• সাপের আতঙ্কে রাতেও জমিতে সেচ দিতে পারছেন না কৃষকরা
    বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বহরমপুর: সাবমার্সিবলের উপর নির্ভর করে চাষিদের বর্ষার চাষে নামতে হয়েছে। তাতেও বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। মাঠে সাপের উপদ্রবে রাতে জমিতে জল দিতে পারছেন না তাঁরা। চাষিদের দাবি, রাতে জমিতে জল দিতে পারলেই সকালে জমিতে চাষের জন্য ট্রাক্টর নামাতে পারবেন। পাশাপাশ রাতের শ্লটে বিদ্যুৎ বিল কম হওয়ায় চাষিরা রাতেই জমিতে জল দেন। আতঙ্কিত চাষিদের দাবি, ব্যাঙ, ইঁদুর ধরার জন্য জমির আলে ওঁৎ পেতে রয়েছে প্রচুর চন্দ্রবোড়া, কেউটে। একটু অসাবধান হলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হবে। বাধ্য হয়ে দিনে জমিতে জল দিতে হচ্ছে।


    মুর্শিদাবাদ জেলায় ১ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়। কান্দি মহকুমার বড়ঞা ব্লকে আষাঢ় মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই চারা রোপণের কাজ শুরু করে দেন চাষিরা। বীজতলায় ধানের চারার বয়স বাড়লেও চাষিরা এবার এখনও জলের অভাবে ধান পুঁততে জমিতে নামতে পারেননি। সকালে জল দেওয়ায় পর রোদ এবং তীব্র গরমে বিকেল হতে হতে জমি ফের জলশূন্য হয়ে পড়ছে। জমিতে চাষ দিতেই পারছেন না চাষিরা। এখনও পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির দেখা নেই। আমন ধান চাষের জন্য ভরা বর্ষাতেও চাষিদের পুরোপুরি সাবমার্সিবলের উপর নির্ভার করতে হচ্ছে। তাতেও ফনির আতঙ্কে তটস্ত চাষিরা চরম বিপাকে পড়েছেন। 


    বড়ঞা ব্লকের আমিন ধান চাষি তুষারকান্তি ঘোষ বলেন, রাতভর সাবমার্সিবল চালাতে পারলে সমস্যা হতো না। কিন্তু সাপের আতঙ্কে রাতে মাঠে নামতে পারছি না। বিকেলে মেশিন চালিয়ে বাড়িতে ঢুকে পড়তে হচ্ছে। কারেন্ট চলে গেলে মেশিন বন্ধ হয়ে পড়ে থাকছে। কিংবা নিজের জমি ছাপিয়ে অন্যের জমিতে জল ঢুকছে। জল অপচয় হচ্ছে। 


    রাতে সাবমার্সিবল চালানোয় বিদ্যুৎ বিল অনেকটা কম হয়। কারণ রাত যত গভীর হয় বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি চার্জ তত কম হয়। চিত্তরঞ্জন ঘোষ বলেন, রাতে মাঠে নামতে পারলে বিদ্যুৎ বিল অনেকটা সাশ্রয় হয়। সাবমার্সিবলে অটো স্টার্টার বসিয়েছি। ভোল্টাজের ওঠানামায় তাতেও মোটর পুড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মেশিন চালিয়ে দিয়ে বাড়িতে শুয়েও ঘুম আসে না।


    এবার বড়ঞা ব্লকের প্রতিটি মাঠে চন্দ্রবোড়া আর কেউটে সাপের বাড়বাড়ন্ত। ইতিমধ্যে চন্দ্রবোড়ার ছোবলে মৃত্যু হয়েছে বেশ কয়েকজন চাষির। বহুজন সাপের ছোবলে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। চিকিৎসকদের দাবি, চন্দ্রবোড়া সাপে কাটলে কাটা জায়গার উপরে ভালো করে বেঁধে দেড় ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসা শুরু না করতে পারলে মৃত্যু অবধারিত। আতঙ্কে চাষিরা।
  • Link to this news (বর্তমান)