পোর্টাল ফ্লপ, কলেজে ভর্তিতে স্কুলগুলিকে চাপ শিক্ষাদপ্তরের
বর্তমান | ১৬ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বারবার বার্তা দেওয়া সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে স্নাতকের বরাদ্দকৃত আসনে ভর্তির গতি বেশ শ্লথ। সোমবার পর্যন্ত ১ লক্ষ ৬৫ হাজার পড়ুয়া নিয়ম মেনে অ্যাডমিশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন। অথচ আসন বরাদ্দ করা হয়েছে ৪ লক্ষ ২২ হাজার পড়ুয়াকে। এই অবস্থায় ছাত্রছাত্রীদের অ্যাডমিশনে উৎসাহ দিতে এবং পরের দফায় আবেদন বৃদ্ধির জন্য স্কুলগুলির উপর ফের চাপ বাড়ানো হচ্ছে। স্কুলগুলি তাদের দ্বাদশ উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের যাতে ফোন করে অ্যাডমিশন নিতে এবং দ্বিতীয় দফায় (৮ আগস্ট থেকে) আবেদন করতে উৎসাহিত করে, সেই নির্দেশ বিকাশ ভবন থেকে ডিআই মারফত স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে।
এ বছর কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে যে ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে, তার প্রাথমিক একটি শর্তই হল, প্রথম দফায় আসন বরাদ্দ করা হলে অ্যাডমিশন নিতে হবে। না হলে পরবর্তী দফায় আবেদন করলেও সিট আপগ্রেডেশনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার মিলবে না। অর্থাৎ, প্রথম দফায় ভর্তি না হলে পরবর্তী ক্ষেত্রে পছন্দের আসন ফাঁকা থাকলেও তিনি অগ্রাধিকার পাবেন না। সেই ছাত্র বা ছাত্রীর নম্বর যতই উপরের দিকে থাকুক না কেন, এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন প্রথম দফায় অ্যাডমিশন নেওয়া পড়ুয়াই। নম্বর কম থাকলেও তাঁরা সেই সুযোগ পাবেন। এসব বারবার বলা সত্ত্বেও ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে অ্যাডমিশন নেওয়ার হার আশাব্যাঞ্জক নয়। স্বভাবতই শিক্ষাদপ্তরের আধিকারিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে।
পোর্টাল চালু হওয়ার পর একবার শিক্ষাদপ্তর থেকে স্কুলগুলিকে গুগল শিটের মাধ্যমে একটি তথ্যপঞ্জি তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। স্কুলগুলির দায়িত্ব ছিল দ্বাদশ উত্তীর্ণ পড়ুয়া বা তাঁদের অভিভাবককে ফোন করে কেন্দ্রীয় পোর্টালের কথা জানানো। তাঁরা সেখানে আবেদন করেছেন কি না, না করে থাকলে কোন কোর্সে তাঁরা ভর্তি হচ্ছেন, রাজ্যে থাকছেন না বাইরে যাচ্ছেন ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করা। কারও আবেদন জানাতে সমস্যা হলে স্কুলে ডেকে সেই ব্যবস্থা করে দেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল। তার এক দফা রিপোর্ট ইতিমধ্যে শিক্ষাদপ্তরের কাছে রয়েছে। তাতে সন্তুষ্ট নয় দপ্তর। বাকি থাকা স্কুলগুলি তো বটেই, যারা ইতিমধ্যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাদেরও ফের একই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে বলা হচ্ছে। বিভিন্ন জেলার ডিআই অফিস সূত্রে এমনই খবর মিলছে। বিকাশ ভবনের তথ্য বলছে, শনিবার পর্যন্ত অন্তত ১ লক্ষ ছাত্রছাত্রীকে ফোন করার তথ্য তাদের কাছে রয়েছে। শিক্ষাকর্মী বা শিক্ষাবন্ধুদের এক্ষেত্রে কাজে লাগানো হচ্ছে। এবার অ্যাডমিশন গ্রহণের জন্য বা এখনও আবেদন করা না থাকলে দ্বিতীয় দফায় আবেদন করতেও উৎসাহ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির অন্যতম শীর্ষনেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘এগুলি স্কুলের উপর বাড়তি চাপ। অনেক স্কুলই ছাত্রছাত্রী বা অভিভাবকদের ফোনে পাচ্ছে না। কেউ আবার চেষ্টা না করেই ভুয়ো রিপোর্ট দিয়ে দিচ্ছে বলে শুনছি। এতে আসল উদ্দেশ্য কতটা সাধিত হচ্ছে, সেটাই প্রশ্ন।’ শিক্ষাদপ্তরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘সবরকমভাবে চেষ্টা করা হচ্ছে। বহু স্কুল দারুণভাবে সহযোগিতা করছে। রাজ্যের শিক্ষার স্বার্থে সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে।’