সংবাদদাতা, কাটোয়া: বর্ষায় ভাঙন রুখতে কেতুগ্রামে অজয়ের বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু করছে সেচদপ্তর। কেতুগ্রামের চরখি বটতলা থেকে ৪৭০ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত বাঁধ সংস্কারের কাজ করা হচ্ছে। সেচদপ্তরের ময়ূরাক্ষী সাউথ ক্যানেল ডিভিশন থেকে বাঁধ সংস্কার কাজের জন্য ১ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। শুক্রবার বাঁধ সংস্কারের কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করেন ময়ূরাক্ষী সাউথ ক্যানেল ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার (সালার ডিভিশন) সহ সেচদপ্তরের কর্তারা।
ময়ূরাক্ষী সাউথ ক্যানেল ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার ললিতমোহন সিং বলেন, অজয়ের জল বাড়লে বাঁধে জল ধাক্কা খেয়ে যাতে ক্ষতি না করতে পারে তারজন্যই সংস্কার করা হচ্ছে। মাটি ও পাথর দিয়েই সংস্কার করা হবে।
জানা গিয়েছে, কেতুগ্রাম ১ ও ২ ব্লকে অজয়ের মোট ১৮ কিমি বাঁধ রয়েছে। এই বাঁধ আগে এক্স জমিনদারি বাঁধ ছিল। তাই তার রক্ষণাবেক্ষণ করত জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি। ২০১৭ সালে এই বাঁধ সেচদপ্তরকে হস্তান্তর করা হয়। তারপর থেকে এই বাঁধে বেশ কয়েক ধাপে কাজ হয়। প্রথম ধাপে ২০১৮ সালে সাড়ে ছ’ কোটি টাকা খরচ করে বাঁধ সংস্কারের কাজ শুরু হয়। তা ২০১৯ সালে শেষ হয়। এরপর ২০২১ সালের বর্ষায় কেতুগ্রামে পাঁচটি জায়গায় বাঁধ ভেঙে যায়। বিল্লেশ্বর, রসুই এলাকায় মোট পাঁচটি পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে যায়। কেতুগ্রামের চরখি বটতলার কাছে অজয় বাঁক নিয়েছে। তাই বর্ষায় জল বাড়লেই অজয়ের জল এখানে বাঁধের গায়ে ধাক্কা খায়। প্রতিবছর এই এলাকায় বাঁধের গায়ে মাটি ধসে। তাই চরখি বটতলা থেকে ৪৭০ মিটারজুড়ে সংস্কারের কাজ করা হবে। বাঁধের গায়ে থাকবে বিশেষ মাটি। আর কিছুটা অংশ পাথর দেওয়া হবে। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল মান্নাফ খান, সন্তোষ মণ্ডল বলেন, ভাঙনের জেরে আমাদের কৃষিজমি, বসতভিটে সবই তলিয়ে গিয়েছে নদীগর্ভে। আমরা চাই বালি দিয়ে নয়, মাটি দিয়ে ভালো করে বাঁধ সংস্কার করা হোক। আমাদের জায়গা গিয়েছে বাঁধে। নদীর ধারেই আমাদের বসবাস। বর্ষার আগে বাঁধ সংস্কার হলে আমাদের চিন্তা কমে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে কাটোয়া ১ ব্লকের ও কোশিগ্রাম পঞ্চায়েতের চুড়পুনি, রাজুয়ার কাছে আঙ্গারপুর ও সুনিয়া গ্রামে মোট ন’ টি পয়েন্টে বাঁধ ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বিল্লেশ্বর এলাকায় বেশ কয়েক জায়গায় অজয়ের বাঁধ ভেঙে যায়। যার জন্য এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। চরখি থেকে বিল্লেশ্বর এলাকায় বাঁধের রাস্তাও ভেঙে যায়। তাছাড়া চরখি গ্রামের প্রাথমিক স্কুলের পিছনে, বিল্লেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে দু’ জায়গায় বড়সড় এলাকাজুড়ে বাঁধ ভেঙে যায়। ওই ভাঙা অংশে কাজ করেছে সেচদপ্তর। এদিন এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার পুরো এলাকা পরিদর্শন করেন।