• পার্থ-নারায়ণ-বিশ্বজিতের মিলিত লড়াই, বাগদায় কার্যত উড়ে গেল বিজেপি
    বর্তমান | ১৪ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বনগাঁ: ২০১১ বিধানসভা নির্বাচনে বাগদা কেন্দ্রে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূল প্রার্থী উপেন বিশ্বাস। এরপর দু’টি বিধানসভা নির্বাচনে বাগদা কেন্দ্রে তৃণমূলের পরাজয় হয়। ২০১৯ ও ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনেও বাগদায় পিছিয়ে ছিল রাজ্যের শাসকদল। এবার হারানো জমি ফিরে পেতে বাগদা উপ নির্বাচনে দলের সেনাপতি হিসেবে সাংসদ পার্থ ভৌমিককে দায়িত্ব দিয়েছিল তৃণমূল। এর পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি নারায়ণ গোস্বামী ও বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসও ভোটে সামনের সারিতে থেকে নেতৃত্ব দেন। পার্থ- নারায়ণ-বিশ্বজিৎ এই ত্রিফলা ঝড়ে বাগদা উপ নির্বাচনে কার্যত উড়ে সাফ হয়ে গিয়েছে বিজেপি। গেরুয়া প্রার্থীকে ৩৩ হাজার ৪৫৫ ভোটে পরাজিত করেন তৃণমূলের তরুণ মুখ মধুপর্ণা ঠাকুর।


    উপ নির্বাচনে জয় ছিনিয়ে আনতে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন সদ্য সাংসদ হওয়া পার্থ ভৌমিক। বাগদার হেলেঞ্চায় এক কর্মী সম্মেলনে জেলা ও রাজ্যস্তরের নেতাদের সামনেই পার্থবাবু বলেছিলেন, ‘উপ নির্বাচনে পিছন থেকে কেউ বাগড়া দেওয়ার চেষ্টা করলে ভুল করবেন।’ এই মন্তব্যে বাগদাজুড়ে শোরগোল পরে যায়। এর পাশাপাশি বয়রা পঞ্চায়েত সহ একাধিক এলাকার কর্মীদেরও কড়া বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন। এছাড়া বাগদার একাধিক এলাকায় গিয়ে স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে ওঠা ক্ষোভ প্রশমনে ব্যক্তিগতভাবে ক্ষমা চেয়েছিলেন। এই পদক্ষেপ জয়ের পথ খুলে দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। পার্থবাবু বলেন, ‘বাংলার মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপর ভরসা রাখেন। তা আবার প্রমাণিত হল। এই এলাকায় উন্নয়নের কাজ আরও ত্বরাণ্বিত হবে মধুপর্ণার হাত ধরে। লোকসভা নির্বাচনের সময় সাংগঠনিক কিছু সমস্যা ছিল। তা মিটিয়ে আমরা সবাই একসঙ্গে লড়েছি। তার ফল বাগদার মানুষ দিয়েছেন।’


    বাগদায় ভোট প্রচারে এসে কড়া বার্তা দিয়েছিলেন নারায়ণ গোস্বামীও। বাগদার একাধিক এলাকায় সরকারি জমি দখল করার অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় নেতাদের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ পেয়ে দু’দিনের মধ্যে দখল জমি মুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলা সভাধিপতি নারায়ণ। তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন। এই মন্তব্যেও বাগদায় সাড়া পড়ে গিয়েছিল। নারায়ণবাবু বলেন, ‘আমরা মানুষকে শুদ্ধিকরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। বাগদাবাসী আমাদের উপর ভরসা রেখেছেন। তাঁরা বুঝেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেন না।’ এর পাশাপাশি বাগদায় লাগাতার প্রচার চালিয়েছিলেন বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার তৃণমূল সভাপতি বিশ্বজিৎ দাসও। এছাড়াও প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু ও রথীন ঘোষ। সবমিলিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের সম্মিলিত চেষ্টায় জয় ছিনিয়ে আনে তৃণমূল। শনিবার ফল ঘোষণার পর তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর বলেন, ‘দলের নেতা-মন্ত্রীরা যেভাবে বাগদায় মাটি কামড়ে পড়েছিলেন ভোটাররা তার সম্মান জানিয়েছেন। এ জয় বাগদাবাসীরই জয়।’
  • Link to this news (বর্তমান)