• বোরো বাঁধে জল বাড়লে প্লাবিত হবে বিস্তীর্ণ অঞ্চল
    বর্তমান | ১৫ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: বর্ষা এসে গেছে। ধীরে ধীরে দামোদর, রূপনারায়ণ, দ্বারকেশ্বর, মুণ্ডেশ্বরী নদীতে জল বাড়ছে। খানাকুল-১ ব্লকে দ্বারকেশ্বর নদের উপর ৭টি বোরো বাঁধ এখনও কাটা হয়নি। নদের জল ছোট খাল ও নিচু বাঁধের পাড় টপকে জমিতে ঢুকতে শুরু করেছে। জল বাড়লে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হবে। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত বাঁধ কাটার দাবি জানাচ্ছেন। 


    খানাকুলে বোরো চাষের জন্য নদীতে প্রতিবছর বাঁধ দেওয়া হয়। নদীতে এবারও বাঁধ দেওয়া হয়েছে। খানাকুল-১ ব্লকে গুজরাট, বন্দিপুর, বেনেজোলা, রঘুনাথপুর, চকভেদুয়া, কালুয়া ও গাঙতে এলাকায় বোরো বাঁধ রয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির তত্ত্বাবধানে মোট ৭টি বাঁধ দেওয়া হয়েছিল। চাষিরা বোরো ধান মাঠ থেকে ইতিমধ্যেই তুলে নিয়েছেন। আষাঢ় মাসের প্রথম দিকে বাঁধগুলো কেটে ফেলা হয়। বাঁধগুলো এইবছর এখনও কাটা হয়নি। কিশোরপুর-১ পঞ্চায়েতের ময়াল, পিলখাঁ, রঘুনাথপুরের নিচু এলাকায় নদীখাল ও নিচু পাড় দিয়ে নদের জল ঢুকছে। জমি থেকে জল বেরতে পারছে না। জল আরও বাড়লে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হবে। যেসব ঠিকাদার সংস্থাকে বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাদের দাবি, নির্মাণ কাজে প্রশাসন এখনও তাদের বকেয়া টাকা মেটায়নি। টাকা মিটিয়ে দেওয়া হলেই তারা বাঁধ কেটে দেবে। স্থানীয় বাসিন্দারা বাঁধ না কাটায় বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছেন। ঘোষপুর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ ঘড়ুই বলেন,  দ্বারকেশ্বর নদের জল বাড়ছে। কিশোরপুর-১ পঞ্চায়েতের রঘুনাথপুর এলাকার স্লুইস গেট দিয়ে বেশি জল বেরতে পারছে না। জমি এলাকায় এখন জল ঢুকছে। জল আরও বাড়লে লোকালয়ে জল ঢুকে পড়ার আশঙ্কা করছি। স্থানীয় পঞ্চায়েত ও প্রশাসনকে বাঁধগুলো কাটার জন্য বারবার আবেদন করা হচ্ছে। প্রশাসন এখনও পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। কিশোরপুর-১ পঞ্চায়েতের রঘুনাথপুর এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ময়াল এলাকার বরো বাঁধটি অবিলম্বে কাটা দরকার। নদে জল বাড়লে পিলখাঁ, ডোঙ্গল রঘুনাথপুর সহ বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যার জলে প্লাবিত হবে। এমনিতেই নিচু জমি এলাকায় জল ঢুকছে। জমিতে রোয়ার বীজ ফেলা হয়েছে। প্রশাসন সতর্ক না হলে বড়ো বিপদ হতে পারে। ঠিকাদার সংস্থার এক মালিক শ্রীজীব মাইতি বলেন, খানাকুলে-১ ব্লকে যৌথ কয়েকটি ঠিকাদার সংস্থা মিলে ৭টি বোরো বাঁধ তৈরি করেছে। খানাকুল-২ ব্লকে যেসব সংস্থা জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে বাঁধ তৈরি করেছিল, তাদের পেমেন্ট দেওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমরা এখনও পেমেন্ট পাইনি। আগের বছরের পেমেন্টগুলো পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছি সব বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়া হোক। 


    খানাকুল-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শম্পা মাইতি বলেন, জরুরি ভিত্তিতে কালুয়া বোরো বাঁধ কেটে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্য বাঁধগুলো যাতে দ্রুত কাটা হয়, তার চেষ্টা চলছে। ঠিকাদার সংস্থাগুলোকে পেমেন্ট মিটিয়ে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে এসডিও ম্যাডামকে জানানো হয়েছে। এসডিও সুভাষিনী ই এদিন বলেন, ঠিকাদার সংস্থাগুলোর বাকি থাকা পেমেন্ট দ্রুত মিটিয়ে দেওয়া হবে। বোরো বাঁধগুলি দ্রুত কাটার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)