ডেটলাইন পেরতেই দখলমুক্ত অভিযান শুরু, মুরারইয়ে ভাঙা হল অবৈধ নির্মাণ
বর্তমান | ১৪ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: ডেটলাইন অতিক্রম করতেই শনিবার দুপুরে ফুটপাত দখলমুক্ত অভিযানে নামল মুরারই-১ ব্লক প্রশাসন ও পুলিস। জেসিবি দিয়ে নিকাশি নালার উপর একের পর এক অবৈধ নির্মাণ ভেঙে দেওয়া হয়। দফায় দফায় বাধা এলেও তা সরিয়ে দখলমুক্ত অভিযান চলে।
মুরারই বাজারে ফুটপাত দখল করে তেমন অস্থায়ী দোকানপাট ছিল না। তবে অধিকাংশ বাড়ি ও স্থায়ী দোকানের বাড়তি অংশ নিকাশি নালার উপর অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছিল। কোথাও আবার সেই নির্মাণ নালা পেরিয়ে রাস্তার উপর চলে এসেছিল। তার ফলে নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল বাজার এলাকায়। তেমনি রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে পড়ায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছিল। এটাই মুরারইবাসীর কাছে জ্বলন্ত সমস্যা। এই রাস্তা দিয়ে লাগোয়া ঝাড়খণ্ড যাওয়া যায়। তেমনি রয়েছে এখানে পাথর শিল্পাঞ্চল। তার উপর মুরারইয়ের বুক চিরে সাহেবগঞ্জ বর্ধমান লুপলাইন চলে যাওয়ায় দীর্ঘক্ষণ রেলগেট বন্ধ থাকে। ফলে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত যানজটে পড়ে চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হয় সাধারণ মানুষ থেকে পড়ুয়াদের।
সমস্যার সমাধানে গত ২০ জুন সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, এলাকার বিশিষ্ট নাগরিক, বিধায়ক ও জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক করেন বিডিও বীরেন্দ্র সিং। আলোচনায় উঠে আসে, দীর্ঘদিন নিকাশি নালাগুলি পরিষ্কার না হওয়ায় বুজে গিয়েছে। কোথাও আবার নালার উপর অবৈধ নির্মাণ হয়েছে। ফলে দুর্গন্ধ যুক্ত নোংরা জল রাস্তার উপর দিয়ে বইছে। তা মাড়িয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে নাগরিকদের। এক পশলা বৃষ্টি হলেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে এলাকা। তার উপরে নিকাশি নালা ও ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় যানজট নিত্যদিনের সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঠিক হয়, যাঁরা নিকাশি নালা দখল করে অবৈধ নির্মাণ করেছেন, তাঁদের ভেঙে ফেলার জন্য বলা হবে। নইলে নির্দিষ্ট সময়ের পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা ভেঙে ফেলা হবে। সেই মতো ১৩ জুলাই দুপুর দুটোর মধ্যে ফুটপাত দখল করে থাকা অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলতে লাগাতার মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সচেতন করে ব্লক প্রশাসন।
এদিন অবশ্য সকাল হতেই কয়েকজন নিজ উদ্যোগে ফুটপাতে থাকা হাতে গোনা কয়েকটি অস্থায়ী দোকান ও বাড়ির বাড়তি অংশ ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করেন। দু’টো পেরতেই জেসিবি মেশিন নিয়ে রেলগেট থেকে মুরারই বাজার হয়ে নতুনবাজার পর্যন্ত রাস্তা ও নিকাশি নালা দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ নির্মাণ ভাঙার কাজ শুরু করেন বিডিও। সঙ্গে বিএলআরও, পিডব্লুডি ও পুলিস ছিল। যদিও অনেকেই এদিন বাড়ি বা দোকানের বাড়তি অংশ ভাঙার কাছে বাধা দেন। পুলিস অবশ্য তাঁদের সরিয়েই অভিযান অব্যাহত রাখে।
বিডিও বলেন, অভিযানের লক্ষ্য হল, সুস্থ ট্রাফিক ও নিকাশি ব্যবস্থা। সেজন্য ফুটপাত দখলমুক্ত করছি ও সরকারি নালার উপরে থাকা অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলছি। এতে যেমন যানজট কমে আসবে, তেমনি ভারী বর্ষার মরশুমে এলাকাবাসীর পথ চলতে সুবিধা হবে। রবিবারও এই অভিযান জারি থাকবে।
প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, মুরারইয়ে সুপার মার্কেট, কর্মতীর্থগুলি খালি পড়ে আছে। সেখানে ফুটপাত ব্যবসায়ীরা চাইলে পুনবার্সন দেবে সরকার।