• রাস্তায় হাঁটু জল, ভরতপুরে শিশুরা স্কুলে আসে বাবা-দাদার কাঁধে চেপে
    বর্তমান | ১৬ জুলাই ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কান্দি: স্কুল ঢোকার ঢালাই রাস্তা একহাঁটু জলে ডুবে রয়েছে। ফলে ছাত্রছাত্রীরা চরম সমস্যায় পড়েছে। প্রায় ১৫ দিন ধরে তাদের বাবা-দাদার কোলে কাঁধে চড়ে স্কুলে ঢুকতে হচ্ছে। স্কুলে ঢুকতে গিয়ে কেউ কেউ পা পিছলে পড়েও যাচ্ছে। ঘটনাটি ভরতপুর ১ ব্লকের পশ্চিম তালগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। প্রায় তিন বছর ধরে বর্ষার সময় এই সমস্যা চলছে বলে শিক্ষকদের দাবি।


    চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ওই স্কুলে ১১৬ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে। রয়েছেন চারজন শিক্ষক। মাসখানেক আগেও সেখানে ছাত্রছাত্রীর গড় হাজিরা ছিল ৮০ শতাংশের উপর। কিন্তু বৃষ্টি শুরু হওয়ার পরেই সেখানে হাজিরা তলানিতে এসে ঠেকেছে। অর্ধেক ছাত্রছাত্রীও এখন স্কুলে আসছে না।


    স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাজিরা সঙ্কটের মূল কারণ হল যাতায়াতের সমস্যা। স্কুলে ঢোকার জন্য প্রধান রাস্তা থেকে একটি ঢালাই রাস্তা রয়েছে। কিন্তু ঢালাই রাস্তার দু’পাশে পুকুর রয়েছে। যদিও পুকুর প্রায় ভরাট হওয়ার উপক্রম। কিন্তু পুকুরের জল উপছে রাস্তায় জমা হয়েছে। তাও প্রায় হাঁটু সমান। ফলে ছোট বাচ্চাদের পক্ষে স্কুলে আসা কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়েছে। প্রায় ১৫ দিন ধরে এই অবস্থা চলছে। তার আগেও এমন অবস্থা ছিল। মাঝে বৃষ্টি না হওয়ায় রাস্তা চলাচলের যোগ্য ছিল।  ১৫ দিন আগে ফের বৃষ্টি হলে আগের অবস্থা তৈরি হয়েছে। এমন অবস্থা ২০২২ সাল থেকে চলে আসছে বলে দাবি। তখন থেকেই সমস্যার কথা জানিয়ে শিক্ষকরা বারবার প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়ে আসছেন। কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। সম্প্রতি ফের একবার আবেদন করা হয়েছে।


    চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী আমরিন খাতুন জানায়, এখন সে বাবা অথবা দাদার কোলে, কাঁধে চেপে স্কুলে যায়। প্রায় একই বক্তব্য চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রাজিব শেখের। ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিভাবক সরফরাজ শেখ বলেন, স্কুলের ওই অবস্থার কারণে আমরা ছেলেদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছি। পড়ার আগে ছেলের প্রাণ। স্কুলে পাঠিয়ে ছেলের ক্ষতি হোক, সেটা কোনও অভিভাবকই চাইছেন না। স্কুলের প্রধান শিক্ষক কামরেজ্জামান শেখ বলেন, স্কুলে হাজিরা কমে যাওয়ার মূল সমস্যা হল রাস্তা জলে ডুবে থাকা। এরফলে অভিভাবকরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছেন না। এমনকী বাবা-দাদারা ছাত্রছাত্রীদের কোলে, কাঁধে করে স্কুলে আনছেন। তাঁরাও এভাবে আসতে গিয়ে জলে পড়ে যাচ্ছেন। ছাত্রছাত্রীদের স্কুল ইউনিফর্ম ভিজে যাচ্ছে। একেবারে যাচ্ছেতাই অবস্থা।


    স্কুলের অপর শিক্ষক মুজিবর রহমান বলেন, প্রায় তিনবছর ধরে প্রতি বর্ষাতে এমন অবস্থা চলছে। বারবার আমরা প্রশাসনকে জানিয়েছি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। এবিষয়ে ভরতপুর ১ ব্লক জয়েন্ট বিডিও সুমন সরকার বলেন, আমরা এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি। • ভোগান্তি পড়ুয়াদের। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)