স্টাফ রিপোর্টার: প্রবেশিকা পরীক্ষায় প্রথম হওয়া মাওবাদী নেতা জেলবন্দি অর্ণব দাম তথা ‘কমরেড বিক্রমে’র পিএইচডিতে ভর্তি নিয়ে জটিলতা কাটল অবশেষে। সোমবার দুপুর তিনটের সময় বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি ক্লাসে ভর্তির জন্য কাউন্সেলিংয়ে ডাকা হয়েছে অর্ণব দামকে। শনিবার এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে। পিএইচডি-র মেধাতালিকায় এক নম্বরে রয়েছে অর্ণবের নাম। কাউন্সেলিংয়ের পর ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে ভর্তিপ্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হবে। ১৮ জুলাই থেকেই ইতিহাসে যাঁরা পিএইচডি করছেন, তাঁদের ক্লাস শুরু হবে। এই সম্পর্কিত বিজ্ঞপ্তিটি শনিবারই হুগলি জেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
জানা গিয়েছে, পুলিশি নিরাপত্তায় সোমবার মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম (Arnab Dam) ওরফে ‘কমরেড বিক্রম’ ইতিহাস নিয়ে গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন। শনিবার বেলায় অর্ণবের ভর্তি জটিলতা কাটানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গৌতম চন্দ্রকে সরাসরি ফোন করেন প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। দীর্ঘক্ষণ দুজনের মধ্যে যথেষ্ট হৃদ্যতার পরিবেশেই কথা হয়। বস্তুত তার পরেই সমস্ত জট কেটে যায়। পরে এক প্রশ্নের উত্তরে কুণাল স্বীকার করেন, “ফোনে কথা হয়েছে উপাচার্যর সঙ্গে। উনি বিশ্ববিদ্যালয়ের রীতিনীতি মেনেই দ্রুত অর্ণবের ভর্তির ব্যবস্থা করছেন। বাকিটা উনিই জানাবেন।”
সূত্রের খবর, সোমবারই সাংবাদিক বৈঠক ডেকে অর্ণব দামের পিএইচডিতে (PhD) ভর্তি এবং ইতিহাস গবেষণা সংক্রান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (Burdwan University) পদক্ষেপ বিস্তারিত জানিয়ে দেবেন উপাচার্য। অর্ণবের ভর্তির বিষয়টি নিয়ে শনিবার ইতিহাস বিভাগের সঙ্গে কথাও বলে নিয়েছেন উপাচার্য গৌতম চন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, উপাচার্যর সঙ্গে ফোনে বিস্তারিত আলোচনার সময় কুণাল বলেন, ”পিএইচডিতে ভর্তি নিয়ে যে প্রবেশিকা পরীক্ষা হয়েছে তাতে তো অর্ণব প্রথম হয়ে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। তাহলে ওর ভর্তি কেন আটকাবে? কীভাবে জেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবে, ক্লাসে বসবে, না কি অনলাইন ক্লাস করবে, এসবই সেই ছাত্রের বিষয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা নেওয়া, কাউন্সেলিংয়ের (Counselling)শেষে ভর্তির ব্যবস্থা করা। উপাচার্যকে কুণাল বলেন, অর্ণবকে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে দেবে কি না, এলে কী কী নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে সে বিষয়টি তো কারাদপ্তরের অধীন। আবেদন জানিয়ে এডিজি (কারা)-কে চিঠি দিয়েছিলেন অর্ণব দাম। সোমবার পর্যন্ত তাঁর প্যারোল মঞ্জুর করা হয়েছে। বিষয়টি যেহেতু সাজাপ্রাপ্ত বন্দির, তাই ক্লাস করতে প্যারোলে ছাড়বে? নাকি জেল কোড মেনে অন্য কোনও সিদ্ধান্ত নেবে কারা কর্তৃপক্ষ? কারাদপ্তর সূত্রে খবর, হুগলি জেল থেকে ইতিমধ্য়ে বর্ধমান জেলে অর্ণবকে স্থানান্তর করা হয়েছে। সোমবারই তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে।