• সার্ভিস পিস্তল খুইয়ে লক্ষাধিক টাকা গুনাগার কনস্টেবলের
    বর্তমান | ১৫ জুলাই ২০২৪
  • শুভ্র চট্টোপাধ্যায়, কলকাতা: ডিউটি থেকে ফেরার সময় খুইয়েছিলেন সার্ভিস রিভলভার। তার জন্য এবার গুনাগার দিতে হবে এক লক্ষের বেশি টাকা! নাইন এম এম পিস্তলের মতো আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে এই ঢিলেঢালা মনোভাবের কারণে মাশুল গুনতে হবে বারুইপুর পুলিস জেলার এক কনস্টেবলকে। এই টাকা জমা পড়বে রাজ্যের সরকারি কোষাগারে। ভিভিআইপি সহ বিভিন্ন এসকর্টিংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিসকর্মীরা  ডিউটি শেষে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ফেরার সময় যাতে আরও বেশি সতর্ক থাকেন, তার জন্যই এই নজিরবিহীন পদক্ষেপ বলে সূত্রের খবর।


    রাজ্য পুলিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, বারুইপুর পুলিস জেলায় কর্মরত রাজ্য সরকারি এক আমলার দেহরক্ষী ছিলেন ওই কনস্টেবল। আগ্নেয়াস্ত্র তাঁর কাছেই সারাক্ষণ থাকত। ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি ডিউটি শেষ করে তিনি বাড়ি ফিরছিলেন। তাঁর সঙ্গে থাকা কালো একটি ব্যাগে রাখা ছিল সার্ভিস রিভলভার। দমদম জংশন থেকে তিনি লোকাল ট্রেনে ওঠেন খড়দহ নামার জন্য। বেলঘরিয়া ও দমদম স্টেশনের মাঝে চলন্ত ট্রেন থেকে রেল লাইনের উপর পড়ে যায় তাঁর ওই ব্যগটি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি খড়দহ  থানায় লিখিত  অভিযোগও করেন তিনি।


    কীভাবে এই আগ্নেয়াস্ত্র খোয়া গেল, তা নিয়ে অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করে পুলিস ডিরেক্টরেট। জানা যায়, ওই কনস্টেবল অত্যন্ত ‘ক্যাজুয়ালি’ সেটি বহন করছিলেন। তল্লাশির পরেও পিস্তলটি উদ্ধার না হওয়ায় কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়। বারাকপুর কমিশনারেট এবং বারুইপুর পুলিস জেলা—কেউই আগ্নেয়াস্ত্রের খোঁজ পায়নি। আগ্নেয়াস্ত্রটি কার বা কাদের হাতে গেল, তা নিয়ে চিন্তা বেড়েছে পুলিসের। সেটির ব্যাচ নম্বর বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে রাখা হয়েছে। 


    পিআরবি কমিটি তৈরি করে অস্ত্র হারানোর ঘটনায় অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু হয়। নতুন করে আগ্নেয়াস্ত্র কেনা সরকারি খরচেই হবে নাকি সংশ্লিষ্ট কনস্টেবলের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হবে, তা নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা চলে কমিটিতে। প্রথমে ঠিক ছিল, ওই কনস্টেবলকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে সরকার নিজের খরচেই তা কিনবে। কমিটির কর্তাদের একাংশ চাইছিলেন এ বিষয়ে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে। সেই কারণে সিদ্ধান্ত হয়, পুরো টাকাটাই ওই কনস্টেবলের কাছ থেকে আদায় করা হবে। কারণ, তাঁরই ভুলে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিসকর্তারা আর্মস সরবরাহকারী নোডাল এজেন্সির সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, নাইন এম এম পিস্তলের দাম এক লক্ষ তিন হাজার টাকা। কার্তুজ সহ দাম পড়বে এক লক্ষ চার হাজার টাকা। এই পরিমাণ টাকা কনস্টেবলের জিপিএফ থেকে কেটে সরকারি কোষাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। এরপর তাঁকে বরখাস্ত করা হবে কি না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন কর্তারা।      
  • Link to this news (বর্তমান)