• উপনির্বাচনে বিজেপির প্রাপ্তি 'গোল্লা'! আর‌ও শক্তিশালী তৃণমূল
    এই সময় | ১৩ জুলাই ২০২৪
  • ২০২১ সালের বিধানসভা উপনির্বাচনে ফলাফল ছিল ৩-০। লোকসভা নির্বাচনের ফল অনুযায়ী সংখ্যাটা ছিল একই। কিন্তু, উপনির্বাচনে কার্যত বিজেপিকে হোয়াইট ওয়াশ করে দিল তৃণমূল কংগ্রেস। ফলাফল ৪-০। গেরুয়া সমর্থন যে বাংলায় ক্রমান্বয়ে নিম্নমুখী, তা ফের প্রমাণ হল বিধানসভা উপনির্বাচনে।জয়ের থেকেও বড় হয়ে উঠল ব্যবধান। মাত্র মাস দুয়েক হয়েছে লোকসভা নির্বাচন। টেনেটুনে রাজ্যে ১২টি লোকসভা আসন পেয়েছে বিজেপি। তবে, যে চারটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন হল, সেখানে রানাঘাট দক্ষিণ, রায়গঞ্জ এবং বাগদা কেন্দ্রে লোকসভা নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী ভদ্র ব্যবধানেই এগিয়ে ছিল বিজেপি। মতুয়া অধ্যুষিত এলাকা রানাঘাট দক্ষিণে এগিয়ে ছিল ৩৭ হাজার ভোটে। সেখানেই মুকুটমণি এগোলেন ৩৭ হাজার ভোটে।

    কোচবিহার আসনটি ঝুলিতে ভরে উত্তরবঙ্গে 'বিজেপি মিথ' ভাঙার কাজ শুরু করে দিয়েছিল তৃণমূল। তবে, এবারের লোকসভা নির্বাচনেও রায়গঞ্জ আসনটি হাতছাড়া হয় তৃণমূল কংগ্রেসের। এই আসন পরাজয়ের পর কংগ্রেসকে ভোট কাটাকাটির জন্য দায়ী করছিলেন তৃণমূল নেত্রী। ৪৭ হাজার ভোটে এই কেন্দ্রের লোকসভায় পিছিয়ে ছিল তৃণমূল। উপনির্বাচনে সেই ব্যবধানের ঘুঁটি উলটে দিয়ে ৫০ হাজারের বেশি ভোটে জিতলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। তাঁর কথায়, ‘ লোকসভা নির্বাচনের সময় মানুষকে ভুল বুঝিয়েছিল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সভা করে বিভ্রান্তিমূলক প্রচার করেন।’

    চমক দেখাল ২৫ বছরের রাজ্যে বিধানসভায় সর্বকনিষ্ঠ বিধায়ক হতে যাওয়া মধুপর্ণা ঠাকুর। সম্পর্কে তাঁর দাদা শান্তনু ঠাকুরের গড় থেকে বাগদা আসনটি ছিনিয়ে আনলেন তিনিও। বলা ভালো, ছিনিয়ে আনল তৃণমূল কংগ্রেসের মাটি গেড়ে পড়ে থাকা সংগঠন ও প্রচার। ২০ হাজার ভোটে এই কেন্দ্রেও লোকসভায় এগিয়ে ছিল বিজেপি। সেই ব্যবধান কাটিয়ে প্রায় ৩৩ হাজার ভোটে জিতলেন মধুপর্ণা।

    মানিকতলা কেন্দ্রেও প্রত্যাশিত ভাবে জিতল তৃণমূল কংগ্রেস। প্রয়াত সাধন পাণ্ডের থেকে জয়ের ব্যবধান অনেকটাই বাড়ালেন সুপ্তি পাণ্ডেও। চারটি কেন্দ্রের মধ্যে মানিকতলা কেন্দ্রে ভোটের দায়িত্বে ছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। এই কেন্দ্রে তৃণমূলের জয় নিয়ে কুণাল ঘোষ বলেন, ‘মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ভরসা রেখেছেন। মানিকতলার মানুষ বিজেপিকে ভোট দেবে না বলেই কল্যাণ চৌবে হেরে গিয়েও তিন বছর ধরে মামলা করে নির্বাচন আটকে রেখে দিয়েছিল।’ বাকি তিন কেন্দ্রের জয় নিয়েও তিনি বলেন, ‘এটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেনাপতিত্বে তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের জয় হল।’

    অন্যদিকে, বিজেপির পরাজয় নিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল আশা নিয়ে মাঠে নামে। কী ভাবে মানিকতলায় ভোট হয়েছে, মানুষ সংবাদমাধ্যমে দেখেছে।’ তবে চারটি কেন্দ্রের পরাজয়ের পর দলের আত্মবিশ্লেষণের প্রয়োজন রয়েছে বলেও মনে করেন তিনি। শমীক বলেন, ‘আমরা পরাজয়ের আর্তনাদ করছি না। পরাজয়ের পর নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা সেটা বলব না। ভোটে পরাজয়ের কারণে সব দায় অশান্তির উপর চাপিয়ে দেব সেটা নয়। আমাদের ভুল-ত্রুটি আমাদের ঠিক করতে হবে। কিন্তু, সন্ত্রাস কী ভাবে বন্ধ করা যায় সেটাও ভাবা দরকার।’
  • Link to this news (এই সময়)