অভিরূপ দাস: বেওস্থা না ব্যবস্থা? শুক্রবার কলকাতা পুর অধিবেশনে বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় ওঝার বক্তব্য থামালেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। এদিন পাঁচ নম্বর প্রস্তাব রাখতে ওয়েলে ওঠেন উত্তর কলকাতার পোস্তা এলাকার বিজেপি কাউন্সিলর বিজয় ওঝা। ওয়েলে উঠেই হিন্দিতে বক্তব্য রাখতে শুরু করেন তিনি। ‘চেয়ারপার্সন মেয়রসাব, এমএমআইসি শরিক কাউন্সিলর…’ বলতে শুরু করলে আচমকাই তাঁর বক্তব্য থামিয়ে দেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। বলেন, ‘‘বিজয়জি, আপনি বাংলায় বলুন।’’ উত্তরে বিজয় ওঝা বলেন, ‘‘হাম সম্বোধন হিন্দি মে কিয়া। বোলেঙ্গে বাংলা মে হি।’’
যদিও ফি অধিবেশনে সিংহভাগ কথা হিন্দিতেই (Hindi) বলেন তিনি। এদিন মেয়রের ধমকে তা আর বলতে পারেননি। উল্লেখ্য, সদ্য সমাপ্ত লোকসভা ভোটেও দেখা গিয়েছে জয়ী তৃণমূল (TMC) সাংসদরা দিল্লিতে গিয়ে শপথ নিয়েছেন বাংলায়। তৃণমূলের টিকিটে জয়ী মহিলা প্রার্থীদের সকলেই শপথ নিয়েছিলেন শাড়ি পরে। এমতাবস্থায় এটা স্পষ্ট বাংলার সংস্কৃতি, বাঙালির কৃষ্টি, সর্বোপরি বাঙালিয়ানাকে সর্বাগ্রে রাখতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস। এদিন পুরসভার অধিবেশনে বিজেপি কাউন্সিলরের হিন্দি বুলি থামিয়ে সেটাই আরও একবার প্রমাণ করলেন ফিরহাদ।
এদিকে বুধবার পুরসভায় মেয়র তাঁর হিন্দি ভাষণ থামিয়ে দেওয়ায় ভাঙা ভাঙা বাংলাতেই গোটা প্রস্তাব রেখেছেন বিজয় ওঝা। একটি কথা বলতে গিয়ে তিনি মাঝে বলেন, ‘‘যা হোক।’’ সঙ্গে সঙ্গে অধিবেশনে উপস্থিত তৃণমূল কাউন্সিলররা মনে করিয়ে দেন, বাংলায় ওটা যা হোক নয়, কথাটা হবে যাই হোক। এদিকে বাংলার (Bengali)পাশাপাশি হিন্দি এবং ইংরেজিতেও সমান স্বাচ্ছন্দ্য ফিরহাদ। ‘টক টু মেয়রে’ হিন্দিভাষীরা ফোন করলে তিনি হিন্দিতেই কথা বলেন। কিন্তু পুর অধিবেশনে তিনি বক্তব্য রাখেন স্পষ্ট বাংলাতেই। এদিন বাংলায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজয় ওঝা মেয়রকে বলেন, ”আমি হিন্দি বললে আপনি তো বুঝতে পারবেন।” কিন্তু ‘ওপরওয়ালা’ হিন্দি বুঝবে না। এ উত্তরের সঙ্গে সঙ্গে চেয়ারপার্সন মালা রায় তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, ‘‘ওপরওয়ালা মানে আপনি কাকে বলতে চাইছেন?’’ উত্তরে বিজেপি কাউন্সিলর বলেন, ‘সাংবাদিক।’
উল্লেখ্য পুর-অধিবেশন চলাকালীন কক্ষের দুপাশের উপরে বসেন সাংবাদিক, চিত্র সাংবাদিকরা। এদিন মেয়রের ধমকের পর ভাঙা ভাঙা বাংলাতেই বক্তব্য সেরেছেন বিজয়। প্রস্তাব শেষে বলেছেন, ‘‘ঠিকঠাক বলতে পারলাম তো?’’ মেয়র জানান, ‘ঠিক আছে।’