• পুলিসের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠলেই দ্রুত তদন্ত শুরু
    বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ঢোলারহাট-কাণ্ডের জেরে এবার কড়া পদক্ষেপ করল নবান্ন। কোনও পুলিসকর্মীর বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠলে আর রেয়াত করা হবে না। এই ধরনের কোনও অভিযোগ এলে দ্রুত অনুসন্ধান ও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। ইতিমধ্যে সমস্ত জেলা ও পুলিস কমিশনারেটের আধিকারিকদের এই বার্তা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে রাজ্য পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট পুলিসকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।


    রাজ্য পুলিসের বিভিন্ন থানায় একাংশের পুলিসকর্মীর টাকা চাওয়া সংক্রান্ত অভিযোগের শেষ নেই। বিষয়টি নিয়ে রীতিমতো বিব্রত সরকারের কর্তারা। কখনও অভিযোগ ওঠে, সাধারণ জিডি করার জন্যই পুলিস টাকা চাইছে। এছাড়া কোনও অপরাধের অভিযোগে ধৃত অভিযুক্তকে মামলা থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য বা চার্জশিটে নাম না রাখার কথা বলে মোটা অঙ্কের টাকা চাওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিসের বিরুদ্ধে। এমনকী কোনও কারণে থানায় আটক করে আনা ব্যক্তিকে মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগ ওঠে নিচুতলার পুলিসকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি ঢোলারহাটের ঘটনায়ও মৃত যুবকের পরিবার পুলিসের বিরুদ্ধে এভাবেই টাকা চাওয়া ও মারধরের অভিযোগ এনেছে। ওই অভিযোগে পুলিসের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। থানা পর্যন্ত আক্রান্ত হয়। এই অবস্থায় নবান্ন মনে করছেন, এক শ্রেণির পুলিসকর্মীর অতিরিক্ত লোভের কারণে মুখ পুড়ছে প্রশাসনের। অভিযোগ নিয়ে মামলা হচ্ছে আদালতে। সেখানে চূড়ান্ত অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে পুলিসকর্তা ও সরকারের আধিকারিকদের। সরকার ও শাসক দলকে সমালোচনায় বিদ্ধ করার সুযোগ পাচ্ছে বিরোধীরা। 


    এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন চাইছে পুলিস বিভাগকে ‘সাফসুতরো’ করতে। তাই জেলায় জেলায় যেসব পুলিসকর্মীর বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ জমা পড়েছে, সেগুলির তদন্ত কোন পর্যায়ে রয়েছে,  সেসব খোঁজখবর করছে নবান্ন। প্রশাসন থেকে স্পষ্ট নির্দেশ গিয়েছে, এই ধরনের অভিযোগ এলে সেটি কোনওভাবেই ধামাচাপা দেওয়া যাবে না। অভিযোগের তদন্তেও কোনও টালবাহানা বরদাস্ত করবে না নবান্ন। অভিযুক্ত পুলিসকর্মীকে বিভাগীয় তদন্তের সামনে হাজির হতেই হবে। অভিযোগকারীর মুখোমুখি বসিয়ে সত্যতা যাচাই করতে হবে। এ সংক্রান্ত কোনও ভিডিও ফুটেজ থাকলে তা  গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর জেলা বা কমিশনারেটে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট জমা দিতে হবে তদন্তকারী অধিকারিককে। এসবের পর যদি সংশ্লিষ্ট পুলিসকর্মীর বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে কর্তাদের। প্রয়োজনে দুর্নীতি দমন শাখাকে দিয়ে তদন্ত করানো যেতে পারে বলেও জানিয়েছে নবান্ন।
  • Link to this news (বর্তমান)