শ্রীকান্ত পাত্র, ঘাটাল: সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির প্রতিনিধি নির্বাচনে অশান্তি। সিপিএম ও তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ধস্তাধস্তিতে ঝরল রক্ত। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের সুলতান নগর এলাকায় তুমুল উত্তেজনা। পুনর্গণনার দাবিতে অনড় রাজ্যের শাসক শিবির। পালটা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ছাপ্পাভোট দেওয়ার অভিযোগ সিপিএমের। এলাকায় মোতায়েন বিশাল পুলিশবাহিনী। নামানো হয়েছে ব়্যাফ।
গত ২০১৯ সালে দাসপুরের সুলতান নগর জোটগৌরাঙ্গ সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচিত বোর্ডের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। অভিযোগ, তৃণমূল পরিচালিত বোর্ড ভোট করেনি। প্রশাসক নিয়োগ করে। অভিযোগ, প্রশাসকের আড়ালে তৃণমূলই চালাত সমবায় সমিতি। অসন্তোষের জল গড়ায় কলকাতা হাই কোর্টে। আদালতের নির্দেশে রবিবার মোট ৩১টি আসনবিশিষ্ট সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির প্রতিনিধি নির্বাচনে ভোটাভুটি হয়। সকাল আটটা নাগাদ ভোট শুরুর পর থেকেই অশান্ত হয়ে ওঠে এলাকা। সিপিএমের সমবায় বাঁচাও মঞ্চের অভিযোগ, বহিরাগতদের দিয়ে ছাপ্পাভোট দিয়েছে রাজ্যের শাসক শিবির। এই অভিযোগে ঘাটাল-পাঁশকুড়া রাজ্য সড়ক অবরোধও করে সিপিএম। যদিও পুলিশ অবরোধকারীদের হঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভোট শেষে দেখা যায়, তৃণমূল পেয়েছে ১৫টি। সিপিএমের সমবায় বাঁচাও মঞ্চের প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যা ১২। বিজেপি পেয়েছে মাত্র ৪টি ভোট। সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় তৃণমূল নেতা-কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। ৫টি আসনে পুনর্গণনার দাবি করে রাজ্যের শাসক শিবির। সমবায় কর্তৃপক্ষ, সিপিএমের সমবায় বাঁচাও মঞ্চ, বিজেপি প্রত্যেকেই পুনর্গণনার দাবির বিরোধিতা করে। তাতে ফের নতুন করে উত্তেজনা ছড়ায়। সিপিএম-তৃণমূল ধস্তাধস্তি শুরু হয়। একজন সিপিএম কর্মীর মাথা ফেটে গিয়েছে।
সিপিএমের সমবায় বাঁচাও মঞ্চের জেলা সম্পাদক গণেশ সামন্ত বলেন, “তৃণমূল প্রথম থেকে ভোট বানচালের চেষ্টা করেছে। ছাপ্পা ভোট দিয়েছে। তাও জিততে পারেনি। আসলে মানুষ সমবায় সমিতিতে তৃণমূলকে চায়নি।” বোর্ড গঠন নিয়ে এখনই কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলেই জানান সিপিএম নেতা। দাসপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি সুনীল ভৌমিক অবশ্য পুনর্গণনার দাবিতেই এককাট্টা। তিনি বলেন, “ম্যাজিক ফিগার পাইনি ঠিকই। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছি। তাই আমরাই বোর্ড গঠন করব।” নতুন করে অশান্তি রুখতে এলাকায় মোতায়েন বিশাল পুলিশবাহিনী ও ব়্যাফ।