সময়মতো জখম ব্যক্তিকে প্লাটফর্ম থেকে হাসপাতালে না নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ
বর্তমান | ১৪ জুলাই ২০২৪
সংবাদদাতা, হরিশ্চন্দ্রপুর: ট্রেনের চাকায় হাত ও পা কাটা অজ্ঞাত পরিচয় বৃদ্ধকে প্লাটফর্মে ঘণ্টাখানেক ফেলে রাখার অভিযোগ উঠল জিআরপি ও আরপিএফ কর্মীদের বিরুদ্ধে। রক্তক্ষরণ ও চিকিৎসার অভাবে ছটপট করতে করতে প্রাণ গেল বৃদ্ধের। মৃত্যুর পর দেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সকালে এমনই ছবি দেখা গেল মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুর রেল স্টেশনে। এই ঘটনার পরই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি ট্রেন যাত্রীদের প্রাণের কোনও দাম নেই?
দুর্ঘটনায় গুরুতর জখমের পরেও দীর্ঘক্ষণ কেন প্লাটফর্মে পড়ে থাকলেন বৃদ্ধ? প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার মানুষ থেকে যাত্রীরা। গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন রেলের কাটিহারের ডিআরএম সুরেন্দ্র কুমার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকালে অজ্ঞাত পরিচয় ওই ব্যক্তি হাওড়াগামী কুলিক এক্সপ্রেস থেকে নামতে গিয়ে পড়ে যান। ট্রেনের চাকায় হাত এবং পা কাটা যায় তাঁর। অভিযোগ, জখম ওই বৃদ্ধকে দীর্ঘক্ষণ প্লাটফর্মে রোদের মধ্যে শুয়ে রাখা হয়। হাসপাতালে পাঠানো তো দূর, ওই ব্যক্তি বারবার জল খেতে চাইলেও দেওয়া হয়নি। যাত্রীরা সাহায্য করতে এগিয়ে এলে তাঁদেরও লাঠি উঁচিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসার অভাবে ওই বৃদ্ধ হরিশ্চন্দ্রপুর রেল স্টেশনের প্লাটফর্মে ছটফট করতে করতে মারা যান বলে অভিযোগ।
ঘণ্টাখানেক পর অ্যাম্বুলেন্সে করে মৃতদেহটি হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায় রেল পুলিস। প্রত্যক্ষদর্শী রজব আলি বলেন, আমি সকালে কুলিক এক্সপ্রেস ধরার জন্য আসি। কিন্তু কয়েক সেকেন্ড দেরি হওয়ায় ট্রেন ধরতে পারিনি। স্টেশন থেকে ট্রেনটি বেরিয়ে যেতেই ওই বৃদ্ধকে রেল লাইনের উপর হাত ও পা কাটা অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখি। তারপরই জিআরপি ও আরপিএফকে জানাই। তারা প্লাটফর্মে বৃদ্ধকে ঘণ্টাখানেক ফেলে রাখে। আমরা সাহায্য করতে গেলে লাঠি উঁচিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। রজবের অভিযোগ, জিআরপি ও আরপিএফের চোখের সামনে বৃদ্ধটির মৃত্যু হয়। ওদের গাফিলতিতেই লোকটির মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। যদিও নিজেদের গাফিলতি মানতে নারাজ মালদহের জিআরপির আইসি প্রশান্ত রায়। তাঁর যুক্তি, আমাদের নিজস্ব গাড়ি থাকে না। গাড়ি পেতে সামান্য দেরি হয়েছে। সব কাজ জিআরপি ও আরপিএফ করেছে। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিস ওই ব্যক্তির পরিচয় জানতে তদন্তে নেমেছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।