিকে গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে মনে করছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এই সমস্ত ভিডিয়ো সামনে আসার পরেই উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রীর মুখ্য উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্য়োপাধ্যায় এবং এডিজি (আইন শৃঙ্খলা) মনোজ ভার্মা।
আড়িয়াদহের জয়ন্ত সিংয়ের লোকজনের মারধরের পুরনো ভাইরাল ভিডিয়ো (ভিডিয়োটির সত্য়তা যাচাই করেনি এই সময় ডিজিটাল)-র ঘটনাকে ইঙ্গিত করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, '২৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চোখ, কান নেই? কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেল বাড়াবাড়ি করে উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। প্ররোচনামূলক বিবৃতি দিয়ে সাধারণ মানুষকে মিস লিড করছে।' বাঁকুড়ার রানিবাঁধের ঘটনাও পারিবারিক, রাজনৈতিক নয় বলে জানান তিনি। তবে সেই ঘটনার প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ করেছে পুলিশ।