• মেসির হাতে কাপ দেখতে চায় নীল-সাদার শহর
    বর্তমান | ১৫ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ভোরবেলা কোপার ফাইনাল। তার আগে মাঝরাত পর্যন্ত ইউরো। ফলে রবিবার গোটা রাত জেগেই কাটাল কলকাতার এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তের ফুটবল পাগলরা। রাতে মুরগি রান্না হল কোথাও। কেউ পাঁঠার মাংস বসালেন মাঝরাতে। আর সকালের জন্য হাঁড়ি হাঁড়ি মিষ্টি কিনে রাখা রইল উৎসব উদযাপনে। সোমবার কত লোক যে অফিস থেকে আগাম ছুটি নিয়ে নিয়েছিলেন, হাতে গুনে তা জানা সম্ভব হল না।


    রবিবার সকালেই শুরু হয়ে গিয়েছিল প্রস্তুতি। ফুটবল ওয়ার্ল্ড কাপের আগে যেভাবে ফুটবল জ্বরে থরথর কেঁপেছিল কলকাতা, সেভাবেই কাঁপতে শুরু করে দিয়েছিল রবিবার সকাল থেকে। কালীঘাটে রাস্তার এ মাথা থেকে ও মাথাজুড়ে আর্জেন্তিনার বিশাল পতাকা পতপত করে উড়ছে। সেখানে পাড়ার ছোট-বড়ো মিলিয়ে চলছে রাস্তার ফুটবল। গাঙ্গুলিবাগানের গলিতে দলের খেলোয়ারদের বিশাল কাট আউট। শ্যামবাজারে বিশাল হাঁড়িতে মাঝরাতে ফুটেছে পাঁঠার মাংস। দিস্তা দিস্তা রুমালি রুটি উড়ে গিয়েছে। দিনভর পাড়া সাজানোর জন্য ময়দান মার্কেটে ঠাসা ভিড়। দেদার বিক্রি হয়েছে আর্জেন্তিনার পতাকা। বাগুইআটিতে আকাশের দিকে তাকালেই চোখে পড়ছে নীল-সাদা পতাকা মেঘের সঙ্গে তাল মিলিয়ে হাওয়ায় দুলছে। কালো জোব্বা পরে নাচতে নাচতে মেসির বিশ্বকাপ আকাশে তুলে দেওয়ার ছবি টাঙানো বরানগরের গলিতে। টিভিতে কোপা আমেরিকার খেলা দেখানো হচ্ছে না বলে গোটা রাত চলল গালমন্দ। আর নানা ধরনের লিঙ্ক খুলে খেলা দেখার পারদর্শিতা দেখিয়ে অচিরেই পাড়ার হিরো হয়ে উঠলেন টেক স্যাভিরা। গাঙ্গুলিবাগানের উত্তম সাহা আর আর্জেন্তিনা ফ্যান ক্লাবের সদস্যরা রবিবার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে দুপুরে ভাত পর্যন্ত খাওয়ার সময় পাননি। উত্তমবাবু রবিবার বিকেলেই জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘সোমবার সকালে বাজনা বাজাতে বাজাতে মিছিল বের করব। খাওয়াদাওয়া হবে। পারলে একবার আসবেন। ভালো রসগোল্লা কিনেছি। খেয়ে যাবেন।’


    বেলঘরিয়ার সুশান্ত সাহা রবিবার ফ্ল্যাগ টাঙাতে টাঙাতে বললেন, ‘সোমবার অফিস ছুটি নিয়ে নিয়েছি। রাতে চিকেন তন্দুরি হবে। পাড়ায় কতগুলো ব্রাজিল আছে। ওঁদের পেট ভরে মাংস খাওয়াব।’ উত্তর কলকাতার ফকির চক্রবর্তী লেনে উত্তর কলকাতা দিশারী ক্লাবের এক আর্জেন্তিনার সমর্থক সৌমেন বোরা বলেন, ‘টুর্নামেন্টে আর্জেন্তিনার টিম ওয়ার্ক দারুণ। ডি’মারিয়া আর দেশের হয়ে খেলবে না। মনটা খুবই খারাপ।’ সল্টলেকের নীলাঞ্জন প্রামাণিক বলেন, ‘রবিবার গোটা দুপুর ঘুমিয়ে নিয়েছি। আমাদের ব্লকের ২৫ জন একসঙ্গে রাত জাগব। সোমবার সকাল ১০টায় ঘুমোব। অফিস ছুটি নিলাম, বুঝলেন।’


    কোপা আমেরিকা জিতে বিশ্বকাপ। ফের কোপা ফাইনাল মেসির। কলকাতার পরম আত্মীয় মেসির জন্য রাত জাগাই তো স্বাভাবিক। তবে নিশিযাপনের ক্লান্তি চেপে ধরেছে। পরপর হাই উঠছে। এবার ঘুমোতে যেতেই হল শহরকে...।
  • Link to this news (বর্তমান)