ইমামি ইস্ট বেঙ্গল এফসি-র সমর্থকরা তাই জানতেন যে, তাঁদের দলের ভারতীয় ফুটবলার নাওরাম মহেশ কিংবা নন্দকুমাররা এই ম্যাচে খেলবেন না। পক্ষান্তরে, মোহনবাগান এসজি-র সমর্থকরাও জানতেন, তাঁদের আইএসএল-এর দলে খেলা ভারতীয় ফুটবলাররা এই ডার্বিতে খেলবেন না।ফলে যে ম্যাচে কোনও দলে বিদেশি ও ভারতীয় ফুটবলাররা খেলবেন, সেই ম্যাচে দর্শক সমাগম আশাকরাটাই ভুল হয়ে যায়। প্রধানত যে সমস্ত সমর্থকরা তাঁদের প্রিয় দলের সিনিয়র ও জুনিয়র যেকোনও পর্যায়ের খেলা থাকলেও নৈহাটি বা বারাকপুরে ছুটে যান, তাঁরাই ডার্বি ম্যাচে যুবভারতী স্টেডিয়ামে উপস্থিত থেকেছেন। ডার্বি ম্যাচের আগে দু’দলই কলকাতা লিগে ২টো করে ম্যাচ খেলেছিল। ইমামি ইস্ট বেঙ্গল এফসি দুটো ম্যাচেই জিতেছিল এবং গোলের মধ্যে ছিল। কিন্তু মোহনবাগান এসজি দুটো ম্যাচেই পয়েন্ট করেছিল। ফলে, ডার্বিতে তুলনামূলকভাবে ইমামি ইস্ট বেঙ্গল এফসি-র সমর্থরা বেশি সংখ্যায় মাঠে উপস্থিত থেকেছেন। এক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার, সামনেই ডুরান্ড কাপের গ্রুপ পর্যায়ের ডার্বি নির্দিষ্ট আছে। তাছাড়া নকআউটেও ডার্বির সম্ভাবনা থাকছে। যেখানে বিদেশি ও ভারতীয় ফুটবলারদের খেলতে দেখা যাবে। এত যদি কিন্তুর মাঝে কলকাতা লিগের জৌলুসহীন ডার্বির কি গুরুত্ব থাকবে?
ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সাথে আইএফএ বিভিন্ন সময়ে এই কলকাতা লিগের সময়কাল নিয়ে আলোচনা সেরেছে। তারা আইএসএল-এর মাঝে কলকাতা লিগের ম্যাচ করানোর জন্য সময় চেয়েছে। পুরো লিগটার জন্য নাহলেও চ্যাম্পিয়ানশিপের কিছু ম্যাচে ভারতীয় ফুটবলাররা যাতে তিন প্রধানের হয়ে খেলতে পারে, তার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু আইএফ-কেও কলকাতা লিগকে আকর্ষণীয় করতে, তাঁদের লিগের নিয়মের মধ্যে কিছু পরিবর্তন আনা জরুরি হবে। চ্যাম্পিয়নশিপে যদি প্রতিদল শূণ্য পয়েন্ট নিয়ে খেলতে পারে, তা ভেবে দেখা দরকার। এবং চ্যাম্পিয়নশিপের খেলা ৬ দলের পরিবর্তে ৮ দল নিয়ে করা যেতে পারে। কলকাতা প্রিমিয়ার লিগে ২৬টা দল খেলে। এই ২৬ দলের মধ্যে তিনপ্রধান ছাড়া একাধিক বড়বাজেটের টিম থাকে। সেক্ষেত্রে ২১ পয়েন্টের খেলায় পরিস্থিতি দেখে বিপক্ষকে ওয়াকওভার দেখার প্রবণতাও থাকবেনা।
বিদেশি ফুটবলার ছাড়া অন্তত ভারতীয় নামী ফুটবলারদের নিয়ে ডার্বির ম্যাচ থাকলে মাঠে সমর্থকরা বেশি সংখ্যায় উপস্থিত থাকতে বাধ্য। কিন্তু জুলাই ও আগষ্ট মাসের, অর্থাৎ ২ মাসের টার্গেট নিয়ে কলকাতা লিগ করতে চাইলে এর বেশি উন্নতি সম্ভব নয়। কলকাতা লিগের তিন প্রধান লিগের প্রধান আকর্ষণ। এই তিনদল এখন আইএসএল-এ খেলবে। আইএসএল-এর খেলা সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হয়। তিনপ্রধানের মেইন টিম জুলাই মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে প্রিসিজন শুরু করে। আবার প্রিসিজন শেষ হতে না হতেই তাঁদের ডুরান্ড কাপে খেলতে হয়। আইএসএল ও ডুরান্ড কাপের মাঝে যে অল্পসময় থাকে, সেখানে কলকাতা লিগে অংশগ্রহণ করে আইএসএল-এ মনোনিবেশ করা খুব কঠিন। কারণ আইএসএলে-এর প্রথম ম্যাচ থেকেই কঠিন প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হতে হয়। ফলে, আইএসএল শুরু হওয়ার আগে ডুরান্ড কাপের ৭ ম্যাচের সূচির সঙ্গে কলকাতা লিগের এত টানা ম্যাচ খেলা সম্ভব নয়। তাই, কলকাতা লিগের চ্যাম্পিয়নশিপের কিছু ম্যাচ আইএসএল-এর খেলার ফাঁকে তিন প্রধানকে অংশগ্রহণ করানোর চিন্তা ভাবনা করা উচিত। এতে করে কলকাতা লিগ ব্যবস্থার পরিবর্তন আনা দরকার।