• হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মহিলা ভেজা মাটির গর্তে
    বর্তমান | ১৫ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মৃত মহিলাকে ঘিরে রহস্য ছিল চরমে! সেই ধোঁয়াশা স্পষ্ট হল সিসি ক্যামেরার ফুটেজে। জানা গেল মহিলার পরিচয়ও। কাশী বোস লেন সংলগ্ন বিধান সরণিতে পিচের রাস্তার তলা থেকে দেহ উদ্ধারের ঘটনায় মহিলার মৃত্যু একেবারে স্বাভাবিক। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয় ৪৫ বছরের মহিলার। রবিবার আর জি কর হাসপাতালে দেহের ময়নাতদন্তের পর প্রাথমিকভাবে পুলিসকে এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, তিনি কীভাবে গর্তের ভিতর ঢুকে গেলেন, তা নিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত রহস্য ছিলই। শেষমেশ একটি দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে ঘটনার দৃশ্য দেখতে পান তদন্তকারীরা। সেখানে দেখা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে ১১ জুলাই রাতে। আচমকাই রাস্তার উপর পাইপলাইনের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি করা মাটির উপর পড়ে যান মহিলা। বৃষ্টিতে ভেজা মাটি আলগা থাকায় দেহের ভারে গর্তের ভিতরে ঢুকে যান তিনি। যদিও এই গোটা বিষয়টি অন্যের চোখ এড়িয়ে গেল কীভাবে, তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ধোঁয়াশা এখানেই শেষ নয়,  দু’দিন ধরে সেই গর্তের ভিতর মহিলার দেহ পড়ে থাকল। তাও স্থানীয়দের নজরে এল না কেন? এ সব প্রশ্নের উত্তরও খুঁজছেন তদন্তকারীরা। 


    দেহ উদ্ধারের পরই মহিলার পরিচয় জানতে তৎপর হয় বড়তলা থানার পুলিস। তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পারে, মহিলার নাম সুপর্ণা শীল। তিনি শ্যামপুকুর থানা এলাকার কালীকৃষ্ণ দ্বিতীয় লেনের বাসিন্দা। এটি সুপর্ণার নিজের বাড়ি নয়। এখানে তাঁর কাকা থাকেন। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকে কাকার কাছেই থাকতেন সুপর্ণা। মৃতের কাকা জ্ঞানরঞ্জন শীল বলেন, মানসিক সমস্যা রয়েছে তাঁর ভাইঝির। মাঝেমধ্যেই রাস্তায় বেরিয়ে যেতেন তিনি। ১১ তারিখ ভোর চারটে নাগাদ একইভাবে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান মহিলা। পরিবারের সদস্যদের কথায়, ‘আমরা ভেবেছিলাম। আবার ফিরে আসবে। সেই কারণেই পুলিসে অভিযোগ করিনি।’ কিন্তু, ১৩ তারিখ পর্যন্ত মহিলার কোনও খোঁজ না পেলেও পুলিসকে কিছু জানানো হল না কেন? মিসিং ডায়েরিই বা কেন করলেন না জ্ঞানরঞ্জনবাবুরা, তা নিয়ে রহস্য এখনও রয়েছে। 


    শ্যামপুকুরের বাড়ি থেকে বিধান সরণির ঘটনাস্থলের দূরত্ব হেঁটে প্রায় ২০ মিনিট। লালবাজার জানিয়েছে, ১১ তারিখ সকালেও বিধান সরণির উপরে সুপর্ণাকে ঘোরাফেরা করতে দেখা গিয়েছে। এরপরেই রাতে কাশী বোস লেনের সামনে পুরসভার কাজের জন্য বসানো ব্যারিকেড টপকে ভিতরে ঢোকেন মহিলা। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকের দাবি, দেহ উদ্ধারের ২ দিন আগে মৃত্যু হয়েছে সুপর্ণার। পুলিস জানিয়েছে, ওইদিন রাতে বৃষ্টি হয়েছিল। তার জেরে খোঁড়া মাটি নরম ছিল। রাস্তার নীচের অংশে ফাঁপা হওয়ায় হৃদরোগে আক্রান্ত মহিলা সেখানে পড়ে যেতেই মাটি ধসে গিয়ে গর্তের ভিতরে ঢুকে যান। 
  • Link to this news (বর্তমান)