ঘটনার পুননির্মাণে ক্লাবে এসে স্বমূর্তিতে জয়ন্ত সিং
বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: ঘটনার পুনর্নির্মানে পুলিসের বেষ্টনীতে নিজের ক্লাবে এসে ফের ‘দাপট’ দেখাল জয়ন্ত সিং। সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের মুখে তর্জনী উঁচিয়ে তার পাল্টা জিজ্ঞাসা—‘আমাকে কোথাও কোনও ভিডিওতে দেখেছেন? যারা ভিডিওতে ছিল তারা শাস্তি পাবে।’ শুধু তাই নয়, বিরক্তি প্রকাশ করে এক সময় সাংবাদিকদের ধাক্কা দিয়ে রাস্তা থেকে সরিয়েও দেয় আড়িয়াদহের এই ‘দাদা’। পুলিস শুক্রবার তালতলা ক্লাব থেকে একটি লোহার রড উদ্ধার করেছে। তদন্তকারীদের অনুমান, ওই লোহার রড ক্লাবের ‘বিচারসভায়’ শাস্তির কাজে ব্যবহার করা হতো। এদিন পুলিস ওই ক্লাব সিল করে দিয়েছে। অন্যদিকে, পুরসভার তরফে জানানো হয়েছে জয়ন্ত সিংয়ের প্রাসাদোসম বাড়ির জমির মালিকের নাম জানা গিয়েছে। পুরসভা থেকে প্ল্যান অনুমোদন না করিয়ে ওই বাড়ি তৈরির বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তালতলা ক্লাবে নৃশংস অত্যাচারের ভিডিও ভাইরাল কাণ্ডে পুলিস জয়ন্ত সিং সহ মোট সাত জনকে গ্রেপ্তার করে হেফাজতে নিয়েছে। শুক্রবার দুপুরে কড়া নিরাপত্তায় ধৃত জয়ন্ত সিং ও প্রসেনজিৎ দাস ওরফে লাল্টুকে তালতলা ক্লাবে নিয়ে আসা হয়। দরজা বন্ধ করে ক্লাবের মধ্যে প্রায় আধঘন্টা ধরে ঘটনার পুনর্নির্মান করা হয়। এরপর ক্লাব থেকে বের হওয়ার সময় বিধায়ক মদন মিত্র ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে একসঙ্গে ছবি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। উদ্ধত ভঙ্গীতে উত্তর দেয় জয়ন্ত—‘নেতাদের সঙ্গে সবার ছবি থাকে। মদন মিত্রর সঙ্গে আমার কোন যোগ নেই।’
অন্যদিকে, বিধায়ক মদন মিত্র’কে ফোনে খুনের হুমকি দেওয়ার ঘটনায় পুলিস তদন্তে নেমে জেনেছে, ঘোলা এলাকার এক ব্যক্তি ফোনটা করেছিলেন। পুরাতন কোনও বিষয়ে বিধায়কের উপর তার ক্ষোভ ছিল। সেকারণে তিনি ফোন করেছেন নাকি অন্য কোনও রহস্য রয়েছে, পুলিস তা খতিয়ে দেখছে। তবে জয়ন্ত সিংয়ের বিতর্কিত দুধ সাদা বাড়ি নিয়ে বেশ কিছু তথ্য পেয়েছে পুরসভা। কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, বাড়িটি বেআইনি। পুরসভার অনুমতি ছাড়াই তৈরি হয়েছে। বিএলআরও অফিস থেকে আমরা জানতে পেরেছি ওই জমি জয়ন্ত সিংয়ে নামে নেই। ননীগোপাল মুখোপাধ্যায় ও মধুসূদন মুখোপাধ্যায়ের নামে জমির রেকর্ড রয়েছে। জমির পরিমান ৩ কাঠা ১২ ছটাক। জমির চরিত্র ডাঙা। পাশের পুকুরের জমির পরিমান ৫৩ কাঠা ১২ ছটাক। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, জমির মালিক এলাকায় থাকেন না। তাঁদের খোঁজ চলছে। চেয়ারম্যানের কথায়, আইন মেনে ওই বেআইনি বাড়ির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।