রাজকোষের একটি বড় অংশ এই ধরনের প্রকল্পে ব্যয় করা হলেও এতে রাজ্যগুলির আর্থিক অবস্থায় কোনও প্রভাব পড়বে না, বলা হয়েছে রিপোর্টে৷
কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, মহিলামুখী প্রকল্পগুলির খাতে খরচ বৃদ্ধির জন্য তারা অন্য খাতের খরচ থেকে ভরতুকি জোগান দিচ্ছে৷ তবে এক্ষেত্রে রাজ্যগুলিকে মূলধনী ব্যয় কমাতে হবে৷ তাহলেই এই প্রকল্পগুলি আরও সাফল্যের মুখ দেখতে পাবে৷
সমীক্ষায় ধরা পডে়ছে, দেশের ১৬ শতাংশ মহিলা এই প্রকল্পগুলির অধীনে মাসে মাসে আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন৷ অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের একটি আর্থিক সমীক্ষা রাজ্য বাজেট ও তাদের কল্যাণমূলক প্রকল্পগুলি নিয়ে খুঁটিয়ে বিচার করে এই তথ্য দিয়েছে৷
স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার পৃথক একটি রিপোর্ট বলছে, মহিলাদের জন্য এই প্রকল্পগুলি বৃহত্তর এক দৃষ্টিভঙ্গি হয়ে উঠছে৷ যেখানে দেখা যাচ্ছে, বৃহৎ রাজ্যগুলিও তাদের রাজস্ব সংগ্রহের একটা বড় অংশ এই প্রকল্পগুলিতে দিচ্ছে৷ সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সরকার মুখ্যমন্ত্রীর লেড়কি বহিন প্রকল্পে মহারাষ্ট্রের ২.৬ কোটি মহিলাকে মাসে দেড় হাজার টাকা করে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে রাজ্য বাজেটে৷ অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কের রিপোর্ট বলছে, এই প্রকল্পে রাজ্য সরকার ৪৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে৷ যা রাজ্যের গড় উৎপাদনের ০.৮ শতাংশ৷
অন্ধ্রপ্রদেশে এই প্রকল্পের নাম জগন্না আম্মাভোডি স্কিম৷ ২০২০ সালের জানুয়ারিতে চালু হওয়া এই প্রকল্পে রাজ্যের মহিলাদের প্রতি মাসে দেড় হাজার টাকা দেওয়া হয়৷ অসমে এর নাম অরুণোদয় প্রকল্প৷ ২০২০ সালের অক্টোবরে চালু এই প্রকল্পে ১২৫০ টাকা করে প্রতি মাসে মহিলাদের অ্যাকাউন্টে চলে যায়৷ পশ্চিমবঙ্গে এই প্রকল্পের নাম লক্ষ্মীভাণ্ডার৷ ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে শুরু হয়েছিল৷ এতে মহিলাদের ১০০০/১২০০ টাকা দেওয়া হয়৷
মধ্যপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী লাডলি বহেনা যোজনা৷ শুরু হয়েছে ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে৷ মাসে ১০০০ টাকা অনুদান৷ কর্ণাটকে এর নাম গৃহলক্ষ্মী৷ ২০২৩ সালের আগস্টে সূচনা৷ মাসে ২ হাজার টাকা পান মহিলারা৷ তামিলনাড়ু৷ কালাইগনার মাগালির উরিমাই তিট্টম৷ গতবছরের সেপ্টেম্বরে চালু৷ মাসে হাজার টাকা৷ তেলঙ্গানায় প্রকল্পের নাম মহালক্ষ্মী৷ গতবছর ডিসেম্বর থেকে মাসে আড়াই হাজার টাকা পাচ্ছেন মহিলারা৷
হিমাচল প্রদেশের এর নাম ইন্দিরা গান্ধি পেয়ারি বহেনা সুখ সম্মাননিধি যোজনা৷ এবছর ফেব্রুয়ারিতে চালু হওয়া এই প্রকল্পে মহিলারা মাসে দেড় হাজার টাকা পেয়ে থাকেন৷ দিল্লিতে এর নাম মুখ্যমন্ত্রী মহিলা সম্মান যোজনা৷ এবছর মার্চে চালু৷ বরাদ্দ হাজার টাকা করে৷ এছাড়া মহারাষ্ট্রের কথা তো উল্লেখ করাই আছে৷
এই হিসাবে দেখা যাচ্ছে ২০২০-২২ সালের তুলনায় মহিলাদের আর্থিক সাহায্য দেওয়ার কল্যাণমূলক প্রকল্পের পরিমাণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে৷ যত দিন যাচ্ছে, পরিমাণ বৃদ্ধি ঘটছে৷ কারণ সেই টেক্কা দেওয়ার পালা৷ এসবিআই রিপোর্ট বলছে, ভারত ক্রমশ কল্যাণমুখী রাজ্যে পরিণত হচ্ছে৷ কারণ অধিকাংশ রাজ্যই এখন রাজ্যবাসীর জন্য কল্যাণকর প্রকল্পের দিকে ঝুঁকছে৷ মহারাষ্ট্র, অন্ধ্র, কর্নাটক, কেরলের মতো বড় রাজ্যগুলিও রাজকোষের একটি উল্লেখযোগ্য ভাগ এই খাতে খরচ করছে৷
মহারাষ্ট্র ১১ শতাংশ, কর্ণাটক ১৫ শতাংশ, কেরল, ওডি়শা ও পশ্চিমবঙ্গ ৮-১০ শতাংশ কল্যাণকর প্রকল্পের জন্য খরচের প্রস্তাব রেখেছে বাজেটে৷