• রামপুরহাটে বিজেপির জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার দাদাগিরি, পুলিস অফিসারকে আঙুল উঁচিয়ে গালাগাল
    বর্তমান | ১৬ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, রামপুরহাট: রামপুরহাট-১ ব্লক অফিসে ডেপুটেশন দিতে এসে কার্যত দাদাগিরি করলেন বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহা। রামপুরহাট থানার এক সাব ইন্সপেক্টর উত্তমকুমার পালকে আঙুল উঁচিয়ে তৃণমূলের দালাল, চামচা বলে তীব্র ভর্ৎসনা করেন তিনি। পুলিসের সঙ্গে তীব্র বচসা চলে। যা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে উঠেছে। তৃণমূলের দাবি, সরকারি অফিসে এসে গুন্ডামি করেছেন বিজেপির সভাপতি। যদিও ধ্রুব সাহা বলেন, তৃণমূলের দালালি করলে তো এসব বলা হবেই। 


    সোমবার রামপুরহাট-১ ব্লকের নারায়ণপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খড়িডাঙা গ্রামের পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে ডেপুটেশন দিতে আসে বিজেপি। যার নেতৃত্ব দেন ধ্রুব সাহা। অভিযোগ, লোকসভা ভোটে আশানুরূপ ফলাফল না হওয়ায় ওই গ্রামের আদিবাসী ও ঘোষ সম্প্রদায়ের মানুষকে পানীয় জল থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে তৃণমূল। আন্দোলনকারী কমল হেমব্রম, হেনা মার্ডিরা বলেন, খড়িডাঙা গ্রামের ৬ নম্বর বুথে বিজেপি ১৩০ ভোটে পিছিয়ে রয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতারা বলছেন তাঁদের আরও ভালো ফল হতো। সবাই ভোট দেয়নি। তাতেই পানীয় জল সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। ফলে প্রায় এক-দেড় কিমি দূর থেকে তাঁদের পানীয় সংগ্রহ করে আনতে হচ্ছে। 


    তাঁরা বলেন, ওই গ্রামে দু’টি সাবমার্সিবল পাম্প রয়েছে। একটি ভোটের পর থেকেই খারাপ। সারানোর নামগন্ধ নেই। অন্যটি ভালো থাকলেও তা চালাতে দিচ্ছেন না তৃণমূল নেতারা। এদিন ডেপুটশন দিতে ব্লক অফিসের মূল গেটে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে বিজেপি। যদিও অফিসে বিডিও ছিলেন না। জয়েন্ট বিডিও স্মারকলিপি জমা নেবেন বলে জানান। সেই মতো বিজেপি নেতারা ঢুকতে গেলে ওই সাব ইন্সপেক্টর বলেন, দু’জনের বেশি যাবেন না। দু’মিনিট কথা বলে বেরিয়ে আসবেন। তা শুনেই রেগে যান ধ্রুব সাহা। তিনি ওই অফিসারকে জোর গলায় বলেন, তৃণমূলের দালালি করছেন। কতক্ষণ আলোচনা হবে, ক’জন প্রবেশ করবে তা বলবেন জয়েন্ট বিডিও। আপনি কে বলার? আইনশৃঙ্খলার দেখার দায়িত্ব আপনার। এখানে তৃণমূলের চামচাগিরি করছেন। তাঁকে আঙুল উঁচিয়ে চমকাতে থাকেন ধ্রুব সাহা সহ অন্যান্য নেতারা। এনিয়ে ব্যাপক হইচই শুরু হতেই জয়েন্ট বিডিও পুস্পা শর্মা বিডিওর কক্ষে এসে ডেপুটেশন নেন।


    ধ্রুব সাহা বলেন, মানুষের সমস্যা নিয়ে এসে প্রশাসনিক স্তরে যে ব্যবহার পেলাম, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যের। পুলিস দিয়ে প্রশাসনকে গার্ড রেখে সরকারি অফিস থেকে মানুষকে দূরে রাখার পরিকল্পনা করেছে তৃণমূল। জয়েন্ট বিডিও দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনদিনের মধ্যে সমাধান না হলে লাগাতার আন্দোলনে নামব। কিন্তু সরকারি কার্যালয়ে এসে পুলিসকে চমকানো, ধমকানো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তৃণমূলের দালালি করলে দালাল, চামচা তো বলবই। এরা জানে তৃণমূলকে তুষ্ট না করলে উপরি পাওনা বন্ধ হয়ে যাবে। 


    যদিও এব্যাপারে তৃণমূলের নারায়ণপুর অঞ্চল সভাপতি মিলন শেখ বলেন, ওই গ্রামে তো আমরা জিতেছি। পাশের রানিগ্রামে হেরেছি। তাহলে রানিগ্রাম জল পাচ্ছে, অথচ যেখানে জিতলাম সেখানে আমরা জল বন্ধ করে দেব? আসলে বিজেপির জেলা সভাপতি সস্তার রাজনীতি করতে সরকারি অফিসে ঢুকে গুন্ডামি করলেন। জলস্তর নেমে যাওয়ায় সাবমার্সিবল দু’টি অকেজো হয়ে পড়েছে। আমরা প্রশাসনেকে বলে দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি। যদিও এনিয়ে সংবাদ মাধ্যমে কিছু বলতে চাননি জয়েন্ট বিডিও থেকে পুলিসের ওই অফিসার। পুলিসের এক কর্তা বলেন, ওই অফিসারের রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় সেটা দেখা হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)