একটা সময় ভুগতেন অ্যাজমা বা হাঁপানির রোগে। তবে শারীরিক সেই বাধাকে কাটিয়ে উঠে এখন তিন অ্যাথলিট। ইতিমধ্যে দৌড়েছেন একাধিক ম্যারাথনে। আর এবার একেবারে বাংলা থেকে রামমন্দির, বৃন্দাবন হয়ে কাশ্মীরের উদ্দেশে দৌড় শুরু করলেন নদিয়ার শান্তিপুরের যুবক মহিতোষ ঘোষ। আর পথে করবেন বৃক্ষরোপন। এই বৃক্ষরোপনের মধ্যে দিয়েই পরিবেশকে রক্ষার বার্তা দেবেন তিনি।সকলের আশীর্বাদ ভালোবাসা ও শুভেচ্ছাকে সঙ্গে নিয়ে ২৫০০ কিলোমিটার পথ দৌড়ে পাড়ি দেওয়ার জন্য রওনা দিলেন ২৫ বছরের যুবক মহিতোষ। সঙ্গে রয়েছে গাছ লাগানোর সামাজিক বার্তা। তাঁর প্রশিক্ষক এবং মাঠের সমস্ত সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতা নিয়েই আজ রামমন্দির, বৃন্দাবন হয়ে কাশ্মীরের উদ্দেশে রওনা দিলেন তিনি। মহিতোষ জানান, খুব ছোট বয়স থেকেই হাঁপানির (অ্যাজমা) রোগে আক্রান্ত তিনি। তারপরেই মাঠে দৌড়নো অভ্যাস শুরু করেন। ধীরে ধীরে দৌড়টা অভ্যাস হয়ে ওঠে তাঁর। বিভিন্ন দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণও করতে থাকেন। বর্তমানে ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতা থেকেই তাঁর রোজগার।
সোমবার নদিয়ার ফুলিয়ায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে ফুলিয়ার নিজের বিদ্যালয় অর্থাৎ শিক্ষানিকেতনের মাঠ থেকে দৌড় শুরু করেন মহিতোষ। কালনা হয়ে বর্ধমানের উপর দিয়ে ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি হয়ে লক্ষ্য কাশ্মীর। আপাতত ৪৫ দিনে গোটা যাত্রা সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করেছেন তিনি। এই দৌড়ে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন আরও ৩ জন। তাঁরা অবশ্য সাইকেলে রয়েছেন। তাঁরা মূলত পথে মহিতোষের জিনিসপত্র বয়ে নিয়ে যাবেন। এছাড়াও কোথাও মহিতোষ চোট পেলে বা তাঁর শারীরিক পরিচর্ষার প্রয়োজন হলেও তাঁরাই সেই বিষয়গুলি দেখবেন।।
মহিতোষের মা লক্ষ্মী ঘোষ জানান, ছোটবেলায় ছেলে যখন অ্যাজমা রোগে আক্রান্ত হন, তখন তাঁরা খুবই ভেঙে পড়েছিলেন। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করিয়ে কোনও সুফল মেলেনি। এরপর মোহিতোষের বিদ্যালয়ের মাঠে যাঁরা অনুশীলন করে তাঁরাই তাঁকে মাঠমুখী করানোর পরামর্শ দেন। তারপর থেকেই দৌড় শুরু। এর ফলে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহিতোষ যেমন সুস্থ হয়ে ওঠেন, তেমনই দৌড়ের প্রতিও তাঁর আকর্ষণ বাড়ে। ধীরে ধীরে বিভিন্ন ম্যারাথনে অংশ নিতেও শুরু করেন। একের পর এক আসতে থাকে সাফল্য। এখন শুধু রাজ্য নয়, ভিন রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তেও দৌড়ে অংশ নেন মহিতোষ। ছেলের এই সাফল্যে ভিষণই গর্ব অনুভব করেন বলেও জানান লক্ষ্মী ঘোষ।