রাহুল চক্রবর্তী, কলকাতা: লোকসভা নির্বাচন মিটতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশ্যে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, অনিয়ম তিনি সহ্য করবেন না। তালিকায় নেতা-মন্ত্রী হতে পারেন, বা পুলিস—প্রত্যেকের জন্য কঠোর অ্যাকশন নেবেন তিনি। আর বাংলার অগ্নিকন্যার জুগিয়ে দেওয়া সেই সাহসে ভর করেই আজ বাংলার জনতার ক্ষোভের আতস কাচের তলায় তৃণমূলের কাউন্সিলার থেকে এলাকার প্রভাবশালী নেতাও! এই ইস্যুতে সরাসরি অভিযোগ জমা পড়ছে ‘দিদির দরবারে’। কেউ জানাচ্ছেন জমি নিয়ে অভিযোগ। আবার কারও নালিশ এলাকার প্রভাবশালী নেতার দাদাগিরি ঘিরে।
রবিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কাছে কালীঘাট মিলন সঙ্ঘে বসেছিল ‘জনতার দরবার’। তবে এখানে আসা লোকজনের কাছে এটি ‘দিদির দরবার’ নামেই পরিচিত। লোকসভার ভোটপর্বের জন্য টানা কয়েক মাস এই ‘দরবার’ বন্ধ ছিল। ফের তা শুরু হতেই ভিড় বাড়ছে ‘ন্যায়বিচার’ প্রার্থীর। কলকাতা ছাড়াও রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষজন আসছেন। রবিবার এসেছিলেন ৫০০’রও বেশি আম জনতা। জনতার লাইন ছাপিয়ে যায় হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিট। সূত্রের খবর, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে যে সমস্ত অভিযোগ এসেছে, তার বড় অংশজুড়ে ছিল কাউন্সিলরদের নাম। যেমন, বারাকপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত একটি পুর এলাকার এক কাউন্সিলারের নামে অভিযোগ জমা পড়েছে জমি দখলের। অভিযোগকারী দাবি করেছেন, তাঁর জমির কাগজপত্র রয়েছে। অথচ রেকর্ডে কাউন্সিলারের বাবার নাম! পুরসভা ও পুলিস ওই ‘দাপুটে’ কাউন্সিলারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপই করছে না। এই অভিযোগ আসার পর পুরসভার চেয়ারম্যানকে ফোন করে দলের তরফে কড়া নির্দেশ দিয়ে বলে দেওয়া হয়েছে, সব কাগজপত্র দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে। কাউন্সিলার যদি ‘দাদাগিরি’ করেন, তাহলে পুলিস দিয়ে জমি খালি করে দেওয়া হবে। জমি সংক্রান্ত এমন বেশ কিছু অভিযোগ ‘দিদির দরবারে’ জমা পড়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে খবর। এছাড়াও কাউন্সিলরকে পাওয়া যাচ্ছে না, বারবার বলেও কাজ হচ্ছে না—এই ধরনের নালিশও জমা পড়ছে। আর রয়েছে ফুটপাত দখল, স্থানীয় নেতাদের ‘দাদাগিরি’। তাৎপর্যপূর্ণ হল, উত্তর কলকাতার এক প্রভাবশালী বিধায়কের ঘনিষ্ঠের নামেও অনৈতিক কাজকর্মে যুক্ত থাকার অভিযোগ জমা পড়েছে। সব ক’টি অভিযোগ দলীয় স্তরে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।