• দুই নার্সিংহোমের টানাপোড়েনে মারা গেলেন ডায়ালিসিস রোগী
    বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: দুই নার্সিংহোমের টানাপোড়েনে মৃত্যু হল ডায়ালিসিস রোগীর। এখানেই শেষ নয়, ডেথ সার্টিফিকেট না পেয়ে নাজেহাল হতে হল মৃতের পরিবারকে। অভিযুক্ত দুই নার্সিংহোম মৃতকে ‘নিজেদের রোগী’ বলে স্বীকার করতে চায়নি। ফলে  ডেথ সার্টিফিকেট দিতে অস্বীকার করে তারা। পরে পুলিস অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে মৃতদেহ ময়নাতদন্ত করায়। 


    বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটে শিলিগুড়িতে। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর মহকুমার রামগঞ্জের মজরুল হককে (৪৩) তাঁর পরিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ এলাকার একটি নার্সিংহোমে ডায়ালিসিস করাতে আনে। মৃতের শ্যালিকা আইনজীবী রেজিনা বেগম জিনাত শুক্রবার মেডিক্যালের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে বলেন, জামাইবাবু মেডিক্যাল কলেজ এলাকায় একটি নার্সিংহোমের এক  চিকিৎসকের অধীনে ছিলেন। গত মাসে পাঁচদিন ভর্তিও ছিলেন। তাঁর সঙ্গে ফোনে কথা বলেই রাতে জামাইবাবুকে আনা হয়েছিল। ওই চিকিৎসক ফোন করে জানিয়েছিলেন, ডায়ালিসিস করার জন্য ফিসচুলা কাজ করছে না। বিকল্প চ্যানেল করে ডায়ালিসিস করতে হবে। তাই শিলিগুড়ি শহরের আর একটি নার্সিংহোমে তাঁর অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়ে যাবেন। সেই মতো আমরা অ্যাসিস্ট্যান্টকে টাকা দিই। তিনি আমাদের নিয়ে ওই নার্সিংহোমে নিয়ে যান। কিন্তু জামাইবাবুকে ওটিতে নেওয়ার কিছুক্ষণ বাদে আমাদের বলা হয়, রোগীর অবস্থা ভালো নয়, যেখান থেকে এনেছেন, সেই নার্সিংহোমে নিয়ে যান। সেইমতো রোগীকে আবার মেডিক্যাল কলেজ এলাকার নার্সিংহোমে ফিরিয়ে আনা হয়। এরপর সেখানকার  আউটডোরে চিকিৎসক দেখে জানান, জামাইবাবু মারা গিয়েছেন। কিন্তু ডেথ সার্টিফিকেট  দিতে অস্বীকার করেন তাঁরা। ওই নার্সিংহোমের তরফে জানানো হয়, রোগী এখানে ভর্তি হয়নি। তাছাড়া রোগীকে ডায়ালিসিসের জন্যও তারা কোথাও পাঠায়নি। ফলে তারা ডেথ সার্টিফিকেট দেবে না। শেষ পর্যন্ত তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের দার্জিলিং জেলা  সভাপতি রফিকুল ইসলামের সহযোগিতায় পুলিসের হস্তক্ষেপে রাতে নার্সিংহোমে জামাইবাবুর দেহ রাখার ব্যবস্থা হয়। রেজিনা বেগম জিনাতের অভিযোগ, দুই নার্সিংহোমের টানাপোড়েনেই তাঁদের রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিসের কাছে নার্সিংহোম ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করব। 


    যদিও নার্সিংহোমের তরফে অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজ এলাকার ওই নার্সিংহোমের ডিরেক্টর সৌরভ ঘোষ গাফিলতির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বৃহস্পতিবার রোগীকে নিয়ে আসার পর তাঁর পরিবারের লোকজন আমাদের এক কর্মীর সঙ্গে আলাদাভাবে যোগাযোগ করেন। 
  • Link to this news (বর্তমান)