• গলায় আটকে যায় চকোলেট, বৈজ্ঞানিক কৌশলে মায়ের প্রাণরক্ষা মেয়েদের
    এই সময় | ১৫ জুলাই ২০২৪
  • মায়ের গলায় আটকে গিয়েছিল চকোলেট। শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হচ্ছিল তাঁর। প্রাণহানির আশঙ্কাও ছিল। চটজলদি বুদ্ধিতে মায়ের প্রাণ বাঁচলেন দুই মেয়ে। হাইমলিক কৌশল প্রয়োগ করে মৃত্যুর হাত থেকে মাকে বাঁচালেন তাঁরা।হাইমলিক কৌশল প্রয়োগ করে মায়ের জীবন রক্ষা করলেন দুই মেয়ে। ঘটনা বাঁকুড়ার সোনামুখীর পাথরমোড়া গ্রামের। জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার সোনামুখী থানার পাথরমোড়া গ্রামের বাসিন্দা মৌসুমী মুখোপাধ্যায়ের গলায় হঠাৎ একটি চকোলেট আটকে যায়। শ্বাসনালীতে গিয়ে আটকে যায় চকোলেট।

    ফলত, তাঁর শ্বাসনালিতে আটকে গিয়েছিল। বন্ধ হয়ে যায় কথাবার্তা। পাশেই ছিল কলেজ পড়ুয়া দুই মেয়ে বৃষ্টি ও চতুর্থী। মায়ের এমন কাণ্ড দেখেই তারা টের পেয়ে যায় মায়ের গলায় কিছু আটকে যাওয়ার কারণেই এই অবস্থা হয়েছে। নিজেরা ভেঙে না পড়ে শিখে রাখা হাইমলিক কৌশল অবলম্বন করতে শুরু করে দেয় দুই মেয়ে। হাইমলিকের প্রয়োগের পরে শ্বাসনালি থেকে বেরিয়ে আসে চকলেটের টুকরো। স্বাভাবিক ছন্দে ফিরে পায় মৌসুমী দেবী।

    এই হাইমলিক এমন একটা কৌশল যা জানা থাকলে এই ধরনের ঘটনা থেকে প্রাণ বাঁচানো সম্ভব বলে দাবি করেন তাঁরা। বৃষ্টি ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির ক্যাম্প থেকে এই হাইমলিকের শিক্ষা নিয়েছিল বলে জানায়। আর সেই শিক্ষায় তার মায়ের জীবন রক্ষা করতে সাহায্য করেছে। দুই কন্যার এই কীর্তি ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন প্রান্তে।মেয়ে বৃষ্টি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘মায়ের গলায় যখন আটকে গিয়েছিল, তখন কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। এটা সাধারণ বিষম খাওয়া নয়। গলা থেকে একটা অদ্ভুত আওয়াজ বের হতে থেকে। এই হাইমলিক পদ্ধতির মাধ্যমে মাকে আমরা বাঁচাতে পেরেছি।’

    রবিবার ওই এলাকায় স্কুল পড়ুয়া ও গ্রামের মানুষের সামনে হাইমলিক কৌশল প্রয়োগ কিভাবে করা হয় কোন ক্ষেত্রে করা হয় তা তুলে ধরা হয়। মায়ের জীবন বাঁচিয়ে সবার সামনে তাঁদের দাবি হাইমলিক সবার শিখে রাখা উচিত। তাতে অনেকের প্রাণ রক্ষা করা যাবে। ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির দাবি, বাঁকুড়া জেলায় এই হাইমলিক অনেকের প্রাণ বাঁচিয়েছে। তাই এটা সকলের শিখে নেওয়া উচিত।

    ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সৌম্য সেনগুপ্ত বিষয়টি নিয়ে জানান, মানুষের শ্বাসরোধ হয়ে গেলে যে কৌশলে মানুষকে বাঁচাতে হয়, সেটা হল হাইমলিক কৌশল। ডঃ হেমরিজ হাইমলিক নামে একজন বিজ্ঞানী এটা আবিষ্কার করেছিলেন। যে মানুষের শ্বাসরোধ হয়ে যায়, তাঁর হাতে বড়জোর চার মিনিট সময় থাকে। সেই সময়ের মধ্যে তাঁকে একমাত্র এই কৌশলে বাঁচানো সম্ভব।
  • Link to this news (এই সময়)