• ইসলামপুরে তৃণমূল নেতা খুনে সিবিআই তদন্তের দাবি স্ত্রীর
    এই সময় | ১৪ জুলাই ২০২৪
  • ইসলামপুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের স্বামী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেতা বাপি রায়কে গুলি করে খুনের ঘটনায় এবারে সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন মৃতের স্ত্রী লিপি বিশ্বাস রায় ও পরিবারের সদস্যরা। রবিবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে এমনই দাবি শোনা যায় তাঁদের কণ্ঠে।শনিবার রাতে উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর ব্লকের শ্রীকৃষ্ণপুর ও রামগঞ্জের মাঝে মাদারিপুর এলাকায় একটি হোটেলে কয়েকজন দুষ্কৃতী পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করে বাপি রায়কে। এছাড়াও গুলিবিদ্ধ হন রামগঞ্জ ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান রিজুয়ানা পারভিনের স্বামী মহম্মদ সাজ্জাদ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় ইসলামপুর থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী। পরবর্তীতে আইজি উত্তরবঙ্গ রাকেশ কুমার যাদব, ইসলামপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার জবি থমাস সহ অন্যান্য পুলিশ আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান।

    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে একটি হোটেলে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যরা আলোচনায় বসেছিলেন। ঠিক সেই সময় দশ জনের একটি দুষ্কৃতী দল তাঁদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুড়ি ছোড়ে। গুলিবিদ্ধ হন বাপি রায় এবং মহম্মদ সাজ্জাদ। দ্রুত তাঁদের ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক বাপি রায়কে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মহম্মদ সাজ্জাদকে ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করার পর তাঁকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

    রবিবার মৃত বাপি রায়ের স্ত্রী লিপি বিশ্বাস রায় সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন। তিনি বলেন, 'শনিবার সন্ধ্যায় মহম্মদ সাজ্জাদ ফোন করে বাপিকে ডাকে। ও পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। বলেছিল, কিছুক্ষণের মধ্য়েই ফিরে আসবে।'

    তিনি আরও বলেন, 'হঠাৎ জানতে পারি ও গুলিবিদ্ধ হয়েছে। ওর ফোন এবং গলার সোনার চেন পাওয়া যায়নি। ঘটনার সঙ্গে যুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি করছি। এই ঘটনায় সিবিআই তদন্ত চাই।’ গোটা ঘটনার নেপথ্যে পরিচিত কেউ জড়িত বলে আশঙ্কা করছেন লিপিদেবী। তাঁর কথায়, ‘ঘটনাস্থলে অনেকেই ছিল। শুধুমাত্র আমার স্বামীকেই গুলি করে হত্যা করা হল কেন?’

    এই ঘটনায় তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কানাইয়া লাল আগারওয়াল বলেন, 'পুলিশের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে। অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি তিন জন দুষ্কৃতী ভেতরে ঢুকে গুলি চালায় এবং তাতে বাপি গুলিবিদ্ধ হয়। পালানোর সময়েও তারা গুলি চালায়। সেই সময় সাজ্জাদও গুলিবিদ্ধ হয়। এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ রয়েছে বলে মনে করছি না। তদন্তে পুরোটাই উঠে আসবে। সিবিআই তদন্তে আমাদের কোনও আপত্তি নেই।'

    ইসলামপুর পুলিশ জেলার সুপার জবি থমাস বলেন, 'শনিবার রাতে ইসলামপুর থানার শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকায় জাতীয় সড়কের পাশে একটি লাইন হোটেলে কয়েকজন খাওয়াদাওয়া করছিল। সেইসময় কয়েকজন এসে তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। একজনের মৃত্যু হয়েছে। একজন আহত। তাঁর চিকিৎসা চলছে। বিষয়টি নজরে আসার পরেই পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করেছে। আমরা সবদিক বিচার করে তদন্ত শুরু করেছি। এই ঘটনার নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে? অন্য কোনও রাজ্যের অপরাধীদের কোনও যোগাযোগ রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।'
  • Link to this news (এই সময়)