• দুর্বলতা পদ্মের সংগঠনে! বাগযুদ্ধে শমীক-বাবুল
    এই সময় | ১৫ জুলাই ২০২৪
  • এই সময়: রাজ্যের চারটি বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের বিজেপির ব্যর্থতার কারণ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে শনিবার বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য যুক্তি দিয়েছিলেন, তৃণমূলের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার মতো ভোট মেশিনারি বাংলায় গেরুয়া ব্রিগেড তৈরি করতে পারেনি।শমীকের বক্তব্য ছিল, ‘এমন নয়, হেরে গিয়েছি বলে নাচতে না জানলে উঠোন বাঁকা বলে পুরোটা সন্ত্রাসের উপরে চাপিয়ে দেবো। আমাদের ভুল-ত্রুটি-বিচ্যুতি আমরা দেখব। যে ভাবে তৃণমূল ভোটের মেশিনারি তৈরি করেছে, ভোটের সংগঠন বলতে যা বোঝায়, এখনও তা আমরা বানিয়ে উঠতে পারিনি। এই ফলাফল তারই প্রমাণ।’

    এই পরিস্থিতিতে দলে ইন্ট্রোস্পেকশনের প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন শমীক। বিজেপির রাজ্য মুখপাত্রের এই ব্যাখ্যাকে হাতিয়ার করেই গেরুয়া শিবিরকে বিঁধলেন রাজ্যের মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। এক্স হ্যান্ডেলে দীর্ঘ পোস্টে বাবুল দাবি করেছেন, বঙ্গ বিজেপির এই সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা তিনি ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের সময়েই দলের অভ্যন্তরে তুলেছিলেন। সেই সময়ে গেরুয়া শিবিরেই ছিলেন বাবুল।

    তাঁর দাবি, অমিত শাহ, জেপি নাড্ডা, কৈলাস বিজয়বর্গীয়-সহ পদ্মের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বঙ্গ বিজেপির এই সাংগঠনিক দুর্বলতাকে আড়াল করা হয়েছিল। শমীককে ট্যাগ করে বাবুল লিখেছেন, ‘২০২১ সালে অমিত শাহ, নাড্ডাজি, কৈলাসজি থেকে শুরু করে সবার সামনে বলেছিলাম যে, বেশির ভাগই (বঙ্গ নেতৃত্ব) দিল্লির বড়বাবুদের মিথ্যা বলছে। রাজ্যে বিজেপি মানুষের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করেনি, সংগঠন তো দূর অস্ত্‌। ৭০-৮০টির বেশি আসন পাবে না। মুকুলদাও তখন আমার সঙ্গে একমত হয়েছিলেন। তখন তো সত্যটা স্বীকার করেননি?’

    বঙ্গ বিজেপির অভ্যন্তরে এই সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা বারবার তোলার জন্য তাঁকে ভোটে হারানোর চেষ্টাও হয়েছিল বলে বাবুলের দাবি।

    ’২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বঙ্গে দু’শো আসন পাওয়ার স্লোগান দিয়ে বিজেপি ৭৭-তে থেমে গিয়েছিল। গত তিন বছরে সেই সংখ্যা কমে গিয়ে এখন খাতায়কলমে বিজেপি ৭১-এ নেমে গিয়েছে। লোকসভার পরে চার বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনে বাংলায় প্রত্যাশিত ফল না হওয়ার পর থেকে বঙ্গ বিজেপিতে পরাজয়ের দায় নিয়ে যখন চাপানউতোর চলছে, সেই পরিস্থিতিতে বাবুলের পোস্ট কাটা ঘায়ে নুনের ছিটে দিয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।

    যদিও বাবুল তাঁর বক্তব্যের অপব্যাখ্যা করেছেন বলে শমীকের দাবি। রবিবার তিনি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, যেখানে পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ার, দুষ্কৃতী, রাজনৈতিক কর্মী, নেতা, বিধায়ক, মন্ত্রী একযোগে আক্রমণ করছে, তাকে প্রতিহত করার মতো যে সাংগঠনিক দক্ষতা দরকার, সেটা আমাদের নেই। এটা আমরা পারছি না। অপারগ আমরা। বাবুলকে বিজেপি নিয়ে ভাবতে হবে না। বাবুল বরং ওঁর বিধানসভা কেন্দ্র বালিগঞ্জে কী ভাবে স্বচ্ছন্দে বিচরণ করবেন, তা নিয়ে ভাবুন।’

    বালিগঞ্জের উপনির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে এই বিধানসভা এলাকায় বাবুল একাধিকবার তৃণমূলের একাংশের অসন্তোষের মুখে পড়েছেন। শমীক সেই বিষয়টি সামনে এনে তাঁকে পাল্টা খোঁচা দিয়েছেন। যদিও বাবুল তাঁর পোস্টে ইঙ্গিত দিয়েছেন, বিজেপির অন্দরের সব কথা তিনি এখনও বলেননি। তাঁর কথায়, ‘এমপি পদের মোহ ছেড়ে ফেলে আসা দলের ভিতরের কথা আমার ভিতরেই রেখে দেবো, এই নীতি কঠোর ভাবে অনুসরণ করি। তাই আর কিছু বলছি না!’
  • Link to this news (এই সময়)