সেফটিক ট্যাঙ্কে মজুত চোলাই সামগ্রী বের করতে গিয়ে ডেবরায় দাদু, নাতি সহ মৃত ৩
বর্তমান | ১৪ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, মেদিনীপুর: নির্মীয়মাণ সেফটিক ট্যাঙ্কে মজুত রাখা চোলাইয়ের উপকরণ বের করতে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাসে দাদু, নাতি সহ তিনজনের মৃত্যু হল। শনিবার সকালে ডেবরার খানামোহন পঞ্চায়েত এলাকার চকরাধাবল্লভ গ্রামের ওই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। মৃতদের নাম বৈদ্যনাথ হেমব্রম(৫৫), তাঁর নাতি সুজয় সোরেন(১৬) ও বাপি বাস্কে(৪৫)। সুজয়ের বাড়ি পাশের শ্রীরামপুর এলাকায়। পুলিস জানিয়েছে, সেফটিক ট্যাঙ্কের গ্যাস থেকে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ডেপুটি কালেক্টর (এক্সসাইজ) প্রদীপকুমার ঘোষ বলেন, সেফটিক ট্যাঙ্কে রাখা চোলাই মদের উপকরণ বের করতে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাসে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বলে শুনেছি। ওখানে অভিযান চালানো হয়। আমাদের হাত থেকে বাঁচার জন্য অনেকে এসব লুকিয়ে রাখে। ওখানেও লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই এলাকায় একাধিক বাড়িতে চোলাই তৈরি হয়। মৃত বৈদ্যনাথের বাড়িতেও তা তৈরি হতো। সূত্রের খবর, অনেকে চোলাই তৈরির মূল উপকরণ তাঁর কাছ থেকে নিয়ে যেত। একপ্রকার পাইকারি বিক্রি হতো বলা চলে। আবগারি দপ্তর অভিযান চালাবে এই ভয়ে সব কিছু বাড়ির পিছনের সেফটিক ট্যাঙ্কে লুকানো থাকত। এদিন সকালে তার নাতি লুকিয়ে রাখা চোলাইয়ের উপকরণ বের করতে প্রথমে সেফটিক ট্যাঙ্কে নামে। বিষাক্ত গ্যাসে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে। নাতির চিৎকার শুনে তাকে বাঁচাতে নামেন বৈদ্যনাথ। তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েন। দু’জনেরই কোনও সাড়া না পেয়ে প্রতিবেশী বাপি ওই সেফটিক ট্যাঙ্কে নেমে অসুস্থ হয়ে পড়েন। খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাসিন্দারা ভিড় জমান। ডেবরা থানার পুলিস আসে। পুলিস ও স্থানীয়দের চেষ্টায় তিনজনকে উদ্ধার করে ডেবরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক তাঁদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জেলাপরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শান্তি টুডু বলেন, অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। ওখানে খড় চাপা দিয়ে চোলাইয়ের উপকরণ রাখা ছিল। সেটা বের করতে গিয়েই তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। আরও সক্রিয়ভাবে অভিযান চালানোর জন্য আবাগারি দপ্তরকে বলেছি। বাসিন্দাদের সচেতন করতে আমরাও উদ্যোগ নেব। স্থানীয়রা বলেন, চোলাই মদের কারণে বাড়িতে অশান্তি হচ্ছে। মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। সরকারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আবগারি দপ্তর আসে অভিযান চালিয়ে চলে যায়। ফের ব্যবসা শুরু হয়। স্থানীয় বাসিন্দা শুভেন্দু ঘোড়াই বলেন, আমরা চাই আবাগারি দপ্তর ও প্রশাসন এই এালাকায় চোলাইয়ের কারবার সম্পূর্ণ বন্ধ করুক। প্রদীপবাবু বলেন, ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে চোলাইয়ের কারবার সম্পূর্ণ বন্ধ করা হবে। উদ্ধার হওয়া দেহ।-নিজস্ব চিত্র