টেলিমেডিসিনে দেশের শীর্ষে বাংলা, সবচেয়ে বেশি সাড়া মহিলাদের মধ্যে
বর্তমান | ১৫ জুলাই ২০২৪
বিশ্বজিৎ দাস, কলকাতা: একদিনে এক লক্ষ রোগী দেখা হচ্ছে শুধু অনলাইনেই! এইভাবে চালুর মাত্র তিনবছরে রীতিমতো চমকে দিল রাজ্য স্বাস্থ্যদপ্তরের টেলিমেডিসিন পরিষেবা ‘স্বাস্থ্যইঙ্গিত’। শুধু তাই নয়, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, কেরলের মতো স্বাস্থ্যে অগ্রণী দক্ষিণী রাজ্যগুলিকে গোল দিয়ে, দৈনিক টেলিমেডিসিনে ডাক্তার দেখানোর কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্প ‘ই সঞ্জীবনী’তে বাংলাই এখন শীর্ষে।
২০২১ সালের আগস্টে বাংলায় প্রকল্পটি শুরু হয়। এবছরের জুন পর্যন্ত পরিষেবা পেয়েছেন ৪ কোটি ৪ লাখেরও বেশি মানুষ। স্বাস্থ্যদপ্তর সূত্রের খবর, বাংলায় এখন ১০ হাজারের বেশি সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে এই পরিষেবা মিলছে। এর মধ্যে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৮৯২৬টি, প্রাথমিক ও পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা যথাক্রমে ৭৮০ ও ৪৬৫।
দপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, বাংলার মা-বোনদের মধ্যে স্বাস্থ্যইঙ্গিতে অসম্ভব ভালো সাড়া মিলেছে। সুবিধাভোগীদের ৬৩ শতাংশই মহিলা। পুরুষের সংখ্যা তুলনায় অনেকটাই কম—৩৭ শতাংশ।
জুন মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, টেলিমেডিসিনে ডাক্তার দেখানোয় শীর্ষে রয়েছে চার জেলা ও স্বাস্থ্যজেলা। সেগুলি হল রামপুরহাট, মুর্শিদাবাদ, কালিম্পং এবং পূর্ব বর্ধমান। ২২ শতাংশ পারফরমেন্স বেড়েছে রামপুরহাটের। অন্যদিকে পারফরমেন্স মোটেই সন্তোষজনক নয় বীরভূম, দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ির।
কোন বয়সসীমার মানুষ এই পরিষেবা বেশি নিচ্ছেন? স্বাস্থ্যদপ্তর জানাচ্ছে, ৩৬-৫৯ বছর বয়সি মানুষ সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যইঙ্গিতে দেখাচ্ছেন। মানে মধ্যবয়সি থেকে শুরু করে বার্ধক্য ছুঁতে চলা মানুষজন। এই চিত্র গোটা রাজ্যের হলেও কলকাতায় পরিস্থিতি আলাদা। বাংলার রাজধানী শহরে দেখা যাচ্ছে টেলিমেডিসিনে দেখাচ্ছেন বেশি ১৫ থেকে ৩৫ বছরের অল্পবয়সিরা।
তিন ধরনের হাসপাতাল-স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে দেখা যাচ্ছে, আগেকার উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র তথা আজকের সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলি থেকে সবচেয়ে বেশি মানুষ অনলাইনে অসুখবিঅসুখের চিকিৎসা নিচ্ছেন। রোজ ৮৫ হাজারের বেশি টেলি কনসালটেশন হচ্ছে সুস্বাস্থ্যকেন্দ্রেই। তারপর আসছে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এবং শেষে পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। বোঝাই যাচ্ছে, শহরাঞ্চলে এই পরিষেবার জনপ্রিয়তা অনেকটাই বাড়াতে হবে।