• ২১শে পাল্টা কর্মসূচির ডাক শুভেন্দুর, কটাক্ষে জোড়াফুল
    এই সময় | ১৫ জুলাই ২০২৪
  • মণিপুস্পক সেনগুপ্ত

    আগামী রবিবার ২১ জুলাই, ধর্মতলায় শহিদ দিবস পালন করবে তৃণমূল। সেই দিনই রাজ্যজুড়ে পাল্টা কর্মসূচির ডাক দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সদ্যসমাপ্ত লোকসভা ভোট ও চার কেন্দ্রে বিধানসভা উপনির্বাচনে বিপুল জয় তৃণমূল উদযাপন করবে ২১ জুলাইয়ের সভাতেই। আবার এই ভোটে রাজ্যের শাসক দলের বিরুদ্ধে ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে আগামী রবিবারই রাজ্যব্যাপী ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালন করবে বিজেপি।শনিবার চার বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফলাফলের প্রেক্ষিতে বঙ্গ বিজেপির একাংশ ঠারেঠোরে নিজেদের সাংগঠনিক দুর্বলতাকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। তবে সে পথে হেঁটে তৃণমূলকে রাজনৈতিক মাইলেজ দিতে চাইছেন না শুভেন্দু অধিকারী। সাম্প্রতিক ভোটে খারাপ রেজ়াল্টের পিছনে সন্ত্রাস-তত্ত্বই আরও জোরালো ভাবে প্রচার করার কৌশল নিয়েছেন তিনি।

    লোকসভা ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের প্রতিবাদে আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে রবিবার রাজভবনের বাইরে চার ঘণ্টা ধর্নায় বসে বিজেপি। সেখান থেকে শুভেন্দু বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন। যার মধ্যে সব থেকে উল্লেখযোগ্য, ‘গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ পালনের ডাক।

    শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘রায়গঞ্জে অন্তত ৫০ হাজার মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। রানাঘাটে ভোট দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে অন্তত ৭০ হাজার ভোটারকে। বাগদাতেও ১০ হাজার মানুষ তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণে ভোট দিতে পারেননি। মানিকতলার ৮টি ওয়ার্ডে ভোট লুট হয়েছে। তাই ২১ জুলাই রাজ্যের সর্বত্র বেলা ১টা থেকে গণতন্ত্র হত্যা দিবস পালন করতে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে পথে নামার আহ্বান জানাচ্ছি।’

    শুভেন্দুর এই কর্মসূচিকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ কুণাল ঘোষ বলেন, ‘চারটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনে গো-হারা হেরেছে বিজেপি। সেখান থেকে নজর ঘোরাতে এটা বিজেপির নতুন এক কৌশল। ২১ জুলাই বাংলা এবং দেশের রাজনীতির দিক নির্দেশ করে দেয় তৃণমূল। সেটাকে নকল করে ওরা প্রচারে থাকার চেষ্টা করছে।’

    ভোট-সন্ত্রাসের ইস্যুকে জিইয়ে রাখতে শুভেন্দু এদিন এলওপি (লিডার অফ দ্য অপোজ়িশন) পোর্টাল খোলার কথাও ঘোষণা করেছেন। আজ, সোমবার থেকেই এই পোর্টাল চালু হয়ে যাবে বলে তিনি জানিয়েছেন। লোকসভা এবং বিধানসভা উপনির্বাচনে যাঁরা ভোট দিতে পারেননি, তাঁরা ওই পোর্টালে গিয়ে নিজেদের নাম নথিভুক্ত করতে পারবেন।

    শুভেন্দুর কথায়, ‘যাঁরা ভোটের কালি আঙুলে লাগাতে পারেননি, বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে আমি তাঁদের বাড়িতে যাব।’ এমনকী, উপনির্বাচনে ভোট দিতে পারেননি, এমন একশো জনকে সঙ্গে নিয়ে রাজভবনে যাওয়ার ইচ্ছেও এদিন প্রকাশ করেছেন তিনি। শুভেন্দুর কথায়, ‘আমি একটা বড় লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি। নন্দীগ্রামে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি গড়েছিলাম। এবার যাঁরা ভোট দিতে পারেননি, বিরোধী দলনেতা হিসেবে তাঁদের পাশে থাকার চেষ্টা করছি। আগামী দিনে তাঁদের সবাইকে নিয়ে আমি বড়সড় আন্দোলনে নামব।’

    তবে শুভেন্দুর এই উদ্যোগ কতটা ফলপ্রসূ হবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে গেরুয়া শিবিরের একাংশের। কারণ, রাজভবনের বাইরে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে এদিন যে চার ঘণ্টার ধর্না কর্মসূচি পালিত হয়, সেখানে সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষকে দেখা যায়নি। যা নিয়ে শুভেন্দুকে তৃণমূলের কটাক্ষের মুখেও পড়তে হয়েছে।

    কুণাল বলেন, ‘ক’জন ছিলেন শুভেন্দুর ধর্না মঞ্চে? দেড়শো জন সেন্ট্রাল ফোর্স আর দেড়শো জন বিজেপি কর্মী। সুকান্ত মজুমদার, দিলীপ ঘোষরা কেউ ছিলেন না। ওঁদের নিজেদের মধ্যেই কারও উপর কারও আস্থা নেই। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সার্কাস চলছে বিজেপিতে।’
  • Link to this news (এই সময়)