অবশেষে কয়েক দশকের দাবিপূরণ পুকুর সংস্কার পোদ্দারনগর-কাটজুনগরের
বর্তমান | ১৬ জুলাই ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ৭৫ বছরের পুরনো পুকুর। কালক্রমে সেই পুকুরকে কেন্দ্র করেই যাবদপুরে গড়ে উঠেছে কাটজুনগর, পোদ্দারনগর কলোনি অঞ্চল। গত কয়েক দশক পুকুরটির কোনও সংস্কার হয়নি। পলি জমতে জমতে ঝিল গভীরতা হারায়। এলাকাবাসীর দাবি মেনে এতদিনে প্রায় চার বিঘাজুড়ে থাকা সেই পুকুরের পাঁক তোলা হয়েছে। প্রায় ৫০ টন পাঁক তোলা হয়েছে বলে খবর। তারপর পুকুরপাড় সাজানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, ৭৫ থেকে ৮০ বছর আগে উদ্বাস্তু কলোনি প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই এই পুকুর রয়েছে। জলাশয়টি কাটজুনগরে অবস্থিত হলেও পোদ্দারনগরের অধিকাংশ মানুষ তা ব্যবহার করেন। তাই সবার মতামতের ভিত্তিতে তৈরি হয়েছিল কাটজুনগর-পোদ্দারনগর পুকুর সংরক্ষণ কমিটি। বছরের পর বছর সংস্কার না হওয়ার কারণে পুকুরের পাড় ভেঙে গিয়েছিল। নোংরা-আবর্জনা পড়ত নিয়মিত। কোনও কোনও অংশে পাড় দখলও হয়েছে বলে অভিযোগ। যাদবপুর, যোধপুর পার্ক সহ সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ বিভিন্ন কারণে এই জলাশয় ব্যবহার করেন। ফি-বছর বহু প্রতিমাও বিসর্জন হয়। দিনে দিনে পাঁক জমে পুকুরের গভীরতা কমেছে। পোদ্দারনগর প্রভাতী সঙ্ঘের সাধারণ সম্পাদক সনৎ দাস বলেন, ‘সেই ছোটবেলা থেকে এখানেই প্রতিমা বিসর্জন হতে দেখছি। শেষ ক’বছরে পুকুরের গভীরতা একেবারে কমে গিয়েছে। প্রতিমা ভাসানেও সমস্যা হয়। পুকুরটি সংস্কারের দাবি অনেকদিনের। এত বছর পর দাবি পূরণ হল।’ আরেক বাসিন্দা তথা কাটজুনগর কলোনি কমিটির সম্পাদক তমালরঞ্জন সিনহা বলেন, ‘স্থানীয়দের আবেদনে সাড়া দিয়ে কাউন্সিলার পুকুরটির সংস্কার করাচ্ছেন। অবশ্যই সাধুবাদযোগ্য।’
পাঁক তোলার কাজ প্রায় শেষ। পুকুরের পাড় শালবল্লা দিয়ে বাঁধানো হয়েছে। ৯৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার মৌসুমী দাস বলেন, ‘দীর্ঘদিনের দাবি মেনে পুকুরের সংস্কার হচ্ছে। আমরা অনেক পাঁক তুলেছি। পাড় বাঁধানো হয়েছে। আশপাশ থেকে যাতে ময়লা না ফেলা হয়, তার জন্য পুকুরটি ঘিরে দেওয়া হচ্ছে। এবার জল শোধন করে তা মানুষের ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হবে। মাছ চাষেরও ব্যবস্থা হবে।’ পুরসভা সূত্রে খবর, এই কাজের জন্য প্রায় ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এবার আরও খরচ করে পুকুরপাড়ে হাঁটার জন্য রাস্তা তৈরি হবে। বসার আসন ও বাতিস্তম্ভ ইতিমধ্যেই লেগে গিয়েছে। পুরসভার পরিবেশ বিভাগের মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘শহরের পুকুর বাঁচানো ও সেগুলি সংরক্ষণ করতে আমরা বদ্ধপরিকর। তবে পুরসভার পক্ষে বছর বছর কোনও জলাশয় সংস্কার করা সম্ভব নয়। তাই স্থানীয়দেরও সচেতন থাকতে হবে। ময়লা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করা চলবে না।’