উড়ালপুলগুলির নীচের অংশ দখলমুক্ত করতে পুলিস কমিশনারকে চিঠি মেয়রের
বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শহরের অনেক জায়গায় কাগজকুড়ানি, গৃহহীন, ভবঘুরেরা রাতের বেলা ফুটপাতেই থেকে যাচ্ছেন। বিশেষ করে উড়ালপুলগুলির নীচের অংশ দখল করে নিচ্ছেন তাঁরা। তাঁদের সরাতে পুলিস কমিশনারকে চিঠি দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। মেয়র বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় আমরা নাইট শেল্টার করেছি। ফুটপাতবাসীদের রাস্তায় না রেখে নাইট শেল্টারে নিয়ে যেতে বলেছি পুলিসকে।’
এদিকে, ফুটপাত থেকে হকারদের বেআইনি দখলদারি সরানো নিয়ে শুক্রবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশন। হকারদের ফুটপাতে বসানোর ক্ষেত্রে কাউন্সিলারদের ভূমিকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যে বক্তব্য রেখেছেন, বিজেপি কাউন্সিলার সজল ঘোষ তার সমালোচনা করেন। তিনি এ বিষয়ে নিন্দা প্রস্তাব আনার দাবি তোলেন। সেই সঙ্গে হকার ‘উচ্ছেদ’-এর বিপক্ষেও সওয়াল করেন তিনি। এদিন সজল বলেন, ‘হকারদের পেটে লাথি মারা হচ্ছে। কিন্তু হাতিবাগানে বুলডোজার চললে রাজাবাজারে কেন তা নামবে না? মুখ্যমন্ত্রী কেন বললেন, হকার বসলে কাউন্সিলারকে গ্রেপ্তার করা হবে? পুরসভা থেকে একটি প্রস্তাব পাশ হওয়া উচিত।’ এ কথা শুনেই রে রে করে ওঠেন তৃণমূল কাউন্সিলাররা। বিজেপি এবং তৃণমূল কাউন্সিলারদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়ে যায়। জবাবে মেয়র বলেন, ‘কলকাতায় কোথাও হকার উচ্ছেদ হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী হকার উচ্ছেদের কথা বলেননি। বিভিন্ন জায়গায় সরকারি জমি দখল হয়ে রয়েছে। ভিন রাজ্য থেকে অনেকে এসে সরকারি জমি দখল করে নিয়েছে। তাতে সরকার এবং পুরসভার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। হকার উচ্ছেদ এবং হকার নিয়ন্ত্রণের মধ্যে তফাৎ আছে। হকার নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। হকার পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে গড়িয়াহাট আমাদের রোল মডেল।’ ‘বুলডোজার’ প্রসঙ্গে ফিরহাদের দাবি, ‘শ্যামবাজার বা রাজাবাজার— কোথাও বুলডোজার চলেনি। গড়িয়াহাটেও খিদিরপুরের লোক হকারি করেন। আবার খিদিরপুরেও প্রচুর হকার আছেন, যাঁদের পদবি চট্টোপাধ্যায়, বোস কিংবা ঘোষ। আপনারা উস্কানি দিচ্ছেন। এটা বাংলার সংস্কৃতি নয়। ফুটপাতের এক তৃতীয়াংশ জায়গায় হকাররা বসবে। রুটিরুজির প্রশ্নে মুখ্যমন্ত্রী সহানুভূতিশীল।’ রেল কর্তৃপক্ষই বরং বুলডোজার চালিয়ে হকার উচ্ছেদ করছে বলে পাল্টা তোপ দাগেন ফিরহাদ। এছাড়া, ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তপন দাশগুপ্ত সেল্ফ অ্যাসেসমেন্টের আওতায় আরও বেশি করদাতাকে নথিভুক্ত করতে শিবির আয়োজনের প্রস্তাব দেন। মেয়র বলেন, ‘খুব ভালো প্রস্তাব। আমরা এখনও শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রয়োজনমতো শিবির করে থাকি। সেক্ষেত্রে কোনও কাউন্সিলার চাইলেই ওয়ার্ডে সম্পত্তিকর সংক্রান্ত শিবির করাতে পারেন। সেই ব্যবস্থা পুরসভা করবে।’ শহরের বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি বাজার, যেগুলি বেহাল কিংবা বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে, খোঁজখবর করে সেগুলির তালিকা কাউন্সিলারদের জমা করতে বলেছেন মেয়র।