• শান্তিপুরের যুবক ৪৮ দিনে পার করবেন আড়াই হাজার কিমি পথ
    বর্তমান | ১৬ জুলাই ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: সম্বল বলতে মনের ইচ্ছে আর অদম্য জেদ। তাতে ভর করেই প্রায় আড়াই হাজার কিমি দৌড়ে নদীয়া থেকে ভূস্বর্গের পথে পাড়ি দিলেন মহিতোষ ঘোষ। তাঁর স্বপ্নপূরণের অপেক্ষায় প্রহর গুনছে শান্তিপুরের ফুলিয়ার বাসিন্দারা।


    স্নাতকোত্তর মহিতোষের ছোট থেকেই রয়েছে হাঁপানির সমস্যা। কিন্তু, কঠোর অনুশীলনের কাছে শেষ পর্যন্ত মাথা নত করেছে শারীরিক সমস্যা। ছোট থেকেই তাঁর স্বপ্ন পরিবেশকে বাঁচাতে হবে। সেই জন্য প্রয়োজন সবুজায়ন। সেই বার্তা দিতেই একাধিক রাজ্য ঘুরে দৌড়ে কাশ্মীরে পৌঁছতে চান মহিতোষ। স্বপ্ন পূরণের জন্য মধ্যবিত্ত চাষি পরিবারের এই যুবক প্রতিদিন নিয়ম করে স্থানীয় স্কুল মাঠে অনুশীলন চালিয়ে গিয়েছেন। সোমবার কাশ্মীরের পথে যাত্রা শুরুর আগের মুহূর্তে মহিতোষ বলেন, এমএ পাস করেছি খুবই কষ্টের মধ্যে। ছোট বয়স থেকেই হাঁপানির রোগ রয়েছে। কিন্তু, মাঠে দৌড়ানোর অভ্যাস চালিয়ে গিয়েছি। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি।  মূলত সবুজ ধ্বংসের পরিবর্তে বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে পৃথিবীকে সুস্থ রাখার বার্তা দিতেই কাশ্মীর যাত্রা করছি।


    রবিবার ফুলিয়া শিক্ষানিকেতনের মাঠ থেকে শুরু হয় বছর পঁচিশের  মহিতোষের কাশ্মীর যাত্রা। জাতীয় পতাকা বুকে ধরে দৌড় শুরু করেন পেটানো চেহারার এই যুবক। আবেগঘন সেই মুহূর্তের সাক্ষী ছিলেন  পরিবার, পরিজন, বন্ধুবান্ধবরা। প্রথমে পূর্ব বর্ধমানের কালনা, তারপর বর্ধমান শহর হয়ে  ঝাড়খণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি হয়ে লক্ষ্যের গন্তব্য কাশ্মীর। গন্তব্যে পৌঁছতে তাঁর সময় লাগবে প্রায় ৪৮ দিন। দীর্ঘ এই পথ চলায় তাঁর সঙ্গে  তিনটি সাইকেলে রয়েছেন আরও তিনজন। মহিতোষের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তাঁরাই বহন করছেন। সন্ধ্যা নামলে রাস্তার পাশে অস্থায়ী শিবির করে যাতে রাত কাটানোর ব্যবস্থা করা যায় তারও বন্দোবস্ত রয়েছে। আগামী দিনে আরও বহু দূরের রাস্তা দৌড়ে অতিক্রম করে বাংলা তথা ভারতবর্ষের মুকুটে নতুন পালক যোগ করারই এখন লক্ষ্য মহিতোষের।


    মা লক্ষ্মী ঘোষ বলেন, ছোটবেলায় মহিতোষ অ্যাজমাতে আক্রান্ত হয়। তখন ও খুবই ভেঙে পড়েছিল। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসা করিয়ে কোনও সুফল মেলেনি। বিদ্যালয়ের মাঠে যারা অনুশীলন করে তারাই মহিতোষকে মাঠমুখী হওয়ার কথা বলেছিল। তারপর থেকেই শুরু হয় নতুন করে পথ চলা। সময় যত গড়িয়েছে ক্রমশ ছেলে সুস্থতার দিকে এগিয়েছে। প্রথমে ম্যারাথন দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। সেখান থেকেই একের পর এক সাফল্য পায়। এখন শুধু রাজ্য নয়, লক্ষ্য কাশ্মীর। ওর সাফল্য কামনা করি।  নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)