নিজস্ব প্রতিনিধি, বারাসত: ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী বাগদা বিধানসভা কার দখলে থাকবে, জানা যাবে আজ শনিবার। তার আগে তৃণমূল-বিজেপি—যুযুধান দুই শিবিরেই জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। বাগদা উপ নির্বাচনে মোট ১৩ জন প্রার্থী এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। তবে জয় নিশ্চিত ধরে নিয়ে তৃণমূল ও বিজেপি উভয়েই আবির মজুত করেছে। ইতিমধ্যে কাউন্টিং এজেন্টদের নিয়ে দুই দলের নেতারা বৈঠক সেরেছেন। গণনা শেষ না হওয়া পর্যন্ত এজেন্টদের গণনাকেন্দ্রের মাটি কামড়ে পড়ে থাকার নির্দেশ দিয়েছে দল। তৃণমূলের প্রার্থী তথা মতুয়া ঠাকুরবাড়ির সদস্য মধুপর্ণা ঠাকুর বলেন, ‘আমার কোনও চিন্তাই নেই। আসলে সারা বছর যারা পড়াশোনা করে, তাদের পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে চিন্তা হয় না। আমাদের সরকার সর্বদাই মানুষের জন্য কাজ করে। তাই মানুষ আমাদের জিতিয়ে দিয়েছেন। আমরা সবুজ আবির কিনেও নিয়েছি। বুথ বা অঞ্চল ধরে ধরে নেতৃত্ব সবুজ আবির মজুত করে রেখেছেন।’ আরও জানান, জিতে এসে তিনি এলাকার বেশ কিছু ব্রিজ, রাস্তাঘাট ও বিদ্যুতের সমস্যার দ্রুত সমাধান করবেন। পাল্টা বিজেপির দাবি, তাদের জয় নিশ্চিত। তারাও ইতিমধ্যে গেরুয়া আবির মজুত করতে শুরু করেছেন বলে জানান স্থানীয় এক বিজেপি নেতা।
প্রসঙ্গত, একসময় তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত ছিল বাগদা। কিন্তু ২০১৬ সালের বিধানসভা থেকে তৃণমূল এই বিধানসভায় পিছিয়ে পড়ে। ২০০৩ সালে বাগদা পঞ্চায়েত সমিতির দখল নেয় তৃণমূল। ২০০৬ সালে বিধানসভা ভোটে বাগদায় তৃণমূলের টিকিটে বিধায়ক হন দুলাল বর। ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী তথা প্রাক্তন সিবিআই কর্তা উপেন বিশ্বাস। ২০১৬ সালে তৃণমূল হেরে যায় বাম-কং জোটপ্রার্থীর কাছে। ২০১৯ ও ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বাগদা থেকে বিজেপি প্রার্থী শান্তনু ঠাকুর এগিয়ে রয়েছেন। এর মধ্যে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস ৯,৭৯২ ভোটে জয়লাভ করেন। এর কয়েকমাস পর তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ কেন্দ্র থেকে বিশ্বজিৎকে প্রার্থী করে তৃণমূল। ফলাফলে দেখা যায়, বাগদায় ১২টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ন’টিতেই তৃণমূল বিজেপির কাছে পিছিয়ে রয়েছে। এই আবহে আজ বাগদা উপ নির্বাচনের ফল ঘোষণা। ২০১৬ সাল থেকে হাতছাড়া হওয়া বাগদা বিধানসভায় এবার মধুপর্ণার হাত ধরে জোড়াফুল ফোটে কি না, সেটাই এখন দেখার।