ঢোলাহাটকাণ্ডে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের যে নির্দেশিকা রয়েছে, সেটাকে মান্যতা দিয়েই নতুন করে ময়না তদন্তের নির্দেশ দেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। শনিবারের মধ্যে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।ঢোলাহাটে যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় নতুন করে ময়ান্তদন্ত করতে হবে বলে নির্দেশ হাইকোর্টের। সেই ময়নাতদন্তের ভিডিয়োগ্রাফি করতে হবে। সেই ফুটেজ সংরক্ষণ করতে বলা হয়েছে রাজ্যকে, পাশাপাশি ময়নাতদন্তের সময় উপস্থিত থাকবেন মৃতের বাবা এবং বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি, এই মামলায় সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কোর্টের তরফে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার ঢোলাহাট থানার ঘাটবকুলতলা এলাকার বাসিন্দা আবু সিদ্দিক হালদারের মৃত্যু হয়। দিন কয়েক আগে একটি চুরির ঘটনায় টিনাকে গ্রেফতারে করা হয়েছিল। পরিবারের দাবি, পুলিশি হেফাজতে মারধর, অত্যাচার করার কারণেই ওই যুবকের ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে ঢোলাহাট এলাকা। ঢোলাহাট থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান মৃতের পরিবারের লোকজন এবং স্থানীয় বাসিন্দারা। আবু সিদ্দিক হালদারেরমৃত্যু কীভাবে হল তার তদন্ত চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় পরিবার। মৃতের পরিবারের আইনজীবীর বক্তব্য, দেহে বিদ্যুতের শক এবং আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ওই যুবকের দেহের ময়নাতদন্ত নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করে পরিবার।
এই মামলায় রাজ্যের তরফে জানানো হয়, এই মৃত্যু কিন্তু পুলিশের হেফাজতে হয়নি। মাত্র কয়েক ঘণ্টা সেই ধৃত থানার হেফাজতে ছিল। তারপরে বিভিন্ন হাসপাতাল ও আদালতে ছিল। জামিন পাওয়ার পরে এই মৃত্যু হয়। ফলে NHRC গাইড লাইন এখানে লাগু হতে পারে না। পালটা মৃতের পরিবারের আইনজীবী জানান, NHRC র নতুন গাইড লাইন অনুযায়ী হেফাজতে মৃত্যুর অভিযোগ হলে তিনজন ময়নাতদন্ত কারী অভিজ্ঞ চিকিৎসককে নিয়ে কমিটি গড়তে হবে। তারা তিনটি পৃথক প্রতিষ্ঠান থেকে হতে হবে। এখানে সেসব কিছুই হয়নি। পুলিশ FIR করলেও সেখানে সব ধারা প্রয়োগ করা হয়নি।
দুই পক্ষের বক্তব্য শুনে আদালতের পর্যবেক্ষণ, স্বচ্ছ তদন্তের স্বার্থে জরুরি ভিত্তিতে নথি জোগাড় করা দরকার। আর তাই দ্বিতীয় ময়না তদন্ত করা জরুরি। কালকের মধ্যে এই দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত করতে হবে। হেফাজতে মৃত্যুর ক্ষেত্রে যেসব গাইড লাইন মানতে হয় সেসব মানতে হবে। ভিসেরার নমুনা সিএফএসএল হায়দ্রাবাদে পাঠাতে হবে। দ্বিতীয় ময়না তদন্তের রিপোর্ট ২২ জুলাই আদালতে পেশ করতে হবে। মৃতের কাকা সহ পরিবারের লোকেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। থানার আই সি থানায় দায়িত্বে থাকলেও এই তদন্তে কোনো ভাবে যুক্ত থাকতে পারবেন না।