• বৈঠকে বলার চান্স হয়তো মিলবে না, হতাশ পদ্ম-কর্মীরা
    এই সময় | ১৪ জুলাই ২০২৪
  • মণিপুস্পক সেনগুপ্ত

    তাঁদের অনেক কথা বলার আছে। অনেক বিষয়ে জানানোর আছে শীর্ষ নেতৃত্বকে। কিন্তু কী ভাবে জানাবেন? কে শুনবে তাঁদের কথা?লোকসভা এবং চার কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ফলাফলের পর এই প্রথম আগামী ১৭ তারিখ বিজেপির রাজ্য-কমিটির বৈঠক বসছে। সেখানে জেলা এবং মণ্ডলস্তরের নেতারা মনের কথা খুলে বলার পরিকল্পনা করলেও সে সুযোগ পাবেন কি না, তা নিয়ে ঘোর সংশয় রয়েছে।কারণ, ওই বৈঠক 'ওয়ান ওয়ে ট্র্যাফিক' হতে চলেছে বলেই বিভিন্ন সূত্রে জেনেছেন বিজেপির মণ্ডলস্তরের নেতৃত্ব। অর্থাৎ, মঞ্চে বসা শীর্ষ নেতারাই শুধু বলবেন। দর্শকাসনে থাকা জেলা এবং মণ্ডল সভাপতিরা থাকবেন শ্রোতার ভূমিকায়। ফলে অনেক কথা থাকলেও বিজেপির নিচুতলার নেতারা ওই বৈঠকে অন্তত সে সুযোগ পাচ্ছেন না।

    এ বারের লোকসভা ভোটে বাংলায় বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে গেরুয়া ব্রিগেড। রাজ্যে তাদের আসন সংখ্যা এক ধাক্কায় ১৮ থেকে কমে ১২-তে পৌঁছেছে। কেন এমন হলো, তা নিয়ে বিস্তর চর্চা করেছেন বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা সভাপতিরা তাঁদের পর্যালোচনাও জানিয়েছেন রাজ্য নেতৃত্বকে। কিন্তু জেলা ও মণ্ডলস্তরের নেতা, এমনকী রাজ্য-কমিটির বহু সদস্যও নির্বাচনী বির্পযয় নিয়ে অভিমত জানানোর সুযোগ পার্টিতে এখনও পাননি।

    রাজ্য-কমিটির এক সদস্যের কথায়, 'এ বারের লোকসভা ভোটে দলের নিচুতলার কর্মীদের অভিজ্ঞতা না শুনলে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কখনই ঠিক পর্যালোচনা করতে পারবেন না। আর পর্যালোচনা ভুল হলে আগামীর রণকৌশলও যথাযথ হবে না।' বিজেপির একাংশ তাই দলের অন্দরেই দাবি তোলেন, নিচুতলার নেতারা কী বলতে চান, সেটাও কলকাতায় এসে কেন্দ্রীয় নেতারা শুনুন।

    সেই মতো অনেকেই আশা করেছিলেন, ১৭ তারিখ সায়েন্স সিটি-র বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে অন্তত কিছু জেলার সভাপতি, মণ্ডল সভাপতি ও জ়োন পর্যবেক্ষকদের বলার সুযোগ দেওয়া হবে। কিন্তু সে সুযোগ হবে না বলেই বিজেপি সূত্রে খবর। বৈঠকে ডাক পাওয়া এক জ়োন পর্যবেক্ষকের কথায়, 'একই কথা শুনে কী লাভ! সেই চর্বিত চর্বন- ঘুরে দাঁড়াতে হবে, সবাইকে মন দিয়ে কাজ করতে হবে। যদি আমরাও কেন্দ্রীয় নেতাদের অভিজ্ঞতা খুলে বলতে পারতাম, ভালো হতো।'

    রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বের অবশ্য যুক্তি, এত বড় বৈঠকে সবাইকে বলার সুযোগ দিলে মিটিং শেষ হবে না। এক শীর্ষ নেতার কথায়, 'এ ধরনের বড় বৈঠকে ওয়ান ওয়ে ট্র্যাফিকই হয়। বড় নেতারা বলেন, ছোট নেতারা শোনেন। তা ছাড়া ১৭ তারিখের বৈঠক ডাকা হয়েছে নিচুতলার নেতাদের কথা শোনার জন্য নয়। তাঁদের উদ্বুদ্ধ করা ও পরবর্তী রণকৌশল বাতলানোর লক্ষ্যে।'
  • Link to this news (এই সময়)