একটা সময় ছিল, যখন ঘরে ঘরে দেখা যেত লুডোর বোর্ড। সময় কাটানোর জন্য বাড়ির মহিলারা, বয়স্করা বা কচিকাঁচার লাল, নীল, হলুদ, সবুজ গুটি নিয়ে ছক্কা পুটের লড়াইতে নামতেন। তবে সময় বদলেছে, মোবাইল গেমের যুগে ইনডোর গেম হিসেবে লুডোর প্রতি আকর্ষণ হরিয়েছে অনেকেরই। কেউ কেউ লুডো খেললেও, তা খেলেন স্মার্টফোনে। এই পরিস্থিতিতে হারিয়ে যাওয়া সেই লুডো খেলাকে নতুনভাবে সর্বসমক্ষে নিয়ে এল সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জের একটি ক্লাব।সুন্দরবনের হিঙ্গলগঞ্জের বাঁকড়া ফুটবল মাঠে আয়োজিত হয় ২ দিনের এক লুডো প্রতিযোগিতা। ৩২ দল নিয়ে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতায় এন্ট্রি ফি ৩০০ টাকা। প্রথম পুরস্কার ট্রফি ও জোড়া গোরু। এই উদ্যোগে খুশি এলাকার ৮ থেকে ৮০ প্রত্যেকেই।
জাহাঙ্গির ঢালি নামে প্রতিযোগিতার এক আয়োজর বলেন, 'আমরা মাঠে খেলাটার আয়োজন করেছি। গ্রামে বাংলার মানুষের মনে আবারও লুডো খেলার আনন্দ ফিরিয়ে আনার জন্য এটা চালু করা হয়েছে। সুন্দরবনে এই প্রথম এমন টুর্নামেন্ট আয়োজিত হয়েছে। ২ দিন ধরে চলবে প্রতিযোগিতা। ৩২ দলের খেলায় প্রবেশ মূল্য ৩০০ টাকা।' অপর এক উদ্যোক্তা জানান, খেলায় পুরস্কার হিসেবে গরু দেওয়া হচ্ছে। তবে এর সঙ্গে কোনওরকম রাজনৈতিক যোগ নেই। প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া এক ব্যক্তি বলেন, 'আগে এই খেলাটা বাড়িতে বাড়িতে হত। এখন এই ক্লাব খেলাটিকে বাইরে নিয়ে নিয়ে এসেছে। বয়স্কার এর ফলে ভালো করে সময় কাটাতে পারবে।'
খেলায় অংশ নেন অনেকেই। একদম লুডোর বোর্ডের পাশে বসে রীতিমতো জমিয়ে খেলায় অংশ নেন তাঁরা। ছক্কা পুটের চালের মধ্যে দিয়ে ওঠামামা করতে থাকে রঙিন গুটিগুলি। রীতিমতো জমে ওঠে খেলা। আর প্রতিযোগিতা দেখতেও বহু মানুষ ভিড় করে ফুটবল গ্রাউন্ডে। ভালো চাল পড়লে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতেও দেখা যায় তাদের। এই বছর সূচনা হলেও আগামীদিনে ফের এই প্রতিযোগিতা আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে উদ্যোক্তাদের।
উল্লেখ্য, কচিকাঁচাদের মনোসংযোগ ও বুদ্ধির বিকাশ ঘটাতে বছর কয়েক আগে জঙ্গলমহলের পুরানো খেলাগুলিকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয় একটি স্কুল। মূলত খেলার ছলে পড়িয়াদের বুদ্ধির বিকাশ ঘটাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়। সেই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়োও ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এক্ষেত্রে প্রতিদিন ক্লাসের পর পড়ুয়াদের দিয়ে হাডুডু, কিতকিত, সাত গুটি, কুমির ডাঙ্গা, লাফদড়ি, খাবো খাবো-সহ বিভিন্ন ধরনের খেলার আয়োজন করা হয় স্কুলের পক্ষ থেকে।