সাঁইথিয়ায় ময়ূরাক্ষীর নতুন ব্রিজ বন্ধ চূড়ান্ত যানজটে সমস্যায় শহরবাসী
বর্তমান | ১৫ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, সাঁইথিয়া: ‘দাদা, দয়া করে এখন সাঁইথিয়া আসবেন না। এলে কমপক্ষে হাতে বাড়তি ৩০ মিনিট সময় নিয়ে আসুন।’ এমনই বলছেন এলাকার মানুষজন। ময়ূরাক্ষীর নতুন ব্রিজে যান চলাচল বন্ধ থাকায় যানজটে এখন জেরবার সাঁইথিয়া শহর। নদী পারাপারের একমাত্র রাস্তা অস্থায়ী সেতুতে যানজটে পেরতে কালঘাম ছুটছে মানুষের। এখনই এই যানজট থেকে মুক্তির কোনও উপায় নেই। তাই স্থানীয়দের পরামর্শ, হাতে সময় নিয়ে আসুন। না হলে চরম ভোগান্তি।
গত দু’দিন ধরে নতুন ব্রিজের উপর যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ছোটবড় কোনও গাড়িই যেতে দেওয়া হচ্ছে না। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ ব্রিজটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একমাস সময় নিয়েছে। কিন্তু তার আগে প্রায় ৮ মাসের বেশি এই ব্রিজের উপর দিয়ে বড় গাড়ি যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সেসময় নোটিস দিয়ে জানানো হয়েছিল, ব্রিজটি সংস্কারের জন্য বড় গাড়ি চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হল। কিন্তু এতদিন আদৌ কতখানি সংস্কার হয়েছিল তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গিয়েছে এলাকার মানুষের। কেন না এতদিন আগেই যখন যান নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সময় চাওয়া হচ্ছিল তাহলে ফের বর্ষার মুখেই কেন আবার ১ মাস ব্রিজটি বন্ধ করে দেওয়া হল? প্রশ্ন উঠছেই। এর ফলে এতদিন ধরে নদীর দক্ষিণ প্রান্ত থেকে কোনও বাসই সাঁইথিয়ার বাস স্ট্যান্ডে ঢুকতে পারছে না। বাস স্ট্যান্ডের ব্যবসায়ীরাও লোকসানের মুখে পড়েছেন। অন্যদিকে, অস্থায়ী ভাবে ময়ূরাক্ষীর উপর ব্রিজ বানানো হয়েছে। পুরসভা সেখান থেকে কয়েক লক্ষ টাকা টেন্ডারের মাধ্যমে টাকা আয় করে। কিন্তু যত সংখ্যক গাড়ি পারাপার করে তাতে টেন্ডার প্রাপকদের পোয়া বারো। নতুন ব্রিজ সম্পূর্ণ বন্ধ। তাই এখন একমাত্র ভরসা এই অস্থায়ী ব্রিজই। এই কারণে সমস্ত গাড়ি, বাইক পারাপারের জন্য একদিকেই আসতে হচ্ছে। ময়ূরেশ্বর, মল্লারপুর, মুর্শিদাবাদ থেকে শহরের দিকে আসা প্রতিটি গাড়িকে এই ব্রিজ দিয়েই পেরতে হচ্ছে। একসঙ্গে এত গাড়ি যাতায়াত করায় যানজট ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। অগ্রণী ক্লাবের সামনের রাস্তায় ব্যাপক যানজট দেখা যাচ্ছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে সিভিক ভলান্টিয়ার থাকলেও মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। ফলে জেলার বাণিজ্যনগরী নামে খ্যাত শহরের এখন প্রধান মাথাব্যথা যানজট। স্থানীয় বাসিন্দা অপূর্ব শিকদার বললেন, শহরের এই সমস্যা আর মিটল না। একে এত টোটো, তারপর নদীর ওই পার থেকে বাস ঢোকা বন্ধ থাকায় সবাই টোটোয় করে শহরে আসছে। এতে আরও বেশি যানজট হচ্ছে। তারপর এত লরি, চারচাকা গাড়ি একটা রাস্তা ধরে গেলে সমস্যা তো হবেই। আরেক বাসিন্দা কালু হাজরা বলেন, আত্মীয়স্বজন, লোকজন আসতে চাইলে বলছি হাতে বাড়তি সময় নিয়ে এসো। সতীপীঠে পুজো দিতে এলেও বলেছি সকালের দিকে আসতে। ১০টা বেজে গেলে খুব মুশকিল। একসঙ্গে নতুন ব্রিজ ও রেল ব্রিজের কাজ শুরু না করলেই মনে হয় ভালো হতো। পুরসভার চেয়ারম্যান বিপ্লব দত্ত বলেন, আমার তো কিছু করার নেই। প্রশাসন নতুন ব্রিজ বন্ধ করেছে। সত্যিই খুব সমস্যা হচ্ছে। এবার নদীতে জল বেড়ে অস্থায়ী ব্রিজ ভেঙে গেলে যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে। তখন কী হবে, জানা নেই।