মধুরেণ সমাপয়েৎ! রাজ্যের চারটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন থাকলেও মানিকতলা কেন্দ্র নিয়ে কিঞ্চিৎ বেশিই উত্তেজনা তৈরি হয়। বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে হারলে, তাঁর বাড়িতে রসগোল্লার হাঁড়ি পাঠাবেন বলে আগেই জানিয়েছিলেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। সেইমতো, শনিবার ফল বেরোনোর পরেই কল্যাণের আবাসনে পৌঁছল মিষ্টির হাঁড়ি। সেই মিষ্টি আদৌ চেখে দেখেছেন কল্যাণ? সে উত্তর অবশ্য পাওয়া যায়নি।মানিকতলা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী সুপ্তি পাণ্ডের বিরুদ্ধে লড়াই ছিল কল্যাণ চৌবের। তবে, বিধানসভা নির্বাচন যত এগিয়ে এসেছে, ততো লড়াইটা কুণাল বনাম কল্যাণ হয়ে যায়। দু’জনেই বিরুদ্ধে বিষোদ্গার শুরু করেন। ঘটনাচক্রে এই কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী কোর কমিটির দায়িত্বেও ছিলেন কুণাল ঘোষ। সেই সূত্রে ভোট পরিচালনার করার অগ্রভাগে দেখা গিয়েছে কুণাল। ঘোষকে।
ভোটের দু’দিন আগেই হঠাৎ করেই একটি ফোনের কথোপকথনের অডিয়ো ক্লিপ (সত্যতা যাচাই করেনি এই সময় ডিজিটাল) প্রকাশ করেন কুণাল। এরপর থেকেই রাজনৈতিক বাদানুবাদ আরও চরমে ওঠে। সেখানেই কুণাল দাবি করেন, ফোনে তাঁকে ‘অন্তর্ঘাত’ করার প্রস্তাব দিয়েছেন কল্যাণ চৌবে। এআইএফএফের সভাপতি পদে কল্যাণ চৌবে থাকলেও ভোটের মুখেই কুণালের ‘ব্যাক ভলি’ সমস্যায় ফেলে দেয় কল্যাণকে। যদিও, তিনি অন্তর্ঘাতের বিষয়ে কিছু বলেনি বলে পালটা সাফাই দেন কল্যাণ।
বাদানুবাদের মাঝেই কুণাল জানিয়েছিলেন, এই কেন্দ্রে কল্যাণ যত হাজার ভোটে হারবেন, সেই কয়টি রসগোল্লা হারের পর তাঁর বাড়িতে পাঠাবেন কুণাল ঘোষ। ভোটের ময়দানে নিছক রসিকতা নয়, সেটা বাস্তবেও করে দেখালেন কুণাল। এদিন ফলাফল প্রকাশের পরেই উল্টোডাঙায় কল্যাণের বাসস্থানে চলে যায় কুণালের দূতরা। মিষ্টির হাঁড়ি নিয়ে হাজির হয় তাঁর আবাসনের সামনে। যদি, কল্যাণের আবাসনের ভেতর পর্যন্ত যাওয়ার অনুমতি পাননি তাঁরা। ওই আবাসনের কর্মীর হাতে মিষ্টির হাঁড়ি দিয়ে আসেন তাঁরা। সেই হাঁড়ির মিষ্টি কল্যাণের সামনে প্লেট পর্যন্ত পৌঁছেছে কিনা, সেটা অবশ্য জানা যায়নি। এই কেন্দ্র থেকে প্রায় ৬৩ হাজার ভোটে হেরেছেন কল্যাণ। ৬৩টি রসগোল্লা সমেত হাঁড়ি পাঠানো হয় তাঁর বাড়িতে।
উল্লেখ্য, এই কেন্দ্রে গতবারের বিধানসভা নির্বাচনেও দাঁড়িয়েছিলেন কল্যাণ চৌবে। প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক সাধন পাণ্ডের কাছে হারের পর এই নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন কল্যাণ। পরে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যায় এই মামলা। কিছুদিন আগেই হাইকোর্ট থেকে সেই মামলা তুলে নেন তিনি। এরপর উপনির্বাচনে ফের এই কেন্দ্র থেকে লড়াই করেন কল্যাণ চৌবে। দ্বিতীয়বার এই কেন্দ্র থেকে হারতে হল তাঁকে। বাড়ল হারের ব্যাবধান। তবে, কুণালের এই পদক্ষেপ কি আদতে মিছরির ছুরি মারা হল? মুখ টিপে বলছেন অনেকেই।