‘এবার খেলা মহারাষ্ট্রে’, বার্তা মমতার, বৈঠক শারদ-উদ্ধবের সঙ্গে
বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজনীতির ‘খেলা’ এবার আরব সাগর পারে! মহারাষ্ট্র থেকে বিজেপি ও তার দোসরদের বিদায়ের ‘ব্লু-প্রিন্ট’ তৈরির কাজে নেমে পড়লেন শারদ পাওয়ার, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উদ্ধব থ্যাকারে। শুক্রবার বিকেলে একপ্রস্থ আলোচনাও সেরে ফেলেছেন বিরোধী মহাজোট ‘ইন্ডিয়া’র অন্যতম প্রধান তিন শরিক। আর সেখানেই মধ্যমণি মমতা জোর গলায় শুনিয়েছেন নতুন স্লোগান— ‘খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে। খেলা চলবে। খেলা হবে, এবার মহারাষ্ট্রে!’
এদিন রাতে ছিল শিল্পপতি মুকেশ আম্বানির ছেলে অনন্তের বিয়ের অনুষ্ঠান। সেখানে যোগ দিতে যাওয়ার আগেই দু’টি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সেরে নিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। বিকেলে প্রথমে তিনি যান ‘মাতোশ্রী’তে। সেখানে পৌঁছে বালাসাহেব থ্যাকবের ছবিতে শ্রদ্ধাঞ্জলী অর্পণ করেন মমতা। এরপর শিবসেনা (ইউটি) প্রধান উদ্ধব থ্যাকারের সঙ্গে শুরু হয় তাঁর রাজনৈতিক আলোচনা। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল মহারাষ্ট্রের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন। ইন্ডিয়া শরিকদের মধ্যে দ্রুত আসন রফার আলোচনা পর্ব সেরে ভোটযুদ্ধে নেমে পড়ার বিষয়েই সহমত হয়েছেন জাতীয় রাজনীতিতে পোড়খাওয়া দুই নেতা-নেত্রী। সেই সূত্রেই বৈঠকের পর উদ্ধব ও তাঁর ছেলে আদিত্যকে সঙ্গে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ‘আমি আবার মুম্বই আসব। উদ্ধবের অুনরোধে ওঁদের হয়ে ভোটে প্রচার করব।’ উদ্ধব থ্যাকারেও বলেছেন, ‘আমার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সম্পর্ক দিদি-ভাইয়ের। একটা পারিবারিক সম্পর্ক।’
সূত্রের খবর, মহারাষ্ট্র ভোটের আগে কেন্দ্রের সরকার ফের এজেন্সি অভিযান শুরু করতে পারে। বৈঠকে সেকথা আলোচনা করেছেন উদ্ধব-মমতা। তৃণমূল সুপ্রিমো জানিয়েছেন, এজেন্সিকে কাজে লাগিয়ে দল ভাঙানোর খেলায় নামতে পারে বিজেপি। সেব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। বছর দুয়েক আগে বিজেপি যেভাবে শিবসেনার ৪০ জন বিধায়ককে ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়ে মহারাষ্ট্রে সরকার গড়েছিল, তার তীব্র নিন্দা করেছেন মমতা। বলেছেন, ‘শুধু মুম্বই নয়, গোটা দেশে বিজেপি এই কাজ করছে।’ সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদির ৪০০ পারের স্বপ্ন ভেঙে খানখান হয়ে গিয়েছে। শরিকদের কাঁধে ভর করে কোনওক্রমে সরকার গড়েছে বিজেপি। তা নিয়েও এদিন কটাক্ষ করেছেন মমতা। তাঁর সাফ কথা, ‘এই সরকার স্থিতিশীল নয়। বেশিদিন টিকবে না।’
মমতা চান ‘বিজেপির একনায়কতন্ত্র’ কায়েমের প্রতিবাদে ‘ইন্ডিয়া’ একজোট হয়ে লড়াই করুক। দেশের স্বার্থে এই লড়াইয়ে কংগ্রেসের সঙ্গে ‘হাত’ ধরতে বিন্দুমাত্র ছুৎমার্গ নেই তৃণমূলনেত্রীর। তিনি বলেছেন, ‘সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে আমরা একসঙ্গে আছি। কিন্তু বাংলায় অ্যাডজাস্ট নয়। কারণ সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপি একযোগে কাজ করছে। দিল্লিতে গেলে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়।’ উদ্ধবের সঙ্গে বৈঠক শেষ করে মমতা যান এনসিপি (এসপি) নেতা শারদ পাওয়ারের বাড়িতে। সেখানেও দেশের সামগ্রিক রাজনীতি নিয়ে দীর্ঘ সময় আলোচনা হয়। মমতা বলেছেন, ‘ফলপ্রসূ বৈঠক। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশকে অখণ্ড রাখা, গণতন্ত্র সুরক্ষিত রাখা ও নাগরিকদের মঙ্গল নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।’