নদীর ধারে রিলস তৈরি করতে গিয়ে তলিয়ে গেলেন দুই যুবতী। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে অন্ডালের বাসকা ফিল্টার হাউস নদী ঘাটে। একজনকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। অন্যজনের খোঁজে চলছে তল্লাশি।শনিবার বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ অন্ডালের ১২ নম্বর রেল কলোনির বাসিন্দা জ্যোতি প্রসাদ (২৫) এবং তাঁর দুই আত্মীয় রাঁচির বাসিন্দা বিউটি পাশওয়ান (২০) ও প্রিয়াঙ্কা পাসওয়ান রিলস তৈরি করার জন্য গিয়েছিলেন মদনপুর পঞ্চায়েতের বাসকা ফিল্টার হাউস নদী ঘাটে। প্রত্যক্ষদর্শী মিন্টু গোস্বামী জানান, ঘাটের পাশে দাঁড়িয়ে ভিডিয়ো করছিলেন এই তিনজন। কিন্তু, অন্যমনস্কতার কারণে নদীতে পড়ে যান প্রিয়াঙ্কা। তাঁকে বাঁচাতে জলে ঝাঁপ দেন জ্যোতি প্রসাদ ও বিউটি পাশওয়ান।
প্রিয়াঙ্কা জল থেকে ঘাটে উঠে আসতে পারলেও নদীতে তলিয়ে যান জ্যোতি প্রসাদ ও বিউটি পাসওয়ান। এই খবর চাউর হতেই নদী ঘাটে ভিড় জমান স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে যায় অন্ডাল থানার পুলিশ । স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ নিখোঁজ দুই যুবতীর খোঁজে নদীতে নেমে শুরু করে তল্লাশি। কিছুক্ষণ তল্লাশির পর বিউটি পাসওয়ানকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁকে তড়িঘড়ি নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় হাসপাতালে। তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন। অন্যদিকে, নিখোঁজ জ্যোতি প্রসাদের খোঁজে চলছে তল্লাশি। তবে এখনও তাঁর খোঁজ মেলেনি বলেই জানাচ্ছেন উদ্ধারকারীরা।
পরিবার সূত্রে খবর, রিলস তৈরির জন্য তাঁরা সকাল সকাল বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। কিন্তু, এই ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, তা স্বপ্নেও ভাবেননি তাঁরা। তিন জনকেই সতর্ক করেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। উল্লেখ্য, বর্তমানে নেটদুনিয়ার সুবাদে রিলস তৈরি এবং তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করার বিষয়টি খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু, রিলস নিয়ে মাতামাতির জন্য এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ভাইরাল হওয়ার লোভে অতীতেও অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে। চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেওয়ার মতো বিপজ্জনক স্টান্টও করতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু, তাতেও এই ধরনের রিলস তৈরির প্রবণতা খুব একটা কমেনি।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের কথায়, ‘আজকাল অনেতেই ফোমো-তে ভোগেন। ‘ফিয়ার অফ মিসিং আউট’ বা অন্যদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে পারছেন না এই ভাবনা থেকেই মূলত বিপজ্জনক রিলস তৈরির ইচ্ছে তৈরি হয় অনেক সময়। পাশাপাশি এক্ষেত্রে ভিউস বেশি হলে আর্থিক মুনাফার একটা বড় সম্ভাবনা থাকছে। মোটের উপর বিষয়টি নিয়ে পর্যাপ্ত সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে।’