পাঁচ লাখ টাকার জাল নোট সমেত দুর্গাপুরে গ্রেপ্তার এক, পিছনে বাংলাদেশ যোগ?
এই সময় | ১৫ জুলাই ২০২৪
এই সময়, দুর্গাপুর: এসটিএফ ও কাঁকসা থানার যৌথ অভিযানে বাজেয়াপ্ত করা হলো পাঁচ লাখ টাকার জাল নোট। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ফিরোজ আলম শেখ নামে এক ব্যক্তিকে। তার বাড়ি মালদা জেলার কালিয়াচক থানার শাহবাজপুরের বাঁশতলা গ্রামে। বাজেয়াপ্ত হওয়া জাল নোটগুলো সবই পাঁচশো টাকার। শনিবার রাতে দুর্গাপুরের ডিভিসি মোড় লাগোয়া ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে একটি ধাবা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ফিরোজকে।রবিবার দুর্গাপুর মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে বিচারক ধৃতের ৮ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কাঁকসা থানার পুলিশের কাছ থেকে ফিরোজকে নিজেদের হেফাজতে নিচ্ছে এসটিএফ। বাজেয়াপ্ত টাকা জাল বলে মনে করা হলেও নিশ্চিত হতে কিছু নোট শালবনির টাঁকশালে পাঠাচ্ছে এসটিএফ। সেখান থেকে রিপোর্ট এলে পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন তদন্তকারী অফিসাররা।
প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গিয়েছে, ধৃত ফিরোজ আলম মূলত ক্যুরিয়ারের কাজ করত। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় জাল টাকা পৌঁছে দিত সে। অতীতে একাধিকবার এই কাজে সে যুক্ত ছিল বলে জানতে পেরেছেন এসটিএফ অফিসাররা। ঘটনার দিন রাতে ওই ধাবায় কোনও ব্যক্তির জন্য অপেক্ষা করছিল ফিরোজ। জাতীয় সড়কের পাশের ওই ধাবায় এসে ফিরোজের কাছ থেকে জাল টাকা নিয়ে যাওয়ার প্ল্যান ছিল সেই ব্যক্তির। কিন্তু সেই ব্যক্তির আসার আগেই ফিরোজকে জালে তোলে এসটিএফ।
পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন, মাঝে মধ্যে পাঁচশো টাকার জাল নোট উদ্ধার হয় ঠিকই কিন্তু, একসঙ্গে পাঁচ লাখ টাকার জাল নোট উদ্ধারের ঘটনা রাজ্যে প্রায় নজিরবিহীন ঘটনা। এদিন ওই নোট প্রসঙ্গে আদালত চত্বরে ফিরোজ জানান, কালিয়াচকের বাসিন্দা শেখ ইলিয়াস নামে এক যুবক তাকে ওই পাঁচ লাখ টাকার নোটগুলো দিয়েছিল। সেই টাকা দুর্গাপুরে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ফিরোজকে।
ইলিয়াস তাকে জানিয়েছিল, দুর্গাপুরে তার কাছ থেকে এক ব্যক্তি টাকাগুলো নিয়ে যাবে। ক্যুরিয়ারের কাজে কত টাকা পাওয়া যায়? জাল টাকা আসছে কোথা থেকে? তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, এ প্রসঙ্গে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি ফিরোজ। তবে এসটিএফ আধিকারিকরা মনে করছেন, বাংলাদেশ থেকে জাল টাকা আসতে পারে এ দেশে। এর পিছনে কোনও জঙ্গি সংগঠনের যোগ রয়েছে কিনা তা-ও খতিয়ে দেখছে এসটিএফ।
তাদের এক আধিকারিক জানান, সব কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গ্রেপ্তারির পরে হেফাজতে নিয়ে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে ফিরোজ আলমকে। সম্প্রতি কাঁকসার মিরেপাড়া থেকে জঙ্গি কার্যকলাপে জড়িত সন্দেহে মহম্মদ হাবিবুল্লা নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে এসটিএফ। বাংলাদেশের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন শাহাদতের সঙ্গে হাবিবুল্লা জড়িত ছিল বলে অভিযোগ।
তাকে জেরা করে আরও দুই যুবককে এসটিএফ গ্রেপ্তার করে। বাজেয়াপ্ত জাল টাকা বাংলাদেশের কোনও জঙ্গি সংগঠনের মাধ্যমে এই দেশে আসছে কিনা তা জানাই এখন এসটিএফ কর্তাদের মূল লক্ষ্য। পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়ার পর এদিন ফিরোজ আলমকে নিয়ে যাওয়া হয় কাঁকসা থানায়। রাজ্য পুলিশের এসটিএফের পাশাপাশি সেন্ট্রাল আইবি-ও চাইছে ফিরোজকে জেরা করতে। তাদেরও কয়েকজন গোয়েন্দা কাঁকসা থানায় এসে কথা বলেছেন ফিরোজের সঙ্গে।