• উল্টোরথে পশুপাখির হাট মহিষাদলে, পছন্দের পোষ্য কিনতে ক্রেতাদের ঢল
    এই সময় | ১৫ জুলাই ২০২৪
  • রাজ্যের যে সমস্ত জায়গায় রথযাত্রা বিশেষভাবে উল্লেখের দাবি রাখে, তার মধ্যে অন্যতম মহিষাদলের রথযাত্রা। প্রায় আড়াইশো বছর আগে ১৭৭৬ সালে মহিষাদলের রাজা আনন্দলালের স্ত্রী রানি জানকীর উৎসাহে এই রথযাত্রার সূচনা হয়। রথযাত্রাকে কেন্দ্রে করে বসে মেলা। বর্তমানে এই মেলা পূর্ব মেদিনীপুরের সব চেয়ে বড় তথা পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম বড় মেলা হিসেবে পরিচিত। প্রায় মাসখানেক ধরে চলে মেলা। আর মেলা উপলক্ষে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়। প্রায় ৭০০ থেকে ১০০০ দোকান বসে। আর এই রথ উপলক্ষে মহিষাদল রাজবাড়ির আম্রকুঞ্জে বসেছে পশুপাখির হাট। সেই হাটে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে পশুপাখি নিয়ে হাজির হয়েছেন বিক্রেতারা। তেমনই আবার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সেই সমস্ত পশু পাখি কিনতে ভিড়ও জমিয়েছে। যে সমস্ত পশুপাখি কেনাবেচার উপরে সরকারি নিষেধাজ্ঞা নেই, শুধুমাত্র সেইগুলিই এখানে বিক্রি হয়।মেচেদা-হলদিয়া রাস্তায় অবস্থিত মহিষাদল। হলদিয়া যাওয়ার নতুন বাসস্ট্যান্ড বা মেচেদা যাওয়ার পুরনো বাজার বাসস্ট্যান্ডে নেমে ১০ মিনিট হাঁটলেই রথের মাঠ। বর্তমানে স্থানীয় বিশিষ্ট নাগরিকদের নিয়ে গঠিত মেলা কমিটি, পঞ্চায়েত সমিতি ও রাজ পরিবার রথ পরিচালনা করে। কাঠের পাঁচতলা রথটি তেরো চূড়া বিশিষ্ট।

    মেলার অন্যতম আকর্ষণ নানাজাতের পাখির পসরা। তার মধ্যেও বিশেষভাবে চোখে পড়ে নানা প্রজাতির পায়রা। পাখি কেনাবেচা সংক্রান্ত নিয়মাবলী ঝুলিয়ে বিক্রি হয় রকমারি লাভ বার্ড ও বিদেশি পাখি। শুধু পাখি নয়, তার সঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির কুকুর, মাছ, খরগোশ ও গিনিপিগও বিক্রি হয়। সোজা রথের পাশাপাশি উল্টো রথেও পশুপাখির হাটে মানুষের ভীড় দেখা গেল চোখে দেখার মতো।

    অনিল বেরা নামে এক বিক্রেতা বলেন, 'সরকারি বিধিনিষেধকে মান্যতা দিয়ে আমরা পাখি বিক্রি করছি। শুধু বিক্রি নয় যত্ন নিয়ে যাতে পাখিদের দেখভাল করা হয়, সেই কথাও আমরা তুলে ধরছি ক্রেতাদের কাছে।' অন্যদিকে দীপ দাস নামে এক ক্রেতা বলেন, 'আমরা সারা বছর ধরে অপেক্ষা করে থাকি মহিষাদলের রথের জন্য। রথের মেলায় অন্যান্য দোকানের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির পশু পাখির সম্ভারও দেখা যায়। সেখান থেকে পছন্দের পশু অথবা পাখি কেনাও খুব সহজ হয়।' রুমা দাস অধিকারী নামে আরও এক ক্রেতা বলেন, 'মহিষাদলের প্রাচীন রথের মেলায় বহু মানুষ উপস্থিত হয়। তবে সোজা রথ, উলটো রথ ও পূর্নিমা রথে পশুপাখির হাট খুবই জমজমাট। যদিও যে সমস্ত পশুপাখি বিক্রি করা নিষিদ্ধ, সেগুলি এখানে কোনওভাবেই বিক্রি করা হয় না।'
  • Link to this news (এই সময়)