• চিকিৎসায় ঢিলেমির অভিযোগ, নার্সকে চড় পঞ্চায়েত প্রধানের
    বর্তমান | ১৫ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কান্দি: চিকিৎসায় অসহযোগিতার অভিযোগ। তাতেই মেজাজ হারিয়ে কর্তব্যরত নার্সকে সপাটে চড় কষলেন তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা পঞ্চায়েত প্রধান। রবিবার ভোরে সালার গ্রামীণ হাসপাতালে এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এর প্রতিবাদে সকাল থেকে দিনভর হাসপাতালের গেটে নার্সদের একাংশ ধর্নায় বসেন।


    হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন ভোরে নাসতুন খাতুন নামে এক নাবালিকাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান রেজি বেগম। ইমার্জেন্সি থেকে নাবালিকাকে মহিলা ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। অভিযোগ, নাবালিকাকে ইঞ্জেকশন দেওয়ার জন্য ওয়ার্ড থেকে পাশের ঘরে নিয়ে আসতে বলেন নার্স। তখনই চিকিৎসায় দেরি করা হচ্ছিল। এনিয়ে কর্তব্যরত নার্সের সঙ্গে পঞ্চায়েত প্রধান সহ কয়েকজনের বচসা শুরু হয়ে যায়। সেইসময় কর্তব্যরত নার্সকে পঞ্চায়েত প্রধান সপাটে চড় কষিয়ে দেন। এরপরেই সেখানে একজন সিনিয়র নার্স, গ্রুপ-ডি কর্মী এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। পরে খবর পেয়ে পুলিস আসে। সালার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আক্রান্ত নার্সকে। এদিন বিকেল পর্যন্ত তিনি সেখানেই ভর্তি ছিলেন।


    এদিকে সকাল হতেই এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে যায়। পরে হাসপাতালের নার্সদের একাংশ প্রধান গেটের সামনে ধর্নায় বসেন। মূল গেটে পোস্টার দেওয়া হয়। তাতে লেখা ছিল, মদ্যপ অবস্থায় নেতারা কেন হাসপাতালে প্রবেশ করবেন? অন ডিউটি অবস্থায় নার্সকে মারধর করার ঘটনায় অভিযুক্তদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শাস্তি দিতে হবে। নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীরা ধর্নায় বসলেও চিকিৎসা পরিষেবা স্বাভাবিক ছিল বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এই ঘটনায় আক্রান্ত নার্স বলেন, যে ঘরে ইঞ্জেকশন দেওয়ার কথা, সেখানে অন্ধকার ছিল। তাই আমি পাশের ঘরে রোগীকে নিয়ে আসতে অনুরোধ করি। কিন্তু ওঁরা তা না করে আমাকে হুমকি দিতে থাকেন। একদিনের মধ্যে চাকরি খেয়ে নেওয়ার কথা বলেন। এমনকী, আমাকে বাইরে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এসব আমি চুপচাপ শুনছিলাম। সেই সময় প্রধান আমাকে সপাটে চড় মারেন। তাতে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি।


    এনিয়ে পঞ্চায়েত প্রধানকে বারবার ফোন করেও যোগাযোগ করা যায়নি। এমনকী মেসেজ পাঠিয়েও কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি। তবে, তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ঘটনার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে। এবিষয়ে দলের বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, সারাদিন পরিষেবা দিতে হয় স্বাস্থ্যকর্মীদের। তাঁদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় উচিত। যদি কোনও ভুল হয়েও থাকে তাহলে তার প্রতিবাদ জানানোর এটা পদ্ধতি নয়। আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। এব্যাপারে স্বাস্থ্যদপ্তর ও পুলিস নিশ্চয়ই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। এই ঘটনায় স্থানীয় ভরতপুর-১ বিএমওএইচ কৌশিক আদিত্য বলেন, থানায় অভিযোগ জানিয়েছি। আমরা চাই, দোষীরা শাস্তি পাক। পুলিস জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে এখনও অভিযুক্তদের ধরা যায়নি।
  • Link to this news (বর্তমান)