শহরে ৫৮টি মোড়ে বসতে পারবেন না হকাররা, ছাড় দিতে হবে ৫০ ফুট
বর্তমান | ১৬ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: শহরের ফুটপাত জবরদখলকারীদের হাত থেকে মুক্ত করতে কড়া নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নির্দেশের কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দখলদারি রুখতে বিশেষ সুপারিশ জমা করল টাউন ভেন্ডিং কমিটি। প্রাথমিক রিপোর্ট জমা পড়েছে কলকাতা পুরসভায়। সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, সেই প্রস্তাবে চিহ্নিত করা হয়েছে কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ ৫৮টি মোড়। রাস্তার সেই মোড়ে কোনও হকারের ডালা না বসতে দেওয়ার সুপারিশ করেছে কমিটি। শুধু তাই নয়, মোড়গুলি থেকে ৫০ ফুটের মধ্যে কোনও হকার বসতে পারবেন না। মোড়গুলির চারপাশে থাকা ফুটপাতগুলি নতুনভাবে সাজানোর চিন্তাভাবনা শুরু করেছে পুরসভা ও টাউন ভেন্ডিং কমিটি।
এর আগেও শহরের গুরুত্বপূর্ণ ক্রসিংগুলোর আশপাশের ফুটপাত থেকে হকার নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নানা কারণে তা হয়ে ওঠেনি। সম্প্রতি বেহালা চৌরাস্তায় দুর্ঘটনায় এক স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুর সময়ও ওই এলাকায় হকার বসা নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল, ফুটপাত দখল করে হকার বসে রয়েছে বলেই রাস্তা দিয়ে পথচারীদের হাঁটতে হয়। এবার গুরুত্বপূর্ণ ক্রসিংগুলো নিয়ে নতুনভাবে পরিকল্পনা শুরু করেছে পুর কর্তৃপক্ষ ও টাউন ভেন্ডিং কমিটি। ইতিমধ্যে শহরের পাঁচটি এলাকা-নিউ মার্কেট, গ্র্যান্ড হোটেলের আশপাশ, গড়িয়াহাট, বেহালা ও হাতিবাগানে প্রাথমিক সমীক্ষার কাজ হয়েছে। সে রিপোর্ট মেয়রের কাছে জমাও পড়েছে। সূত্রের খবর, এই সব এলাকায় প্রায় সাড়ে সাত হাজার হকার পাওয়া গিয়েছে। ওয়ার্ড ও রাস্তার ভিত্তিতে এই হকারদের ভাগ করা হয়েছে। এর সঙ্গে কোন হকার কী সামগ্রী নিয়ে বসেন, অর্থাৎ কীসের ব্যবসা করেন, তার তালিকাও তৈরি করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে খাবার ও জামাকাপড়ের স্টলের জন্য আলাদা আলাদা পরিমাপ ধার্য করা হবে। যে স্টলগুলো পুরসভার নির্ধারিত পরিমাপের থেকে অতিরিক্ত জায়গা নিয়ে রয়েছে, সেগুলিকে নিয়ম মানতে বাধ্য করা হবে। এ প্রসঙ্গে, হকার সংগ্রাম কমিটির নেতা শক্তিমান ঘোষ বলেন, ‘প্রাথমিক সমীক্ষা হয়েছে। ৫৮টি মোড়ে হকার নিয়ন্ত্রণ করব। ৫০ ফুট ছেড়ে হকার বসার মাপকাঠি ঠিক হয়েছে, সেটা বাস্তবায়ন করব।’
ইতিমধ্যেই রাস্তায় যে হকাররা ছিলেন তাঁদের সরানো হয়েছে। নিউ মার্কেটে রাস্তার উপর যে হকাররা ছিলেন, তাঁদেরও সরানো হয়েছে। তাঁদের কোথায় পুনর্বাসন দেওয়া যায়, সেগুলোও টাউন ভেন্ডিং কমিটি ও মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি করা হাই পাওয়ার কমিটির কাছে যাবে। এদিকে অনেক হকার নন ভেন্ডিং জোনেও রয়েছেন। সেই এলাকাগুলি ভেন্ডিং জোন করা হবে নাকি সরিয়ে দেওয়া হবে, সেই বিষয়েও আলোচনা করা হবে। দ্রুত এই সংক্রান্ত বিষয়ে বৈঠক বসবে ও গৃহীত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন করা হবে। পাশাপাশি দ্বিতীয় পর্যায়ের সমীক্ষাও শুরু হবে।