• কড়েয়ায় নিজের অফিসেই রহস্যজনকভাবে খুন প্রোমোটার, সন্দেহের তির পলাতক সঙ্গীর দিকে
    বর্তমান | ১৩ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: কড়েয়ায় কোয়েস্ট মলের ঠিক পিছনে ব্রাইট স্ট্রিটে নিজের অফিসেই রহস্যজনকভাবে খুন হলেন শামসের আলি (৩৮) নামে এক ব্যক্তি। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে তাঁকে। পেশায় প্রোমোটার ওই ব্যক্তি বৃহস্পতিবার রাতে ব্রাইট স্ট্রিটে নিজের অফিসেই ঘুমিয়েছিলেন। শুক্রবার সকালে স্বামী অফিস থেকে বাড়ি না ফেরায়, স্ত্রী প্রথমে মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্তু ফোনে না পেয়ে বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ অফিসে যান স্ত্রী। অফিসে ঢুকে তিনি স্বামীকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। 


    প্রাথমিকভাবে এই খুনের ঘটনায় শামসেরের সঙ্গীদেরই সন্দেহ করছে পুলিস। তাঁর সঙ্গীরা পলাতক। আততায়ীকে চিহ্নিত করা গিয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে কলকাতা পুলিস। কড়েয়া থানার পাশাপাশি লালবাজারের হোমিসাইড শাখার গোয়েন্দারা এই খুনের তদন্তে নেমেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। কলকাতা পুলিসের ডিসি (এসইডি) ভোলনাথ পান্ডে এই খবর জানিয়েছেন।


    লালবাজার সূত্রে খবর, আততায়ীরা চপার দিয়ে শামসেরের মাথায় এত জোরে আঘাত করেছে যে, খুলি ফেটে চৌচির। ঘিলুও বেরিয়ে এসেছে। তাঁকে খুনের পর আততায়ীরা রক্তমাখা চপারটি ঘরেই ফেলে গিয়েছে। পালানোর সময় তারা অফিসের দরজায় বাইরে থেকে তালা দিয়ে 


    দেয়। শুক্রবার সকালে ডুপ্লিকেট চাবি দিয়েই দরজা খোলেন নিহতের স্ত্রী। খুলে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন স্বামী।


    জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাত দেড়টা পর্যন্ত স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন ওই প্রোমোটার। তারপরই খুন হয়েছেন তিনি। আততায়ী একজন নাকি একাধিক, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তারা যে শামসেরের পরিচিত, তা স্পষ্ট। না হলে বাইরের কারও পক্ষে অত রাতে অফিসে থাকার কথা নয়। মাঝেমাঝে এই অফিসে থাকত বছর দেড়েক আগে অসম থেকে আসা যুবক রাহুল। খুনের পর রাহুল উধাও। ফলে সন্দেহের তির তার দিকেই রাহুল। সম্প্রতি রাহুলের সঙ্গে শামসেরের ঝামেলা হয়েছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।


    ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়েছে শামসেরকে। মৃতের ডানদিকের চোয়াল, গলার উপরের দিক এবং ঘাড়ের পাশে ধারালো অস্ত্রের একাধিক আঘাত রয়েছে। মাথায় ভারী ও ধারালো চপার জাতীয় অস্ত্রের চারটি গভীর ক্ষত রয়েছে। এর জেরেই মৃত্যু হয়েছে শামসেরের। আঘাতের ধরন দেখে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের অনুমান, ‘দুই ধরনের ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে। একজন ব্যক্তির পক্ষে এভাবে খুন করা অসম্ভব। অর্থাৎ এই খুনের নেপথ্যে একাধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে।’ ব্রাইট স্ট্রিটে শামসের আলির অফিস থেকে তাঁর একটি দামী বাইক এবং স্কুটি উধাও হয়ে গিয়েছে। যা দেখে গোয়েন্দাদের অনুমান, তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করতেই এই পদক্ষেপ করেছে আততায়ীরা। যাতে মনে হয়, লুটপাটের জন্যই খুন করা হয়েছে প্রোমোটার শামসেরকে। পাশাপাশি, প্রমাণ লোপাটের জন্য খুনের আগেই সিসি ক্যামেরা ঢেকে দিয়েছিল আততায়ীরা। 
  • Link to this news (বর্তমান)