• হাঁটু প্রতিস্থাপনে নয়া নজির বসিরহাট জেলা হাসপাতালের, সফল প্রথম অস্ত্রোপচার
    প্রতিদিন | ১২ জুলাই ২০২৪
  • গোবিন্দ রায়, বসিরহাট: হাঁটুর যন্ত্রণায় রাতের ঘুম উড়ে যায় অধিকাংশ ষাটোর্ধ্বর। চলা ফেরাই একপ্রকার দায় হয়ে দাঁড়ায়। এবার সেই সমস্যার মুশকিল আসান করল বসিরহাট জেলা হাসপাতাল। আধুনিক অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুনরায় হাঁটু প্রতিস্থাপনের অস্ত্রোপচারে করে নতুন নজির গড়ল সীমান্তবর্তী শহরের এই হাসপাতাল। বরাবর জেলার পিছিয়ে পড়া হাসপাতালগুলির চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সমালোচনা হয়ে এসেছে। প্রশ্নের মুখে পড়েছে  বসিরহাট হাসপাতালের মতো মফস্বলের হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা। এই অস্ত্রোপচারের সফলের পর আগামী দিনে জেলার চিকিৎসা ব্যবস্থায় সুনাম আনবে বলে মত চিকিৎসক মহলের।

    বসিরহাট জেলা হাসপাতাল (Basirhat District Hospital) সূত্রে জানা গিয়েছে, হাঁটুতে তীব্র যন্ত্রণা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগণার দেগঙ্গার ভাসিলার বাসিন্দা রোস্তাম আলি। বছর ৫৯-এর পেশায় দিনমজুর রোস্তাম বেশ কিছুদিন ধরে হাঁটতে পারছিলেন না। কারণ হাঁটুর যন্ত্রণা। বাধ্য হয়েই বসিরহাট জেলা হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগে চিকিৎসা করাতে আসেন। চিকিৎসকরা বিভিন্ন পরীক্ষার পর জানতে পারেন রোস্তামবাবুর বাঁ পায়ের হাঁটুর অবস্থা খুবই শোচনীয়।চিকিৎসকরা জানান অবিলম্বে সেই হাঁটুর প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন। সেই মতো তাঁকে হাসপাতালের এমএসডব্লিউ ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়।

    বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা ৪০ নাগাদ বসিরহাট জেলা হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জেন চিকিৎসক সাহির মণ্ডলের নেতৃত্বে একটি দল গঠন করা হয়। চিকিৎসক এম শিরুল ইসলামের সহযোগিতায় তিন ঘণ্টার প্রচেষ্টায় সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সফলভাবে অস্ত্রোপচার করা হয় ওই ব্যক্তির‌। যা কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগণার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ছাড়া জেলা হাসপাতালগুলির মধ্যে প্রথম। এই হাঁটু প্রতিস্থাপনের ফলে এক প্রকার নতুন জীবন ফিরে পান ওই ব্যক্তি।

    এনিয়ে বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবিউল ইসলাম গাইন বলেন, “হাঁটু প্রতিস্থাপন করে জেলা হাসপাতালগুলির মধ্যে নজির গড়ল বসিরহাট জেলা হাসপাতাল। আগামী দিনে আর হাঁটু প্রতিস্থাপনের জন্য কলকাতায় ছুটে যেতে হবে না। বসিরহাট জেলা হাসপাতালেই সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।” অস্ত্রোপচারে সফল চিকিৎসক সাহির মণ্ডল বলেন, “এই ধরনের অস্ত্রোপচার আগে নদিয়াতে হয়েছিল। কিন্তু উত্তর ২৪ পরগণার কোনও জেলা হাসপাতালের মধ্যে এই নজির প্রথমবার।” তিনি আরও বলেন, “দেখা গিয়েছে, ষাট পেরোতে না পেরোতেই হাঁটুর ব্যথায় ভোগেন সমাজের অধিকাংশ মানুষ। বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায়। ক্যালশিয়ামের অভাবে এই ধরনের হাঁটুর ব্যথা লেগেই থাকে।” এবার থেকে হাঁটুর অস্ত্রোপচার বসিরহাট হাসপাতালেই করানো যাবে জানতে পেরে খুশি বসিরহাটের বাসিন্দারা।
  • Link to this news (প্রতিদিন)